ইট-পাথরে শহরে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে রমনা পার্কে ছুটে আসেন নগরবাসী। পার্কের চোখ জুড়ানো সবুজ প্রাঙ্গণ মুগ্ধ করে সবাইকে। তবে এখানকার নির্মল হাওয়া প্রশান্তি দিলেও অভিযোগ রয়েছে নিরাপত্তা নিয়ে। দর্শনার্থীরা জানান, হাতিরঝিলের মতো রমনা পার্কেও ছিনতাইকারীদের উপদ্রব বেড়েছে। সুযোগ পেলেই তারা মানুষের কাছ থেকে টাকা, মোবাইলসহ অন্যান্য জিনিস ছিনিয়ে নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকার ফুসফুস খ্যাত রমনা পার্ক ঘুরে দেখা যায়, সিরামিক ইট দিয়ে পার্কের সব ওয়াকওয়ে নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে। লেক খনন করায় পানিতেও ফিরেছে স্বচ্ছতা। এছাড়া লেকের দুই পাড়ে হাঁটা জন্য কাঠের পাটাতনে তৈরি ডেক সৌন্দর্য দ্বিগুণ বাড়িয়ে তুলেছে। পার্কের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন আনসার সদস্যরা।
পার্কের ভেতরে শরীর চর্চা করছেন সাংবাদিক আজমল হক হেলাল। প্রায় তিন দশক ধরে তিনি এই পার্কে নিয়মিত আসেন। পার্কের পুরো দেয়াল ঘেঁষে তার হাঁটতে সময়ে লাগে ২০ থেকে ২২ মিনিট।
আজমল হক হেলাল বলেন, আজ প্রচণ্ড গরম পড়েছে। গরমে এখানে আসলে স্বস্তি পাওয়া যায়। রমনা পার্কের পরিবেশ আগের চেয়ে অনেক ভালো। এই পার্ক বলা হয় রাজধানীর ফুসফুস, আসলে তাই। তবে যেখানে মিষ্টি থাকে সেখানে মৌমাছি থাকে, মাছিও যায়। আর যেখানে ময়লা থাকে সেখানে মাছি যায় মৌমাছি যায় না। রমনা পার্কের অবস্থা এমন। উন্নয়ন হয়েছে এখানে মাছিও পড়েছে, মৌমাছিও আসছে। আমি এখানে ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে আসি। শুনে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার বাজেট থাকে গাছ লাগানোর জন্য, কিন্তু আমি গাছ লাগাতে দেখিনি বরং কাটতে দেখেছি।
তিনি বলেন, মানুষ রমনা পার্কে আসে, নির্মল বাতাস, সবকিছুই ঠিক আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো হকারদের উৎপাত ও ছিনতাই। পার্কে প্রায়ই ছিনতাইয়ের ঘটনা শুনি। আমি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে দাবি জানাবো তিনি যেন বিষয়গুলো দেখেন।
আজমল হকের সঙ্গে কথা শেষ হলে একটু দূরে গিয়ে দেখা যায় কয়েকজন আনসার সদস্য এক হকারকে ধরে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পরে ওই হকারকে আবার ছেড়ে দেন তারা।
বিষয়টি জানতে চাইলে ওই হকার বলেন, আমি আজকে ফুল বিক্রি করতে এসেছিলাম, তাই ধরে নিয়ে যাচ্ছিল, টাকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে।
এখানে নিয়মিত আসেন সাংবাদিক নেতা আব্দুল জলিল ভূঁইয়া। তিনি বলেন, আমার মতো বয়স্ক যারা আছেন তাদের জন্য মুক্ত বাতাস নেওয়ার জায়গা এটা। সর্বস্তরের মানুষ এখানে আসে, হাঁটে, শরীর চর্চা করে। ওই দেখেন একটি মেয়ে দৌড়াচ্ছে। এখানে ভালো একটা পরিবেশ। তবে মাঝেমধ্যে এখানে ভিক্ষুক ঢুকে যায় হকার ঢুকে যায় ও ছিনতাই হয়। এটা যদি সিকিউর করা যায় তাহলে আরও ভালো হতো।
পার্কের নিরাপত্তার বিষয়ে আনসার সদস্যে নুরুজ্জামান, মাহাতাবসহ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, কত বুধবার ছিনতাইকারী ধরতে গিয়ে একজন আনসার সদস্য আহত হয়েছেন। তারা হকার ও ছিনতাইকারী পার্কে প্রবেশ করতে দেন না। পার্কের নিরাপত্তায় ৩৫ আনসার সদস্য কাজ করছে।