1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের নতুন মেরুকরণ এবং ষড়যন্ত্রের স্বরূপ

সুলতান মির্জা : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১

বাংলায় একটি প্রবাদ আছে- ‘চালুনি বলে ছুঁচ, তোর পিছে কেন ছ্যাঁদা’। নিজের শতেক ফুটো থাকতেও সুঁইয়ের সমালোচনায় মুখর ছাঁকনি। বিশ্ব মোড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হয়েছে সেই দশা। যে দেশটি মোড়লগিরি প্রদর্শন করতে গিয়ে বিশ্বের সব ইস্যুতে নাক গলায়, মানবাধিকারের ধুয়া তুলে অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করে, অন্যের ওপর অযাচিত যুদ্ধ চাপিয়ে হত্যা করে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ; দেশটিতেই যেখানে প্রায় প্রতিদিনই সহিংসতার শিকার হচ্ছে বহু মানুষ- সেই দেশটির কাছ থেকে আর যা-ই হোক মানববাধিকারের সবক নেয়া যায় না।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক ডিজি এবং বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ রয়েছেন। তার ওপরেও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞার আওতায়ও পড়েছেন তিনি।

এ ছাড়া র‌্যাবের বর্তমান ডিজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত এডিজি খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক এডিজি তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক এডিজি মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক এডিজি মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য বিভিন্ন দেশের ১৫ ব্যক্তি এবং ১০ প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও চীন, মিয়ানমার ও উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। চীনের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে, জিনজিয়াংয়ে উইঘুরসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের কারণে।

বিশ্বের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা আর মানবাধিকার নিয়ে চিন্তায় মার্কিনিদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে, এমনটি ভাবতে পারেন অনেকে। তবে প্রশ্ন ওঠতে পারে, অন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয় নিয়ে মার্কিনিদের এত মাথাব্যথা কেন? তাদের নিজ দেশে মানবাধিকারের পরিস্থিতি কী?

এফবিআই বলছে, শুধু ২০২০-এ যুক্তরাষ্ট্রে খুন হয়েছে ২১ হাজার ৫০০। ২০১৯-এর তুলনায় যা প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। প্রতিবেদন অনুসারে, শুধু খুন নয়; যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র বিক্রির পরিমাণও আগের চেয়ে বেড়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে খুনের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছে এফবিআই। ৭৭ শতাংশ মানুষ খুন হয়েছে বন্দুকের গুলিতে। ২০১৯-এ যা ৭৪ শতাংশ ছিল। সহিংসতার পরিমাণ ২০১৯-এর চেয়ে ৫.৬ শতাংশ বেড়েছে।

নির্বাচনের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন- অস্ত্র বিক্রি নিয়ে তার প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নেবে। যদিও ক্ষমতায় আসার পরে এখনও সে বিষয়ে বাইডেন প্রশাসন তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এছাড়াও ‘রেইপ অ্যান্ড সেক্সুয়াল অ্যাসাল্ট: এ রিনিউড কল টু অ্যাকশন’ শীর্ষক হোয়াইট হাউজের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এক জরিপ বলছে- যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় প্রতি ৫ জন নারীর ১ জনই জীবনে কোনো না কোনো সময় ধর্ষণের শিকার হয়। মোট সংখ্যার দিক থেকে এটি প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ। ভুক্তভোগী নারীদের প্রায় অর্ধেকই ১৮ বছর বয়সের আগে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়।

শুধু নিজ দেশে নয়, মানবাধিকারের নামে অন্য দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অযাচিত হস্তক্ষেপে প্রাণ যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষের। শুধু ২০ বছরে আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ২২ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা এয়ারওয়ার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের লড়াইয়ে ৪৮ হাজার ৩০৮ জন প্রাণ হারিয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত ২২ হাজার ৬৭৯ বেসামরিক নাগরিক।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন আজ সিলেটে একটি সভায় বলেছেন, বিশ্বে সভ্য দেশ হিসেবে দাবিদার যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। আর তাদের অর্ধেক জনসংখ্যার দেশ হিসেবে বাংলাদেশে অর্ধেক ঘটনা ঘটতে পারত কিন্তু দেশে সুশাসন থাকায় সারা বছরে হাতেগোনা কয়েকটি ঘটনা ঘটছে।

