১০ ডিসেম্বরকে নিয়ে একটা রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও এক ধরনের উদ্বেগ উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।উত্তেজনা পরিস্থিতিটা তৈরি করেছে বিএনপির কিছু অর্বাচীন নেতারা।তারা বিভিন্ন সমাবেশে ঘোষণা দিয়েছে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশে যোগ দিবেন খালেদা জিয়া,সেদিন তারেক রহমান বীরের বেশে দেশে ফিরবেন এবং তারপর থেকে দেশ চলবে খালেদা জিয়ার কথায়।
এসব বালখিল্য কথা তাদের কিছু সমর্থকেরাও বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল।স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়া একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদান্যতায় বাসায় আছে তার কোনো মতে সমাবেশে আসার সুযোগ নেই।আর তারেক রহমান যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত আসামী সে দেশে ফিরলে নিশ্চিত স্থান হবে কারাগারে।বিএনপি নেতাদের এই আস্ফালন দিবাস্বপ্ন ছাড়া কিছুই নয়।
বিএনপি গত ১২ অক্টোবর থেকে সারা দেশে সমাবেশ করে আসছে।যার প্রতিটি সমাবেশই সেখানকার ঐতিহাসিক মাঠে হয়েছে।কিন্তু ঢাকার সবচেয়ে ঐতিহাসিক মাঠ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ,সেখানে অনুমতি দেয়া সত্ত্বেও বিএনপি সমাবেশ করবে না বলে গো ধরেছে।
এক্ষেত্রে অনেক গুলো কারণের মধ্যে অন্যতম হলো জামায়াতে ইসলামীর অনীহা।কারণ এই মাসের ১৬ তারিখই তো তাদের প্রভু পাকিস্তানিরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আত্মসমর্পণ করেছিল।বিএনপির সমাবেশে অধিকাংশ লোকই জামায়াতের থাকে,তাই তাদের আপত্তি থাকলে বিএনপির কিছু করার সুযোগ থাকে না।
বিএনপি পল্টনে সমাবেশ করার আরেকটি কারণ হলো সরকারকে বিপদে ফেলতে তাদের অফিসের সামনে অবস্থান নিয়ে হেফাজতের মতো ঢাকাকে অবরোধ করার পরিকল্পনা।ইতিমধ্যে সে আলামত লক্ষ্য করা গেছে।পুলিশি তল্লাশিকে পার্টি অফিসে বোম,ককটেল পাওয়া গেছে।
বিএনপির দাবি আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে।এজন্য তারা যেকোনো মূল্যে সরকারকে উৎখাতের ঘোষণাও দিয়েছে। সাংবিধানিক ভাবে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোন সুযোগ নেই। কিন্তু বিএনপির আন্দোলনের কথা শুনে জনগনের মধ্যে এক ধরনের ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। তাদের আন্দোলনের ইতিহাস তো ভয়াবহ।বিএনপির আন্দোলন মানেই তো জ্বালাও পোড়াও হত্যা খুনের রাজনীতি।
রাজনৈতিক ফায়দা তো তুলতেই পারেনি,বরং দলগত ভাবে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।পরবর্তীতে দেখা গেছে শুধুমাত্র দলীয় নেতাকর্মীরাই নয়,দেশি-বিদেশি মিডিয়া এবং সাধারণ জনগনও বলেছে বিএনপির নির্বাচন না করাটা তাদের মারাত্মক ভুল হয়েছে।সে নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করতে না পারলেও একটি কার্যকর বিরোধী দলের ভুমিকা পালন করতে পারতো।তাহলে তাদের আজ এমন দেউলিয়াত্বের পথে যেতে হতো না।
বিএনপি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে তার রূপরেখা একযুগেও জাতির সামনে তুলে ধরতে পারেনি।বরং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পূর্বে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফর্মুলা দিয়ে জাতির কাছে হাস্যকর পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন খালেদা জিয়া।তারপর থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করলেও কখনো রূপরেখা দিতে সমর্থ হয় নি।নির্বাচন সামনে আসলেই বিএনপি ষড়যন্ত্র শুরু করে এটা তাদের পুরানো অভ্যাস।
লেখক: তাপস হালদার – সাবেক ছাত্রনেতা ও সদস্য,সম্প্রীতি বাংলাদেশ।