1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা না আসায় হিসাব মিলছে না বিএনপির

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের দিকে তাকিয়ে নিজেদের কর্মকৌশল প্রণয়ন করে আসছিল বিএনপি। ফলে, গাজায় ইসরাইলের বর্বরোচিত গণতহ্যার পরও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখতে টু’ শব্দ পর্যন্ত করেনি তারা। বরং মার্কিনিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিল দলটি।

২০২১ সালের বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে র‌্যাবের সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ বছর স্যাংশন নিয়ে গুঞ্জন ও আলোচনা আরও বেড়ে যায়। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেয়, নির্বাচনে বাধা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ভিসানীতি আরোপ করা হবে। ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস আরও দু’ধাপ এগিয়ে গণমাধ্যমের ওপর ভিসানীতি আরোপের হুমকি দিয়ে বসেন।

অধিকন্তু শ্রম অধিকার সম্পর্কিত যুক্তরাষ্ট্রের নীতির বিষয়ে ‌শঙ্কা প্রকাশ করে সম্প্রতি ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাণিজ্য সচিবকে চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, শ্রম অধিকারবিষয়ক নতুন নীতির লক্ষ্যবস্তু হতে পারে বাংলাদেশ। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও মন্ত্রীদের পাশাপাশি পোশাকশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকেই সম্ভাব্য স্যাংশন নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।

আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সম্প্রতি বলেন, ‘সামনের দিনগুলো খুব সুখকর হবে না। আমেরিকা যেভাবে বাংলাদেশের ওপর ভিসানীতি চাপিয়ে দিচ্ছে, সামনে ইকোনমিক স্যাংশন আসতে পারে।’ বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘স্যাংশন এলে ক্রেতারা পোশাক নেবে না, এলসি খোলা যাবে না।’

অবশ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘শ্রম ইস্যুতে বাংলাদেশে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার মতো পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি।’ আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চাইলেও একতরফা কিছু করতে পারবে না।’

বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি যেহেতু আন্দোলন করে বড় ধরনের চাপে সরকারকে ফেলতে পারেনি, সেহেতু যুক্তরাষ্ট্র চাপ সৃষ্টি করলে আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি তার সঙ্গে আরও চাপ যুক্ত করবে। এ উদ্দেশেই গত বছরের ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বড় ধরনের সমাবেশের ডাক দিয়েছিল দলটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিএনপির হিসাবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের হিসাব মেলেনি। নানা গুঞ্জন ও বিএনপির প্রত্যাশা থাকলেও গত বছর (২০২২ সালে) যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর স্যাংশন দেয়নি।

এবারও বিএনপির ধারণা ছিল, ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দ্বিতীয়বারের মতো নিষেধাজ্ঞা বা স্যাংশন আসবে। আর এদিন ঢাকাসহ সারাদেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করার পাশাপাশি সরকারের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টির সুযোগ পাবে তারা।

কিন্তু, মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের সর্বজনীন ঘোষণার ৭৫ বর্ষপূর্তি সামনে রেখে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় (ডিপার্টমেন্ট অব দ্য ট্রেজারি) এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) সম্মিলিতভাবে যে ১৩টি দেশের ৩৭ জন ব্যক্তির ওপরে স্যাংশন ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের নাম নেই। নতুন মার্কিন স্যাংশন ও ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা দেশগুলো হল— চীন, রাশিয়া, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, আফগানিস্তান, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, কঙ্গো, হাইতি, লাইবেরিয়া, দক্ষিণ সুদান ও সুদান, সিরিয়া, উগান্ডা ও জিম্বাবুয়ে।

নতুন করে ঘোষিত আমেরিকার এই স্যাংশন ও ভিসা নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশের নাম না থাকায় ক্ষমতাসীন দলে স্বস্তি ফিরলেও হতাশ বিএনপি। যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন ও ভিসা নিষেধাজ্ঞোকে হাতিয়ার বানিয়ে রাজনীতির মাঠ গরম করার যে স্বপ্ন তারা দেখেছিল, তা ভেঙে গেছে। ভোট বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া বিএনপির আশা ছিল, বিশ্ব মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে স্যাংশন দিয়ে সরকারকে অর্থনৈতিকভাবে চাপে ফেলে ক্ষমতার পালাবদল ঘটিয়ে ফেলবে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু সে আশা পূরণ না হওয়ায় যারপরনাই হতাশ দলটির নেতা-কর্মী, সমর্থকরা।

হতাশার প্রভাব দেখা গেছে রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানবন্ধন কর্মসূচিতে। কয়েক হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে মানববন্ধন করলেও, সেটা বড় কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে। মানবন্ধনে স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য এবং একজন ভাইস চেয়ারম্যান ছাড়া দলের আর কোনো শীর্ষ নেতাকে দেখা যায়নি। উপস্থিত কর্মী-সমর্থকের সংখ্যাও বিএনপির সক্ষমতার পরিচয় বহন করতে পারেনি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আমরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করছি। আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চলছে তাদের হিসাব মতো। ভূ-রাজনীতির হিসাব-নিকাশ তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে বিএনপির কর্মসূচির কোনো সম্পর্ক নেই।’

‘বিএনপি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলন করছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে কথা বলছে। তাদের চাওয়া এবং বিএনপির চাওয়া এক। এ কারণে মনে হতে পারে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বিএনপি তার নিজের শক্তির ওপর নির্ভরশীল। আর জনগণই বিএনপির মূল শক্তি’— বলেন ড. মঈন খান।


সর্বশেষ - রাজনীতি