1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

অবশেষে টেস্ট সেঞ্চুরির দেখা লিটনের

কমলিকা হাসান : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২১

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সময়টা ভালো না গেলেও টেস্টের পথচলা খারাপ ছিল না। তাই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কিংবা তার আগে ঘরের মাঠের কুড়ি ওভারের সিরিজের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজকেই হয়তো বেছে নিয়েছেন লিটন দাস। আর ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এর চেয়ে ভালো কিছু আর কী হতে পারে! চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন তিনি। তাতে হয়তো সমালোচকদের কড়া ‘জবাব’ও দেওয়া হলো তার!

আজ (শুক্রবার) জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের প্রথম টেস্ট। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৭৯ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে করেছে ২৩৮ রান।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধারাবাহিক ব্যর্থতায় সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হয়েছেন লিটন। যে কারণে বাদ পড়েছিলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দল থেকে। তবে ফরম্যাট বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেলো লিটনের ফর্মও। যদিও গত কয়েক টেস্ট ধরেই এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটার তিনি। চলতি বছর উইকেটকিপার ব্যাটার হিসেবে সবচেয়ে বেশি গড় তার। সেই ধারাবাহিকতায় চট্টলার মাটিতে দারুণ এক ইনিংসে নিজের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন লিটন। ১৯৯ বলে শতক পূরণ করেছেন তিনি।

চাপ কাটিয়ে চালকের আসনে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বোলারদের সামনে দাপুটে পারফরম্যান্সে মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস বাড়িয়ে নিচ্ছেন রান। চমৎকার ব্যাটিংয়ে জুটির নতুন রেকর্ড গড়েছেন তারা। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে পঞ্চম উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি এখন মুশফিক-লিটনের। তাদের ১৫০ ছাড়ানো জুটিতে এরই মধ্যে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২০০ ছাড়িয়েছে।

চট্টগ্রামের এই ভেন্যুতে পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ছিল ১৪৪ রানের। ২০০৮ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই মুশফিকই মেহরাব হোসেনের সঙ্গে গড়ছিলেন জুটিটা। আজ সেটি ভেঙে দিলেন লিটনকে সঙ্গী করে।

টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট ক্রিকেট সম্পূর্ণ আলাদা। তারপরও খেলোয়াড়টি মুশফিকুর রহিম বলেই আগ্রহটা ছিল বেশি। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটের ব্যর্থতা ঝেড়ে তিনি নতুন করে সামনে আসতে পারেন কিনা, কৌতূহল থাকাটা স্বাভাবিক। দারুণ এক হাফসেঞ্চুরিতে সবকিছুরই জবাব দিয়ে দিলেন এই ব্যাটার।

বলার অপেক্ষা রাখে না টেস্টে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটার মুশফিক। দলের প্রয়োজনের সময় আবারও নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখলেন তিনি। দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন ধুঁকছে, তখন লিটনকে সঙ্গী করে ইনিংস গড়ার কাজে লেগে পড়েন। পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে চমৎকার সব শটে পেয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৪তম হাফসেঞ্চুরির দেখা। ১০৮ বলে ফিফটি পেয়েছেন তিনি।

অবশেষে হাসলো লিটন দাসের ব্যাট। ব্যর্থতার যে বোঝা চেপে বসেছিল তার কাঁধে, সেটা কিছুটা হলেও নামাতে পারলেন। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। তার সঙ্গে মুশফিকুর রহিমের চমৎকার ব্যাটিংয়ে রানের চাকা ঘুরছে বাংলাদেশের।

টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় চাপে পড়া বাংলাদেশকে টেনে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। টি-টোয়েন্টিতে ক্রিকেটে নিজেদের ব্যর্থতা কাটানোর মিশনে ভালোভাবেই সামাল দিচ্ছেন পরিস্থিতি। টেস্ট মেজাজে ব্যাটিং করে নিজেদের সঙ্গে দলীয় রান বাড়িয়ে নিচ্ছেন তারা।

অনেক দিন হলো ব্যাটে রান নেই লিটনের। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স তাকে দাঁড় করায় কাঠগড়ায়। যে কারণে বাদ পড়েন ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। তবে টেস্ট দলে ফিরেই নিজেকে প্রমাণ করলেন। দলের বিপদে দারুণ ব্যাটিংয়ে এই উইকেটকিপার তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম হাফসেঞ্চুরি।

টেস্টেও টপ অর্ডারের ভাগ্য বদলালো না। সেই একই চিত্র। দ্রুত দুই ওপেনারের বিদায়ে অধিনায়ক মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্তর দায়িত্ব বেড়ে গিয়েছিল কয়েকগুণ। কিন্তু এ দুজনও ব্যর্থতার গল্প লিখে বিদায় নিয়ে বিপদ বাড়িয়ে গেছেন দলের। ফলে ৪৯ রান তুলতে ৪ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।

৩৩ রানে দুই ওপেনারকে হারায় বাংলাদেশ। ক্রিজে আসেন অধিনায়ক মুমিনুল। ওই অবস্থায় দলের হাল ধরার কথা ছিল তার। কিন্তু পারেননি। শুরু থেকে ভুগতে থাকা বাঁহাতি ব্যাটার ৬ রান করে সাজিদ খানের বলে আউট হয়ে গেছেন। আম্পায়ার আউট না দেওয়ায় রিভিউ নিয়েছিল পাকিস্তান। তাতে দেখা যায়, সাজিদের বল মুমিনুলের ব্যাট ছুঁয়েই জমা পড়েছে উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে। ফলে ফিরে যেতে হয় বাংলাদেশ অধিনায়ককে।

তার বিদায়ের কিছুক্ষণ পরই আউট হয়ে যান শান্ত। টেস্ট মেজাজে ভালোই ব্যাট করছিলেন তিনি। তবে ফাহিম আশরাফের বলে আর টিকতে পারেননি। সাজিদের ক্যাচ হয়ে ১৪ রানে ফিরে যান তিনে নামা এই বাঁহাতি ব্যাটার।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওপেনিং সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও কুড়ি ওভারের সংস্করণ ভুলে টেস্টে নিজেদের মনোযোগ রেখেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ঘুরেফিরে টি-টোয়েন্টির সেই দৃশ্যগুলোই ফিরে আসছে। টেস্টেও যে ওপেনিংয়ের একই হাল! চট্টগ্রাম টেস্টে ৩৩ রান তুলতে দুই ওপেনারকে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর বাংলাদেশ নতুন শুরু করেছে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই শুরুতে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়ে যায় সাইফের। কিন্তু যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্সে এই ওপেনার শেষ টি-টোয়েন্টিতে খেলার সুযোগই পাননি। ‘প্রিয়’ ফরম্যাট টেস্টেও তার একই দশা। শাহীন আফ্রিদির বাউন্সারে ঘায়েল সাইফ। পাকিস্তানি পেসারের লাফিয়ে ওঠা বল তার হাতে লেগে উঠে গেলে সহজ ক্যাচটি নিতে অসুবিধা হয়নি আবিদ আলীর। ফেরার আগে ১২ বলে করে যান ১৪ রান।

আরেক ওপেনার সাদমানও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। হাসান আলীর শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান তিনি। ২৮ বলে ১৪ রান করে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁকে পড়েন বাংলাদেশ ওপেনার।

টি-টোয়েন্টি সিরিজ যাচ্ছেতাই কেটেছে। কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপেও পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ব্যর্থতা কাটাতে এবার টেস্ট মিশনে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে সেই মিশনে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অধিনায়ক মুমিনুল হক।

আর এই টেস্ট দিয়েই পাঁচ দিনের ক্রিকেটে অভিষেক হচ্ছে ইয়াসির আলীর। বাংলাদেশের টেস্ট দলে অনেক আগে সুযোগ মিললেও এই ব্যাটারের খেলার সুযোগ এলো এবারই। অন্যদিকে পাকিস্তানের একাদশেও নতুন মুখ আছে। অভিষেক হচ্ছে ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিকের।

বাংলাদেশ একাদশ: সাদমান ইসলাম, সাইফ হাসান, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস (উইকেটকিপার), ইয়াসির আলী, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহী, এবাদত হোসেন।

পাকিস্তান একাদশ: আব্দুল্লাহ শফিক, আবিদ আলী, আজহার আলী, বাবর আজম (অধিনায়ক), ফাওয়াদ আলম, মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটকিপার), ফাহিম আশরাফ, নোমান আলী, হাসান আলী, শাহীন শাহ আফ্রিদি, সাজিদ খান।


সর্বশেষ - রাজনীতি