1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

শিশুদের সাম্প্রদায়িকতা থেকে দূরে রাখুন

রাজন ভট্টাচার্য : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ১ নভেম্বর, ২০২১

সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস থেকে শুরু করে রাজনীতিসহ উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে কোমলমতি শিশুদের উপস্থিতি বর্তমানে সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও শিশুরা বিভিন্ন গ্যাং কালচারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছে। বেড়েছে মোবাইল আসক্তি। সামাজিক শিক্ষার স্তর থেকে নতুন প্রজন্ম নানা কারণে দূরে সরে যাচ্ছে।

শুদ্ধ সংস্কৃতির পরিবর্তে অশুভ সংস্কৃতি তাদের মাথায় পচন ধরাচ্ছে। এর মধ্যে শিশুদের সামনে আরেক বিপদ হলো- সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস। বুঝে বা না বুঝে এরা এসবের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে! এটি কোনো দেশ বা জাতির ভবিষ্যতের জন্য কতটুকু বিপদের তা সহজেই অনুমান করা যায়।

কিছুদিন আগে কুমিল্লায় কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে দুর্গোৎসবকে বিনষ্ট করার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ঘটনা দেখেছে গোটা জাতি। এর জের ধরে দেশের বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের কারণে ম্লান হয়ে যায় উৎসবের আমেজ।

সপ্তাহজুড়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় মন্দির, হিন্দুপল্লিতে হামলাসহ হত্যাকাণ্ডের খবর বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়- এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল। অত্যন্ত সুকৌশলে এবারের অপকর্মটি করেছে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। এজন্য আগে থেকেই তাদের প্রস্তুতি ছিল।

প্রশ্ন হলো এবারের উৎসব বানচালে দেশবিরোধী গোষ্ঠীর ভিন্ন মাত্রার কৌশল ও তাদের আস্ফালন নিয়ে। যদিও দেশে এ ধরনের ঘটনা নতুন কিছু নয়।

এবারের ঘটনার পরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার, সমাজ এবং রাজনৈতিক শক্তির বাইরে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রশাসনিক তৎপরতায় সোচ্চার ছিল।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়- কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন মন্দিরে হামলাকারীদের মধ্যে বেশিরভাগ লোক স্থানীয়দের কাছে একেবারেই অপরিচিত। তাহলে হামলাকারীরা কারা? কোথা থেকে কারা তাদের একত্র করেছে এ বিষয়টি প্রকাশ হওয়া দরকার। যদিও এ নিয়ে দিন দিন নতুন তথ্য আসছে।

এছাড়া হামলার সঙ্গে যুক্তদের একটা বড় অংশের বয়স ১৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে। সবচেয়ে আতঙ্কের খবর হলো এটি। নতুন প্রজন্মের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার ভূত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা। এ নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ থাকার কথা নয়।

কোমলমতি কিশোরদের এই সর্বনাশা পথে কারা এনেছে এ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত হওয়া দরকার। সদিচ্ছা যদি থাকে অবশ্যই গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পক্ষে এসব তথ্য বের করতে বেশি সময় লাগার কথা নয়। কুমিল্লায় কথিত ধর্ম অবমাননার প্রতিবাদে ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মিছিলগুলোতে দেখা গেছে শিশুরাও ছিল।

২০১৩ সালে রাজধানীতে হেফাজতের তাণ্ডবের সময়ও অনেক কোমলমতি শিশুদের দেখা গেছে। পরে অনেক শিশু গণমাধ্যমকে জানায়- তাদের মিথ্যা বলে এখানে আনা হয়েছিল। সেসব শিশুর আর কখনই যেন ভুল পথে পরিচালনা করতে কেউ না পারে, সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বিশেষ পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

তেমনি রামু, বগুড়া, উখিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, শাল্লাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের সময় অনেক শিশুকে হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে দেখা যায়। যারা বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র। আবার সাধারণ পরিবারের সহজ-সরল ছেলেরাও হুজুগে এসব ঘটনার সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করে। এই প্রেক্ষাপটে সরকারের উচিত হলো অন্ধকার পথ থেকে শিশুদের আলোর দিকে নিয়ে আসতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া।