মার্কিনিদের মানবাধিকারের সংজ্ঞা হয়ত ভিন্ন। তাই তারা নিজ দেশ ও অন্য দেশের ভেতরে ঢুকে চালানো হত্যাকাণ্ড আর যুদ্ধাপরাধগুলোকে চোখে দেখতে পায় না। এসব হত্যাকাণ্ডের পোশাকি নাম দিয়েছে তারা- সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ!

এই সেই যুক্তরাষ্ট্র, যারা শুধু কিউবায় বঙ্গবন্ধু সরকারের পাটজাত পণ্য রপ্তানির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে পিএল-৪৮০ প্যাক্টের দোহাই দিয়ে বাংলাদেশে খাদ্য সহায়তার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে যায়। যুদ্ধপরবর্তী ধ্বংসস্তুপে থাকা বাংলাদেশ দুর্ভিক্ষে অনেক বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয় সেসময়। কমিউনিজমের অনুসারী কিউবা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু। আর শত্রু দেশের সঙ্গে কেউ বাণিজ্য করলে তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়া যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকারের(!) পর্যায়ে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্থানের পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পারমাণবিক শক্তিচালিত মার্কিন রণতরী পাঠিয়েছিল।

শুধু তা-ই নয়, দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে পরম মমতায় আশ্রয় দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। একটি দেশে ক্যু ঘটিয়ে সে দেশের রাষ্ট্রপতিকে সপরিবারে হত্যা করার মত জঘন্য কর্মকাণ্ডে জড়িত এবং আত্মস্বীকৃত খুনির আশ্রয়দাতা দেশের কর্তাব্যক্তিদের মুখে গণতন্ত্র, মানবাধিকারের বুলিকে বড় অশ্লীল শোনায়।

বছরখানেক আগে বিশ্বখ্যাত নিরাপত্তা বিষয়ক থিঙ্কট্যাংক আইএইচএস জেনস গ্লোবাল টেরোরিজম অ্যান্ড ইনসার্জেন্সি অ্যাটাক ইনডেক্স কর্তৃক বিশ্বের সবচেয়ে সহিংস ও সক্রিয় সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর প্রথম তিনটির একটি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গ সংগঠন ছাত্র শিবির। তালেবানের পরই রয়েছে ছাত্র শিবিরের নাম। প্রথমটি থাইল্যান্ডের বারিসান রেভুলুসি ন্যাশনাল। সেই তালিকায় আল-কায়েদাসহ আরও কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন রয়েছে।

তবে মজার ব্যাপার হলো, শিবিরের পদধারী নেতারা প্রায়ই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে যান। নিয়মিত তাদের আসা-যাওয়া চলে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং যুক্তরাজ্যসহ মানবাধিকারের বৈশ্বিক প্রতিনিধি দেশগুলোতে। কিন্তু বাংলাদেশের সরকারি বাহিনী ও তাদের কর্মকর্তারা হন নিষিদ্ধ! এই নিষিদ্ধের ঘোষণায় বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধী দল ও সংগঠনগুলোতে চলছে রীতিমত ঈদ উৎসব! তারা আজ উল্লসিত, নিজের নাক কাটলেও দুঃখ নেই; পরের যাত্রাভঙ্গ তো করা গেছে।

কানাডার আদালত কর্তৃক দুবার ভিন্ন ভিন্ন রায়ের পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে সাব্যস্ত করা হলেও, নিয়মিত বিএনপি নেতাদেরকে সেখানে সভা-সমাবেশ করতে দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি তো মাসখানেক আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরে রীতিমত সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালায় সেখানে। যদিও মানবাধিকারের ধ্বজাধারীদের টুঁ শব্দটিও শোনা যায়নি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে ভূ-রাজনৈতিক মেরুকরণের একটি ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছেন। চীন অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী এবং বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রসহ সব দেশকে ডিঙিয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে। যা যুদ্ধপ্রিয় যুক্তরাষ্ট্র ভালো চোখে দেখছে না মোটেই। অন্যদিকে মার্কিন বাজারে গার্মেন্টস পণ্যের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের রয়েছে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। চীনের বিপুল বিনিয়োগ বাংলাদেশে। অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ মেগা প্রকল্পগুলোর অংশীদার চীন। যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ চীনবিরোধী অংশ সহজভাবে নিচ্ছে না।

