ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদ মুখর হয়ে উঠেছে মঙ্গল শোভাযাত্রার শেষ মুহূর্তের সব প্রস্তুতি নিয়ে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, যতো বাধা আসবে শোভাযাত্রা ততো শক্তিশালী হবে।
এদিকে, বাংলা ১৪৩০ সনকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রয়েছে ছায়ানটও। রমনার ছায়াতলে সেই আয়োজনও শেষ হয়েছে। গোটা এলাকা জুড়ে নেয়া হচ্ছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে চলছে পুরাতনকে ভুলতে আর অন্ধকারকে সুদূরে মিলাতে রঙ-তুলির আয়োজন। নাম মঙ্গল শোভাযাত্রা। যার প্রস্তুতি প্রায় শেষ।
৩৪ বছর শেষে ৩৫ এ রাখা এই শোভাযাত্রা আয়োজনে বাধা এসেছে বারবার। আশার কথা, সেই বাধা ডিঙ্গিয়ে এই আয়োজন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে।
তাই এবারো যখন বাধা এলো, তখন শঙ্কার মুখে থাকা বন্যপ্রাণী নীলগাই, বাঘ, ময়ূরসহ টেপা পুতুল আর মা শিশুর বড় মোটিফে এবারের শোভাযাত্রায় আরো বেশি উচ্চারিত হবে অসাম্প্রদায়িকতার কথা, মৌলবাদ রুখবার কথা।
চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার আহমেদ বলেন, বহু আগে থেকেই এ ধরনের বিতর্ক চলে আসছে। নানাভাবে শিল্প সাহিত্যের চর্চাকে নস্যাৎ করার চেষ্টাও করা হয়েছে। কিন্তু তা করা সম্ভব হয়নি। এগুলো যতোই হয়, আমরা ততই অনুপ্রেরণা পাই। এবারও সেভাবেই প্রস্তুতি চলছে।
চারুকলার শিক্ষার্থীরা জানান, নীলগাইয়ের মোটিফটি এবারের নতুন সংযোজন। কেননা, এই প্রাণীটি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এই মোটিফটির মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করতে চান তারা। তেমনি, মা ও শিশুর মোটিভের মাধ্যমে পৃথিবীকে বাঁচানোর তাগাদা দিতে চান তারা।
প্রস্ততি সম্পন্ন করেছে ছায়ানটও। মুক্তিযুদ্ধ আর করোনাকালীন সময় বাদে ১৯৬৭ সাল থেকে রমনার বটমুলে নিয়মিত এই আয়োজনে এবার থাকবে মানবতা আর মূল্যবোধের জয়গান।
শুক্রবার সকাল ছয়টা ১৫ মিনিটে শুরু হওয়া দুই ঘন্টাব্যাপী এই আয়োজনে প্রায় দেড়শ’ শিল্পী গানে-পাঠে শোনাবে নতুন দিনের শপথ।
রমনা বটমূলে চলছে মঞ্চ সাজানোর কাজ। একই সঙ্গে বৈশাখের আয়োজন ঘিরে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিতে গোটা এলাকা বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা।
পহেলা বৈশাখের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সারাদেশে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারী। রমনায় বোম্ব ডিসপোচাল ইউনিটি আর ডগ স্কোয়াড নিয়ে মহড়া দিয়েছে র্যাব।
বাহিনীর প্রধান জানিয়েছেন, হেলা বৈশাখ উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধে উড়ো চিঠিটি আসলে কোনো জঙ্গি সংগঠনের হুমকি নয়। আতঙ্ক ছড়াতে তৃতীয় কোনো ব্যক্তি এটা করেছে।