একথা বলার অপেক্ষা রাখে না, একজন মানুষ শিশু বয়স থেকেই যদি অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ শেখে সে কখনই অসাস্প্রদায়িকতার পরিচয় দিতে পারবে না। এছাড়া একটি রাষ্ট্রের মৌলিক চরিত্র- দেশপ্রেম-সমাজ ও পরিবারের প্রতি কর্তব্য। এসব বিষয় থেকে শিশুরা যদি দূরে থাকে তবে কীভাবে তারা দেশপ্রেমিক হয়ে বেড়ে উঠবে? একথা জোর দিয়ে ভাবার সময়ে এসেছে।

বিশ্বের উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর নজর উন্নয়নশীল দেশগুলোর দিকে। শিশুদের চিন্তা ও কর্ম যদি সাম্প্রদায়িকতা এবং মৌলবাদের পক্ষে হয়, তবে সেসব সংগঠন দ্রুত আর্থিক প্রণোদনা বাড়িয়ে অল্প বয়সিদের আরও বিপথগামী করবে। অর্থ, চাকরিসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আন্তর্জাতিক জঙ্গি নেটওয়ার্কে যুক্ত করবে। তাহলে দেশের যেমন ভাবমূর্তি নষ্ট হবে তেমনি প্রজন্ম যাবে ধ্বংসের দিকে।

রাষ্ট্রের মূলনীতিতে সাম্প্রদায়িকতার কালিমা লেপন করা হয়েছে, এটা এখন পুরোনোই বলা যায়। রাষ্ট্রের গায়ে দেয়া হয়েছে ধর্মের আবরণ। কিন্তু রাষ্ট্রের তো কোনো ধর্ম থাকতে পারে না। তাই সবার আগে ফিরতে হবে ৭২-এর সংবিধানে। যেখান থেকে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের আরেকটি যাত্রা শুরু হতে পারে। সেসঙ্গে রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার রোধ করা জরুরি। ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাজনৈতিক জোট বা নির্বাচনি বৈতরণি পার হওয়ার প্রবণতা থেকে সরে আসার বিকল্প নেই।

সরকার যদি মৌলবাদী গোষ্ঠীকে সমর্থন দেয় বা তাদের সঙ্গে আপস করে তাহলে সাম্প্রদায়িকতা এমনিতেই মাথাচড়া দিয়ে উঠবে। কোনো অবস্থাতেই ‘সংখ্যালঘু’ সম্প্রদায়ের মানুষ অধিকার নিয়ে বাঁচতে পারবে না। তেমনি নানা কৌশলে হামলার ঘটনাও ঠেকানো যাবে না। এরকম সবকটি প্রসঙ্গ যৌক্তিক।

রাষ্ট্র পরিচালনার সঙ্গে যারা রয়েছে তারা নিশ্চয়ই এসব বিষয় আবারও নতুন করে সমাধানের চিন্তা করবে বলে আশা রাখি। পাশাপাশি দেশের শিক্ষানীতি নিয়ে যেসব প্রশ্ন রয়েছে সেগুলোও সমাধান করা জরুরি।

কওমি মাদ্রাসায় পড়ুয়া ৫০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী দৃশ্যত সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরেই বলা যায়। এদের অবশ্যই দেশেপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংগীত গাওয়া নিশ্চিত করা এবং বিজ্ঞান শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তবে সবার আগে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারের পূর্ণাঙ্গ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে স্পষ্ট কোনো ভাবনা আছে কি না তা সাধারণ মানুষের অজানা।

