1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বিএনপির ব্যর্থ অসহযোগ কর্মসূচি

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩

দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে ‘অসহযোগ’ আন্দোলনে নেমেছে। অসহযোগের ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে আদালতে হাজিরা না দেওয়া, সরকারকে সকল প্রকার ট্যাক্স, খাজনা এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধ বন্ধ করে দেওয়া। বিএনপি নেতাকর্মীরাই এই কর্মসূচিকে অবাস্তব মনে করছেন। এ নিয়ে দলের অভ্যন্তরে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে বলে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে। দলের নেতারা বলছেন, সাধারণত সরকারবিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচি যাদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হয়, অসহযোগ কর্মসূচির ক্ষেত্রে সেটি হয়নি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একক সিদ্ধান্তেই এই কর্মসূচি এসেছে। লন্ডন থেকে তিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন এবং রুহুল কবির রিজভী এটি প্রকাশ করেছেন। সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিষয়টি রীতিমতো হাসাহাসির পর্যায়ে চলে গেছে।

অসহযোগ আন্দোলনের একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে। মহাত্মা গান্ধী ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ১৯২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতব্যাপী অহিংস গণ-আইন অমান্য আন্দোলন শুরু করে। ইতিহাসে এটি অসহযোগ আন্দোলন হিসেবে সুপরিচিত। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ১৯১৯ সালে ‘রাওলাট’ আইন পাস হয়। এই আইনবলে ভারতবাসীর ওপর আরোপিত হয় দমনমূলক নানা বিধিনিষেধ। সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার লঙ্ঘিত হয়। ন্যূনতম প্রমাণ ছাড়াই সেনাবাহিনী ও পুলিশকে সাধারণ ভারতীয়দের গ্রেপ্তার ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভারতীয় জনসাধারণের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে গুরুত্ব না দিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের একতরফা ভারতীয় সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত ভারতবাসীকেই ক্ষুব্ধ করেছিল। উদার মধ্যপন্থি নেতাদের আহ্বানে ‘হোমরুল’ আন্দোলন শুরু হলেও এর কোনো প্রভাব পড়েনি ব্রিটিশ শাসকদের ওপর। রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে, মহাত্মা গান্ধী জাতীয় প্রতিবাদ হিসেবে অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের সূচনা করেন। সকল অফিস-আদালত ও কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। ভারতীয়দের সরকারি স্কুল, পুলিশ বিভাগ, সেনাবাহিনী ও সরকারি চাকরি ত্যাগে উৎসাহিত করা হতে থাকে। আইনজীবীরা আদালত বর্জন করেন। গণপরিবহন, ব্রিটিশ দ্রব্যসামগ্রী বিশেষত কাপড় বর্জন করা হয়। লাখ লাখ ভারতীয়বাসীর এই আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্ত যোগদান ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে সন্ত্রস্ত করে তোলে।

১৯২২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি চৌরিচৌরায় প্রতিবাদী জনতা ও স্থানীয় পুলিশের হিংসাত্মক সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে তিনজন আন্দোলনকারী নিহত হন। গান্ধীজি অনুভব করেন আন্দোলন বিপথে চালিত হচ্ছে। তিনি চাইতেন না আন্দোলনে জনতা ও পুলিশ মারমুখী হয়ে পরস্পরকে আক্রমণ করুক ও সাধারণ নাগরিকগণ তাতে নিহত হোক। প্রতিবাদে গান্ধীজি তিনদিন অনশন পালন করেন এবং অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। মৌলানা মোহাম্মদ আলী, মৌলানা শওকত আলী, মতিলাল নেহরু, চিত্তরঞ্জন দাসসহ অনেক নেতা গান্ধীর এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। ঐতিহাসিকদের মতে, এই আন্দোলন এতটা তীব্র হয়ে উঠেছিল যে, এটি প্রত্যাহার করে না নেওয়া হলে ১৯৪৭ সালের আগেই ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়ে যেত। ১৯৩০ সালে গান্ধীজি আবারও ভারতে অহিংস আন্দোলনের ডাক দেন। ১৯৩০ থেকে ১৯৩৪ সালের মধ্যবর্তী সময়ে পরিচালিত এই গণআন্দোলন গোটা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে। আন্দোলন সফল হয়। ভারতীয়দের দাবি মেনে নিয়ে প্রণীত হয় ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন, যাতে ভারতবাসী প্রথম গণতন্ত্রের স্বাদ পায়। প্রতিষ্ঠিত হয় স্বায়ত্তশাসন।

গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলন যেমন ভারতবর্ষের স্বাধীনতার পথ সুগম করেছিল তেমনি ১৯৭১ সালের মার্চে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে পরিচালিত অসযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। পহেলা মার্চ পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করা হলে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগের ডাক দেন। জনগণের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণে ২ মার্চ থেকে শুরু হয় এই আন্দোলন। আন্দোলনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার থেকে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা। এই সময় পূর্ব পাকিস্তানের বেসামরিক প্রশাসনের ওপর থেকে পশ্চিম পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রায় অচল হয়ে পড়ে। সেনানিবাসের বাইরে গোটা পূর্ব পাকিস্তান পরিচালিত হচ্ছিল কার্যত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে। পাকিস্তানের সংহতি রক্ষার কারণ দেখিয়ে ও চলমান অসহযোগ আন্দোলন থামাতে ২৫ মার্চ রাতে টিক্কা খান, রাও ও ফরমান আলীর নেতৃত্বে পাক বাহিনী ঢাকার নিরস্ত্র ঘুমন্ত বাঙালির ওপর নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় অসহযোগ আন্দোলন। দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান এক নিবন্ধে লিখেছিলেন, ‘এই আন্দোলনের সূচনা থেকেই পূর্ববঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের অস্তিত্ব রাজনৈতিকভাবে বিলীন হয়ে যায়। ২৬ মার্চের পর সরকার তার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালালে সেটাকে বাংলাদেশের জনগণ বিদেশীদের হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখেছিল। এই আন্দোলন সফলতা পায় এবং পলাশীর যুদ্ধের ২১৩ বছর পর বাংলাদেশ তার শাসন করার ক্ষমতা ফিরে পায়।’

স্বাধীনতার ৫২ বছর পর নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার পেক্ষাপটে দেশের একটি রাজনৈতিক দল আবারও অসহযোগের ডাক দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এটি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে ১৯২০ ও ১৯৭১ সাল এবং বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপট নিয়ে। ১৯২০ সাল ছিল ব্রিটিশদের শাসন ও শোষণের প্রেক্ষাপট। ১৯৭১ সাল ছিল পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে বাঙালির শোষণ ও বঞ্চনার প্রেক্ষাপট। দুটি প্রেক্ষাপটই ছিল পরাধীনতা থেকে মুক্তিকামী মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন। বর্তমান প্রেক্ষাপট হচ্ছে একটি রাজনৈতিক দলের চাওয়া পাওয়া। ক্ষমতা নিশ্চিত করতে না পেরে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সকল রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জন বা অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে। সাংবিধানিক অধিকারে বিএনপি-জামায়াতসহ কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে। একই অধিকারে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে আরও ২৬টি রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে সারাদেশে নির্বাচন জমে উঠেছে। কোথায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা আবার কোথাও উৎসবমুখর পরিস্থিতিতে চলছে নির্বাচনী প্রচারের কাজ। বিএনপি প্রথম বলেছে নির্বাচন প্রতিহত করা হবে। প্রতিহত করতে না পেরে এখন তারা ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন। একই সঙ্গে তারা ডাক দিয়েছেন অসহযোগ আন্দোলনের।

প্রশ্ন হচ্ছে বিএনপির ডাকে দেশের মানুষ কেন সাড়া দেবে? দেশের মানুষ কি এখনো পরাধীন? বিদেশী রাষ্ট্র কর্তৃক তারা কি এখনো শোষিত-বঞ্চিত হচ্ছেন? এর একটিও নয়। এমনকি ১৯৯০ সালের মতো দেশে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাও নেই। সমুন্নত রয়েছে রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা, সুশাসন এবং মানুষের মৌলিক অধিকার। সুশাসন এবং গতিশীল নেতৃত্বে দ্রুত দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হচ্ছে। উন্নত হয়েছে মানুষের জীবনযাত্রার মান। অবকাঠামো উন্নয়নে ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে দেশের চেহারা। মানুষ এখন উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে। এমন একটি প্রেক্ষাপটে শুধু একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষমতা নিশ্চিত করার জন্য কি কারণে দেশের মানুষ এই অসহযোগের ডাকে সাড়া দেবে? এই প্রশ্নের জবাব বিএনপি নেতাদের কাছেও নেই। বিভিন্ন ফোরামে তাদের যুক্তিগুলো কোনো ভাবেই যৌক্তিক হয়ে উঠছে না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি চমক দিতে এমন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আদালতে হাজিরা না দেওয়া, কর, বিল, খাজনা না দেওয়ার আহ্বান বাস্তবসম্মত নয়। দলের নেতাকর্মীরা যদি এই নির্দেশ মেনে আদালতে হাজির না হন, সব প্রকার ট্যাক্স ও ইউটিলিটি বিল দেওয়া বন্ধ করে দেন, তা হলে পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে। আদালতে হাজির না হলে তাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট বের হবে। ওয়ারেন্টের ফলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠাবে। ট্যাক্স বন্ধ করে দিলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। ইউটিলিটি বিল না দিলে বিদ্যুৎ, গ্যাস বা টেলিফোন লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। বিদ্যুত-গ্যাস ছাড়া বিএনপির নেতাকর্মী এবং তাদের অনুসারীরা এক দিনও কি চলতে পারবেন? বিএনপির সিনিয়র নেতা এবং সমর্থকদের মধ্যে অনেকে ব্যাংক মালিক-পরিচালকও আছেন। তাদের পক্ষে ব্যাংক এড়িয়ে চলা অসম্ভব। দলের নেতাদের অনেকেই প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ব্যাংকে লেনদেন না করে ব্যবসায়ীরা কি তাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন? এমন প্রশ্নে বিএনপির অনেক নেতা বলেন, ‘আমরা জানি না, এক্ষেত্রে তারেক রহমান কিংবা রিজভী আহমেদ কি আমাদের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন কিনা।’