এদিকে এশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে চীনের আধিপত্য ক্রমে বাড়ছে। সেই আধিপত্যকে খর্ব করতে যুক্তরাষ্ট্র ভারতসহ চারটি দেশ নিয়ে কোয়াড গঠন করেছে। সেই জোটে তারা চায় বাংলাদেশ যোগ দিক। আবার দক্ষিণ এশিয়ার শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন অব্যাহত রাখার স্বার্থে বাইরের শক্তির এমন সামরিক জোটের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে পাশে পেতে চায় চীন। এসব নিয়ে চলছে রাজনৈতিক মেরুকরণ।

বাংলাদেশকে ঘিরে তাই জমে ওঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের নানামুখী চাপ। যার অংশ হিসেবে গ্রাউন্ড তৈরিতে আঙ্কেল স্যামের সেই পুরনো নাটকের দৃশ্যায়ন দেখা যাচ্ছে। বর্তমান বাংলাদেশ সরকারকে নতজানু করা যাচ্ছে না। বিশ্বব্যাংকের মত সংস্থাগুলোকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা, ঋণের ফাঁদে ফেলতে না পারা, ইচ্ছেমত মাথার ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে কার্যোদ্ধার করতে না পারা, বহুজাতিক কোম্পানির নামে বাংলাদেশের খনিজ সম্পদে হাত দিতে না পারা ও বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে দূতাবাসের পক্ষ থেকে নাক গলানোতে বাধা- এমন বহুবিধ উদ্দেশ্য সাধন ব্যাহত হচ্ছে মোড়লদের।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কূটনৈতিক দক্ষতা, কৌশল ও দৃঢ়তায় বাংলাদেশবিরোধী শক্তিগুলো বার বার পরাভূত হচ্ছে। ফলে দিন দিন বেড়েই চলেছে তাদের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত। ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’- বাংলাদেশ এমন নীতিতে চলতে চাইলেও বাধা পাচ্ছে পদে পদে।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র ফ্রন্ট- এনইডি (ন্যাশনাল এনডৌমেন্ট ফর ডেমোক্র্যাসি); যারা বিভিন্ন দেশের সরকার উৎখাতের গ্রাউন্ড তৈরিতে সক্রিয়। বিশ্বের প্রগতিশীল ও উদীয়মান অর্থনীতির বিভিন্ন দেশকে ধ্বংস করতে এবং সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সেই ষাটের দশক থেকে। দেশগুলো যেন মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে না পারে, সেজন্য এনইডি নেপথ্যে সরকারবিরোধী বিভিন্ন প্রতিপক্ষ তৈরিতে অর্থায়নসহ নানা সাহায্য দেয়।

এনইডি-র হয়ে কাজ করে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যম ও সংবাদপত্র। যেখানে সরকারবিরোধী অপপ্রচার, গুজব, প্রপাগাণ্ডা চালিয়ে যাওয়া হয় অবিরত। জনমতকে ভিন্নপথে পরিচালিত করে উসকে দেয়া হয়। যেন একটি ক্যু ঘটালে জনগণ সেটি সহজেই মেনে নিতে পারে- এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এনইডি-র অর্থায়নে চলছে দেশের বেশ কিছু পত্রিকা। সঙ্গে আছে বিদেশে পলাতক দেশবিরোধী চক্রের মালিকানার কয়েকটি পোর্টাল। সংবাদ প্রকাশের নামে পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের রক্তস্নাত মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি, প্রধানমন্ত্রী, সরকার ও সেনাবাহিনীকে নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে চক্রটি।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষায় কোনো দেশের কোনো গোষ্ঠীকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেলে কোনো দেশের সরকারকে কৌশলে সরানোর পটভূমি তৈরি করে এনইডি। এজন্য তারা ওসব দেশের স্থানীয় বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে নেগোশিয়েট করে বিভিন্ন ইস্যুতে জনগণ ক্ষেপিয়ে তোলে। পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ওই দেশ ও সরকার সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করে চাপ সৃষ্টি করে।