যে জাতি শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ, সে জাতি তত মানসিকভাবে উন্নত। সংস্কৃতি মনকে বড় করে। মানুষকে আলোর পথে নিয়ে যায়। সাম্প্রদায়িকতা ও সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে রাখে। তাই ঝিমিয়ে পড়া সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে আবার জাগিয়ে তোলার দায়িত্ব রাষ্ট্রসহ সবার। সুনাগরিকের দায়িত্বের মধ্যেও পড়ে এটা। পাড়া-মহল্লার সাংস্কৃতিক সংগঠন থেকে শুরু করে জাতীয়পর্যায়ে সাংস্কৃতিক ও শিশু-কিশোর সংগঠনগুলোকেও পুনরায় সচল করতে হবে। সব নাগরিককে দেশের প্রয়োজনে কাজে লাগাতে হবে। নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ আরও বেশি ঘটাতে হবে।

আরেকটি কথা না বললেই নয়, দেশে একের পর এক সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু এসব অঘটনরোধে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে স্থায়ী কোনো ভূমিকা বা কর্মসূচি নেই। একটি ঘটনার পরও কোনো দলের পক্ষ থেকে কোথাও কোনো প্রতিবাদ-কর্মসূচি দেখা যায়নি। এমনকি দলের নেতাকর্মীদেরও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসরোধে সোচ্চার থাকতে নির্দেশ দিলেও তা কার‌্যকর হতে দেখা যায়নি।

অনেক সাম্প্রদায়িক ঘটনার সঙ্গে উলটো ক্ষমতাসীন দলের লোকজন জড়িত থাকার অভিযোগও উঠেছে। এটি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী মানুষের অন্তরে বড় আঘাত তো বটেই, বিষয়টি হতাশার ও নিন্দনীয়।

অনেক সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনায় জড়িত অপরাধীরা গ্রেপ্তার হলেও দ্রুত জামিনে বের হয়ে যায়। নাসিরনগরে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের মূল হোতা আঁখি চেয়ারম্যানসহ আরও তিনজন ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছে।

এছাড়াও অনেক প্রার্থীর বিষয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নালিশ জমা হলেও তা সঠিকভাবে দেখা হয়নি বলে যে অভিযোগ শোনা যায়, সেটিও দুঃখজনক। চিহ্নিত সন্ত্রাসী, বিএনপি ও জামায়াত নেতা, কবরস্থান-শ্মশান দখলে মদদদাতা, ধর্ষণের অভিযোগ, যুবদল কর্মী, মাদকব্যবসায়ীকেও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়ার অভিযোগ পুরোনো।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, শিশুদের মৌলবাদের থাবা থেকে বের করে আনতে হলে রাষ্ট্রকে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। মৌলবাদকে আশ্রয় বা মৌলবাদী শক্তির সঙ্গে আপস না করে মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে ভাবা এ মুহূর্তে আবশ্যক। দেশপ্রেমিক মানুষ গড়ে তোলা না গেলে সাম্প্রদায়িকতার বীজ কোনোভাবে ধ্বংস করা যাবে না। সবার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে একটি দেশপ্রেমিক ও মানবিক জাতি গঠনে রাষ্ট্রের নজর দেয়া ছাড়া বিকল্প নেই।

লেখক: রাজন ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ও কলাম লেখক।


সর্বশেষ - রাজনীতি

নির্বাচিত

জাতীয় নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

অ্যাপবিহীন চুক্তিভিত্তিক রাইড শেয়ারে নিষেধাজ্ঞা দিলো বিআরটিএ

পরিত্যক্ত জমিতে বেদানা চাষে স্বাবলম্বী

ছাত্রশিবিরের নাশকতাকারীকে ‘ভালো ছাত্র’ বলছে চবির আইন বিভাগ

চায়ের উৎপাদন বেড়েছে ৪ মিলিয়ন কেজি

ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে : প্রকল্পগুলো মুজিববর্ষের উপহার: শেখ হাসিনা

নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রয়নে সারাদেশে ১১০ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে গুজব ও রাজনীতি

সেলফিতে ‘ভি’ চিহ্ন দেখালো বঙ্গবন্ধু পরিবার

গাইবান্ধায় অবৈধভাবে মজুদ রাখা ১১২ মেট্রিক টন চাল জব্দ; পাঁচটি গুদাম সিলগালা