বিএনপির নেতারা বিরক্তি প্রকাশ করলেও এ নিয়ে তারা কেউ অন রেকর্ড কথা বলতে চাননি। এমনকি শরিক দলের নেতারাও এমন কর্মসূচিতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। আন্দোলনে ঐক্যের স্বার্থে তারাও কোনো কথা বলতে রাজি হননি। অব রেকর্ড তাদের বক্তব্য হচ্ছে, নেতারা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। কী ভাবে বাস্তবায়ন হবে তারাই বলতে পারবেন। আমরা মনে করি এখনো অসহযোগ আন্দোলনে যাওয়ার সময় হয়নি। অন্যান্য কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন আরও এগিয়ে নিয়ে দেশের সব মানুষের কাছ থেকে সাড়া পাওয়ার মতো পরিস্থিতি হলেই কেবল এমন কর্মসূচি দেওয়া যেত। দেশে ১৯২০ কিংবা ১৯৭১ সাল দূরের কথা ১৯৯০ এবং ’৯৬ সালের মতো পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়নি। এই সময়গুলোতে আন্দোলনে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা ছিল। কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে সাধারণ মানুষ নেমে এসেছিল রাস্তায়। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও অফিস ছেড়ে রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছিলেন। নিরপেক্ষ হয়ে গিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখনো তেমন পরিস্থিতি আমরা তৈরি করতে পারিনি। আমাদের লাগাতার ভুলের জন্য খুব কাছে গিয়েও আমরা বারবার ব্যর্থ হয়েছি। এটি আরও একটি ভুল।’ নেতারা এও বলেন, ‘তারেক রহমান লন্ডনে থাকেন, দেশের বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তাকে সঠিক অবস্থা কেউ জানাচ্ছেন না। সবাই তেলবাজি করে তাকে খুশি রাখতে চাচ্ছেন। তেলবাজিতে বিভ্রান্ত হয়ে তিনি এমন কর্মসূচি দিচ্ছেন।’

বিএনপি নেতারা যথাযথই বলেছেন। সঠিক পরিস্থিতি বিবেচনা না করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে বিএনপির আন্দোলন বারবার বর্থ হচ্ছে। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রচুর জনসমর্থন আদায় করতে পারলেও শেষ মুহূর্তের ভুলে তারা আবার পিছিয়ে পড়ছেন। সাফল্যের খুব কাছে এসেও সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে ভন্ডুল হয়ে যাচ্ছে সবকিছু। ব্যাপক জনসমর্থন, বিশাল শো-ডাউনের সাফল্য ঘরে তোলার ব্যর্থতার পর তাদের বড় ভুল ছিল নির্বাচন বর্জন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর আশ্বাস সত্ত্বে¡ও তারা আলোচনায় বসতে চাননি। নির্বাচন বর্জন করে প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচন প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়ে তারা সর্বশেষ ভুল করেছেন অসহযোগ ঘোষণা করে। বাস্তব প্রেক্ষাপটে এই কর্মসূচি সফল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যথাসময়ে নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে যাবে। আগামী ৫ বছরের ম্যান্ডেট নিয়ে নতুন করে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবে।

অসহযোগ কর্মসূচি কোনোভাবেই নির্বাচন প্রতিহত করতে পারবে না। আওয়ামী লীগ ৫ বছরের জন্য সরকার গঠন করার পর সরকার পতনের আন্দোলন দূরের কথা বিএনপির পক্ষে মাঠে দাঁড়ানোর সামর্থ্যও অবশিষ্ট থাকবে না। দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে তৈরি হবে হতাশা। সঠিক রাজনীতির পথে ফিরে না এলে এক সময় ক্ষয়িষ্ণু দলটির অস্তিত্ব সংকট তৈরি হবে। স্বাধীনতার আগে মুসলিম লীগের গণবিরোধী অবস্থানের কারণে এই ভূখন্ড থেকে এক সময়ের প্রভাবশালী দলটির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। স্বাধীনতার পর বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ঘোষণা দিয়ে তরুণদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠা দল জাসদ শুধু ভুল কর্মকান্ডের কারণে বর্তমান অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। সঠিক রাজনীতি করতে পারলে এই দলটিও এক সময় ক্ষমতার দাবিদার হতে পারত। বিএনপির উচিত, মুসলিম লীগ কিংবা জাসদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সঠিক রাজনীতিতে ফিরে আসা।

লেখক : ওবায়দুল কবির – নির্বাহী সম্পাদক, জনকণ্ঠ


সর্বশেষ - রাজনীতি