বিভিন্ন সময় নিকারাগুয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, কোরিয়া, ইরান, ইউক্রেন, চিলিসহ অন্তত এক ডজন দেশের সরকার হঠানোর জন্য সেসব দেশে উগ্রবাদীদের দিয়ে সহিংসতা ছড়াতে মোটা অর্থ বিনিয়োগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে ৭৫-এর পট পরিবর্তনের বেনিফিসিয়ারি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

এগুলো কিন্তু নিছক তত্ত্ব নয়, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও গবেষক জেফরি টি রিচেলসনের লেখা বই থেকে পাওয়া যায় তথ্য-উপাত্ত। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি আর্কাইভের সাবেক সিনিয়র ফেলো রিচেলসন দীর্ঘদিন কাজ করেছেন ন্যাশনাল সিকিউরিটি এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে। অনেক বছরের গবেষণালব্ধ তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে রচনা করেছেন গ্রন্থ। তার দুটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ- দ্য ইউএস ইনটেলিজেন্স কমিউনিটি এবং দ্য উইজার্ড অব ল্যাংলি: ইনসাইড দ্য সিআইএ-স ডিরেক্টরেট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।

৫৯২ পৃষ্ঠার ‘দ্য ইউএস ইনটেলিজেন্স কমিউনিটি’ গ্রন্থের ১৬ অধ্যায়ের নাম ‘কাভার্ট অ্যাকশন’। এখানে মার্কিন গোয়েন্দাদের এসব কার্যক্রম সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন রিচেলসন। সেখানেই এনইডিসহ এমন কয়েকটি মার্কিন আন্ডারকাভার সংস্থা বিষয়ে লিখেছেন তিনি।

বাংলাদেশের কোনো কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হয়েছেন- এমন বিষয় হালকাভাবে নেয়ার কিছু নেই। মানবাধিকার লঙ্ঘনের নামে এই অ্যামবার্গো আরোপ মূলত পানিতে ভেসে থাকা আইসবার্গের চূড়ামাত্র। যা চোখে দেখা যাচ্ছে না, তা হলো পানির নিচে থাকা এর বিশালাকৃতির অবয়ব। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ৭১-এ যেমন ছিল, ৭৫-এ যে ভূমিকায় দেখা গেছে তাদের; বর্তমান সময়েও তাদের সেই অবস্থান দেখা যাচ্ছে। তাই সতর্কতা অত্যন্ত জরুরি।

লেখক: সুলতান মির্জা, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, কলাম লেখক।


সর্বশেষ - রাজনীতি

নির্বাচিত

কোভিড নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর সাফল্য

চামড়া সংগ্রহ করতে প্রস্তুত সাভারের চামড়া শিল্পনগরী

দেশকে আবারো অস্থিতিশীল করতে গুজব ছড়াচ্ছে হেফাজতের সাইবার সন্ত্রাসীরা 

পাকিস্তানের বাংলাদেশি সমর্থকদের জন্য বিরুদ্ধে ব্যবস্থার ইঙ্গিত!

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আ’লীগের ‘সদস্য’ হলেন প্রধানমন্ত্রী

‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতিতে বিশেষ স্থানে বাংলাদেশ : ভারতের রাষ্ট্রপতি 

বহুল প্রত্যাশিত ৬ হাজার কোটি টাকা বাজেট সহায়তায় সম্মত বিশ্বব্যাংক

আইএমএফের পূর্বাভাস: বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৫.৫%

জাতীয় দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপহার পাঠাতে ভোলেন না প্রধানমন্ত্রী

আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল ইনস্টিটিউটে বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত