1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ভিসা নীতি ও বিএনপির দেউলিয়াপনা

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৩

আমেরিকা সামনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভিসা নীতি দিয়েছে। যারা গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোন ধরণের বাঁধা প্রদান করবে তাদের মার্কিন ভিসা প্রদান করবেনা তারা। এখন এই ভিসা নীতি’র ফলে বিএনপি ও সরকার বিরোধী দল গুলো খুবই উচ্ছ্বাসিত। তাদের দেউলিয়াত্ব এখানেই স্পষ্ট যে দেশের জনগণের উপর ভরসা না করে তাদের নির্ভর করে থাকতে হচ্ছে বিদেশী শক্তির উপর। আর সেই শক্তি যখন আমেরিকা তখন নির্ধিদ্বায় বলা যায়, নিজেদের স্বীয় স্বার্থ ছাড়া আমেরিকা এই নীতি গ্রহণ করেনি।

বিএনপি একটি তথাকথিত রাজনৈতিক দল। গণতান্ত্রিক ধারায় নির্বাচনে পরাজিত হয়েই তারা আজ ক্ষমতার বাইরে। এখন তারা জনগণকে পাশে নিয়ে কোন জনমত বা আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছেনা। এখানে সঠিক নেতৃত্বের অভাব সবচেয়ে পরিলক্ষিত। তাদের দলের প্রধান নেত্রী আজ এতিমের টাকা আত্মসাৎ-এর মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত এবং তাদের দলের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা তারেক রহমান বিভিন্ন দুর্নীতি ও অপরাধের জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত হিসাবে দেশের বাইরে লুকিয়ে আছেন। গত ১৫ বছর আগে রাজনীতি করবেনা মর্মে মুচেলিকা প্রদান করে দেশের বাইরে চলে গিয়েছিলো তিনি। এমনকি তার শয্যাশায়ী মা’কে দেখতেও একবার দেশে আসার চেষ্টা করেন নি। এমন দুজন ব্যক্তি যখন দলের নেতৃত্ব প্রদান করেন, সেই দলের কোন গ্রহনযোগ্যতা থাকেনা জনগণের কাছে।

জনগণকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন আমেরিকান এম্বাসির রাজনীতি শুরু করেছে। তাদের দলের প্রধান নেতা পরোক্ষভাবে এখন আমেরিকান রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। মিস্টার হাস-ই এখন তাদের একমাত্র ভরসার জায়গা। একটি রাজনৈতিক দল তারা যেভাবেই হোক কয়েকবার এদেশের শাসনভার পেয়েছিলো তাদের এখন একজন উপ-সচিব পর্যায়ের রাষ্ট্রদূতের দিকে চেয়ে থাকতে হয়, এটি একটি রাজনৈতিক দলের ও তাদের নেতাকর্মীদের জন্য লজ্জাজনক ও ব্যর্থতার। বিএনপি এখন চিন্তা করছে আমেরিকা তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। এটা নিজ দলের কর্মী ও ভোটারদের উপর আস্থাহীনতার প্রকাশ।

কিন্তু এই ভিসী নীতি সামনের দিনে বিএনপির উপরেই খড়গ হিসাবে নামবে সেটা এখনো বুঝে উঠতে পারছেনা বিএনপি। ভিসা নীতিতে স্পষ্ট করে বলা আছে ‘যারাই গণতান্ত্রিক নির্বাচনে বাধা প্রদান করবে তাদের-ই এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হবে’। এর ফলে বিএনপি যদি কোন কর্মসূচি দেয় যা নির্বাচনকে বাঁধা প্রদান করবে তবে তারাও এই ফাঁদে পড়তে পারে। বিএনপি এতোদিন যেটাকে তাদের পক্ষে মনে করছিলো, সামনের দিনে সেটাই তাদের উপর যে ব্যাকফায়ার করতে পারে, সেটি এখনো বিএনপি বুঝে উঠতে পারেনি। এখানেও বিএনপির দূরদর্শিতার অভাব দেখা যাচ্ছে। সেদিক দিয়ে সরকারি দল নিশ্চিন্তেই সামনের নির্বাচনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছে। যেখানে বিএনপি তাকিয়ে আছে আমেরিকান এম্বাসি ও পিটার হাসের দিকে।

আমেরিকার গণতন্ত্রের ধারা যে একটা ‘মূলাতন্ত্র’ তা একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায়। যে সকল দেশে আমেরিকা এখন পর্যন্ত গণতন্ত্র বিক্রি করতে গেছে সেই সকল দেশ এখন কেমন আছে সেটা দেখলেই বোঝা যায় আমেরিকা কি চায়! আমেরিকার কাছে ভৌগলিক কারণেই বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ। যে বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো তখন আমেরিকা শোষক পাকিস্তানি হানাদারদের পাশে ছিলো। তার মানে আমেরিকা যে শোষিত জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেনা বরং ওই সকল দেশে একটা তাবেদারী সরকার প্রতিষ্ঠা করে নিজেদের গোলাম বানিয়ে রাখতে চায় তার ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে। আমেরিকা এখন এই জগাখিচুড়ি ভিসা নীতি দিয়ে আওয়ামী লীগকে চাপে ফেলতে চায় এবং নিশ্চয়ই কোন চাহিদা পূরণ করতে চায়। তবে আমেরিকা এটা জানে শেখ হাসিনা আমেরিকাকে কোন অবৈধ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করবেনা যা অন্যান্য দল যারা জনগণের উপর আস্থাশীল নয়, তাদের দ্বারা খুব সহজেই করিয়ে নিতে পারবে। আমেরিকার এই ভিসা নীতি আগেও ছিলো। কারণ, একটি দেশ না চাইলে যে কাউকে ভিসা প্রদান নাই করতে পারে! তার মানে আমেরিকা চাইলে আগেও কাউকে ভিসা না দিয়ে পারতো। এখন তারা সেটা ঘোষণা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে। এখন এই চাপ প্রদান করার পিছনে আমেরিকার যেকোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে, তবে সেটা দেশের জন্য সম্মানজনক নয়। আর নিজ দেশের অপমানিত হওয়া নিয়ে বিএনপি খুবই উচ্ছ্বাসিত আচরণ করছে। দেশের জনগণ আমেরিকার এই ঔদ্ধত্য আচরণ ও অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোকে স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছেনা, কোনো দেশের জনগণই তা ভালো চোখে দেখেনা।

তবে বিএনপির এসব নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই, কারণ বিএনপি কখনোই জনগণের মতামতামকে তোয়াক্কা করেনি। বর্তমান সময়ে জনগণকে নিজেদের পাশে না পেয়ে বিদেশী শক্তির দিকে চেয়ে থাকাই বিএনপির একমাত্র কাজ। প্রেস রিলিজ আর সংবাদ সম্মেলন ভিত্তিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার মতো জনশক্তি তাদের পক্ষে নেই। অবশ্য এটাই প্রথম নয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শুরু করে বিএনপির রাজনীতি বিদেশী শক্তির আশীর্বাদ ছাড়া এক চুল পরিমাণও এগোয় নি। আর বিভিন্ন সময়ে বিদেশী শক্তিগুলোকে বিভিন্ন সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে এই আশীর্বাদ অর্জন করে নিয়েছিলো বিএনপি। এখনও তারা সেই পুরানো চেনা পথেই হাঁটছে। দেউলিয়াত্বের পথ, চক্রান্তের পথ, রাতের আঁধারে পেছনের দরজা দিয়ে কাপুরুষের মতো আঘাত করার পথ।

লেখক : পৃথিবী আলম রাজ – শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। 


সর্বশেষ - রাজনীতি