1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

নিরাপত্তা পরিষদেও প্রস্তাব পাসের চেষ্টা চালাতে হবে

অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২১

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের তৃতীয় কমিটিতে সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার ঘটনা অবশ্যই একটি ইতিবাচক অগ্রগতি। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের জন্য। কারণ তারা এখনও বাস্তুচ্যুত এবং আশ্রিত। নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত যাওয়া এবং সব অধিকারসহ বসবাসের নিশ্চয়তার মধ্যেই যে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত হবে, এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এর আগে এ বিষয়ে যখন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে কোনো প্রস্তাব উঠেছে, সেখানে অনেক দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। কিছু দেশ ভোটদানে বিরত থেকেছে। কিন্তু এবার সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হচ্ছে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়েছে। এর ফলে মিয়ানমার সরকারের কাছে একটা বার্তা যাবে যে, তাদের রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান করতেই হবে- এটাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাওয়া।

সম্ভবত মিয়ানমার সরকার ভেবেছিল, দীর্ঘায়িত করতে পারলে কিংবা যতই দিন যাবে রোহিঙ্গা সংকটের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ কমে যাবে। কিন্তু এবার সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হলো, এ সংকটের সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আগ্রহ কমেনি; বরং তারা আগের চেয়ে আরও বেশি জোরালোভাবে এ বিষয়ে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। এ বিবেচনায় এটি অন্যান্যবারের প্রস্তাব গ্রহণের তুলনায় অনেক বেশি ইতিবাচক। তবে আমার মতামত হচ্ছে, এখানে থামলেই চলবে না। বাংলাদেশকে আরও বেশি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে যেসব গুরুত্বপূর্ণ দেশ এখনও মিয়ানমারের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে তাদের বোঝাতে হবে- তোমরা ব্যবসা চালিয়ে যাও, কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে সেই বাণিজ্য থেকে আলাদা করতে হবে। এ সংকটের স্থায়ী সমাধানে মিয়ানমারের ওপর আলাদা করে চাপ দিতে হবে। বিশেষ করে যেসব দেশ এখনও রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করে না, তারা যদি তা শুরু করে সেটাও একটা ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করবে। চীনের কথা না হয় বাদই দিলাম, ভারত ও জাপান এখনও রোহিঙ্গা শব্দ ব্যবহার করে না। এ দুটি দেশও যদি রোহিঙ্গা শব্দ ব্যবহার করে, সেটাও চীনের প্রতি একটা চাপ সৃষ্টি করবে রোহিঙ্গা শব্দ ব্যবহার করা এবং তাদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণের মধ্য দিয়ে এ বিষয়ে একটা ইতিবাচক ফল নিয়ে আসা যায়, যদি জোরালো প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে।

এবার চীন ও রাশিয়ার এ প্রস্তাবের বিরোধিতা না করার বিষয়টিকে আমি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখি। কারণ মিয়ানমার এতদিন ভেবে এসেছে, চীন ও রাশিয়া তাদের পকেটের ভেতর আছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, মিয়ানমারের জান্তা সরকার একদিকে চীন-রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে, আবার পশ্চিমাদের বিনিয়োগও বাড়াচ্ছে। মিয়ানমারের সামরিক সরকারের এই চালাকি নিশ্চয় চীন-রাশিয়া বুঝতে পারছে। যে কারণে তাদের এতদিনের অবস্থানে একটা পরিবর্তন আশা করা যায়। এই পরিবর্তনটা সম্ভব হলে নিরাপত্তা পরিষদেও এ ধরনের একটি প্রস্তাব পাস করানো সম্ভব হবে। আর সেটা রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করতে সত্যিকার অর্থে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এর জন্য বাংলাদেশকে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ এতদিন ধরে যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়েছে, তার ফলাফল হচ্ছে সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ। সেই প্রচেষ্টার ধারাবাহিক অগ্রগতি নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব গ্রহণের সফলতাও নিয়ে আসুক, রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান হোক, এটাই প্রত্যাশা।

লেখক:- অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ ও পরিচালক, সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।


সর্বশেষ - রাজনীতি