1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

২৮ অক্টোবরের দিনটি হবে খুবই সাধারণ

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৩

যেকোন আলাপ আলোচনায়, চায়ের টেবিল থেকে বন্ধুদের আড্ডায় এখন সবার মুখে মুখে এখন ২৮ অক্টোবর প্রসঙ্গটি জায়গা করে নিয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের একটি গুণ হচ্ছে তারা মোটামুটি সবাই রাজনৈতিক সচেতন। কৃষক দিনমজুর থেকে শুরু করে বড় বড় ব্যবসায়ী কিংবা সরকারি কর্মচারি সবাই দেশে রাজনীতিতে কি হচ্ছে সেই খবর রাখেন। বাংলাদেশে শুধুমাত্র খবরের যেকয়টি টিভি চ্যানেল আছে আমার মনে হয়না পৃথিবীর অন্য কোন দেশে শুধুমাত্র সংবাদ প্রচারের জন্য এত টিভি চ্যানেল রয়েছে। সে কারণে যেকোন রাজনৈতিক খবর দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে মানুষ সহজেই জানতে পারছে। এবং আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি যে আমি অনেক সৌভাগ্যবান। কারণ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আমি হয়ত আরেকটি রাজনৈতিক সার্কাস দেখার সুযোগ পাব। ২৮ তারিখ যে বিএনপি যে মহাযাত্রার ঘোষণা দিয়েছে এবং যে ধরণের বক্তব্য রাখছে তা একটি সার্কাস থেকে কোন অংশেই কম নয়। ২৮ তারিখ আসলে কিছুই হবে না। আমি বিএনপিকে বলব যে, আপনারা ২৯ তারিখ কি বিবৃতি দেবেন সেটি এখন থেকেই ভাবতে থাকুন। ২৮ তারিখ দেশের মানুষের আলাপ আলোচনা করা মত কিংবা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিবর্তন বা নতুন কোনকিছুই ঘটবে না। এমনকি বড় আকারের কোন গণ্ডগোল কিংবা তাদের যে লাশের প্রয়োজন সেটিও তাড়া পাবে না। কারণ, জনগণ এখন অত্যন্ত সচেতন। এ জন্যই বিএনপির আন্দোলনের সাথে তাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। মনে রাখতে হবে যে ২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনে জেতার পরপরই বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী বাহিনী পুরো দেশে বর্বরতা চালায় দেশের জনগণ সেটি ভুলে যায়নি। হাজার হাজার মানুষকে বরিশাল থেকে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় আশ্রয় নিতে হয়েছিল। সেই ভয়াবহ দিনগুলো মানুষ ভুলে যায়নি। কখনও ভুলবেও না। তাদের (বিএনপি) অত্যাচারে অনেকেই নিজের জীবন বাঁচাতে বিদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। হত্যা, মারামারি চাঁদাবাজি ইথাদি ছিল তাদের নিত্যদিনের বিষয়।

আমার মনে আছে ২০০১ সালে ধানমন্ডির পুরাতন ২৮ নম্বর রোডে আমার চেম্বার ছিল। সেখানে একবার স্থানীয় কতগুলো চাঁদাবাজ এসে আমাকে বলল, স্যার আপনি একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। আপনিতো কখনও আমাদের টাকা-পয়সা দেননি, আমরাও কখনো চাইনি। কিন্তু এবার স্যার আমাদের এক লাখ টাকা দিতে হবে। আমি তাদের বললাম, আচ্ছা ঠিক আছে। এই একটু চিন্তা করে দেখছি। পরে একসময় দেব। আমার মনে আছে এটি ছিল রোজার ঈদের কিছুদিন আগের ঘটনা। তখন আমি মান্নান ভূঁইয়ার সাথে যোগাযোগ করলাম। তিনি ছিলেন আমার কাছের বড় ভাইয়ের মত। তার সাথে ছাত্রজীবন থেকেই আমার ভাল সম্পর্ক। তাকে ঘটনাটি জানালে তিনি আমাকে বললেন, দেখো মোদাচ্ছের, আমরাতো মাত্র সরকারে বসেছি। এখন এসব জায়গা নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন। থানায় বলেও কোন লাভ হবে না। তুমি দেখো অন্য কোনভাবে বিষয়টা সামাল দিতে পারো কিনা। আমি এরপর ৩-৪ দিন আর চেম্বারেই গেলাম না। এর কিছুদিন পর আমার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় চাকরি হলে আমি ভারতের দিল্লিতে চলে যাই। আমাকে ওরা কিছু করতে পারেনি, কিন্তু আমার মত সৌভাগ্য বেশিরভাগেরই ছিল না।

আমি মনে করি বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে সংবিধান মেনেই হবে এবং এই নির্বাচনে জনগণ উৎফুল্লভাবে অংশগ্রহণ করবে। কারণ আমি মনে করি বিএনপি একটি বিরাট উপকার করেছে যে তারা মাঠ গরম করে দিয়েছে এবং তারা ঠিকই প্রক্সি ক্যান্ডিডেট দেবে। এটি ক্যান্ডিডেট দেয়া তারেক জিয়ার ইনকামের একটি উৎস এবং এখন ক্যান্ডিডেট দেয়ার মৌসুমও। ঠিক যেমন ব্যাবসায়িদের জন্য ঈদ একটি মৌসুম। ঠিক তেমনি এই নির্বাচনের মৌসুমে তারেক জিয়া হাত গুটিয়ে বসে থাকবে এটা কেবল বোকারাই বিশ্বাস করবে। আর দল হিসেবে বিএনপি এখন এমন একটি পরিস্থিতিতে পড়েছে যে চাইলেও তারা আর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। কারণ তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাব না বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলেছে। কিন্তু তারা ভেতরে ভেতরে ঠিকই কোথায় কে দাঁড়াবে সেই প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছে। কিন্তু এসব করে কোন লাভ হবে না। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় বিশ্বাস করে যে, একটি শক্তিশালী বিরোধী দল হোক। এবং বিশ্বনেতাদের থেকে শুরু করে দেশের সাধারণ জনগণও এটি বিশ্বাস করে যে, কেবল শেখ হাসিনার অধীনেই এ দেশে গণতান্ত্রিকভাবে সংবিধান মেনে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব। তাই ২৮ অক্টোবর আসলে দেশে কিছুই হবে না এবং বিএনপি চাইলেও কিছু করতে পারবে না। নির্বাচনকে বানচাল করার যে ষড়যন্ত্র বিএনপি করছে সেটি কখনোই সফল হবে না। ২৮ অক্টোবর দেশ স্বাভাবিকভাবেই চলবে। হয়ত রাস্তায় কিছুটা যানজট থাকবে। তাই যারা বের হবেন তারা একটু সময় নিয়ে বের হবেন। এর বাইরে বিএনপি যে পরিকল্পনা করছে সেটি কখনোই সফল হবে না। ২৮ তারিখ যারা নতুন সার্কাস দেখার আশা করছেন তারা আশাহত হবেন। ২৮ তারিখ বাংলাদেশের আন্দোলনের ইতিহাসে এমন একটি দিন হবে না যেটিকে মানুষ মনে রাখবে। এই ২৮ তারিখ পর্যন্ত যত বক্তব্য এগুলোই আমোদপ্রিয়। এগুলোই বরং মানুষ বিনোদন হিসেবে কিছুদিন মনে রাখবে।

লেখক: অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী – চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল।


সর্বশেষ - রাজনীতি