1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ২৩ জনের পরিবার পাচ্ছে ক্ষতিপূরণ

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৩

নতুন পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইনে কুমিল্লায় প্রথমবারের মতো ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ২৩ জনের পরিবার। এর মধ্যে নিহত আট জনের পরিবার পাঁচ লাখ টাকা করে পাচ্ছে। আর আহত ১৫ জনের পরিবার পাচ্ছে তিন লাখ টাকা করে।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয় থেকে এ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিআরটিএর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক আবদুল মান্নান।

বিআরটিএর দেওয়া তথ্যমতে, সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ নিহত হলে ক্ষতিপূরণ পাবে পাঁচ লাখ টাকা। পাশাপাশি আহত ব্যক্তির পরিবার পাবে তিন লাখ টাকা। ক্ষতিপূরণের এ ব্যবস্থা রেখে ২০১৮ সালে সড়ক পরিবহন আইন করেছিল সরকার। সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তার যে বিধান করা হয়েছিল, তার আওতায় ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু হচ্ছে। এর জন্য একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণের অর্থের মূল জোগানদাতা যানবাহনের মালিকরা। এর সঙ্গে সরকারও অনুদান দেবে। সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২-এর আলোকে হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। ২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে বিধিমালাটি কার্যকর হয়েছে। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে হিসাব ধরা হচ্ছে। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারির আগে যারা সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত হয়েছেন, তারা ক্ষতিপূরণের জন্য বিবেচিত হবেন না।

ক্ষতিপূরণের পরিমাণ যেভাবে নির্ধারণ হয়

সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২ অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ নির্ধারণের মানদণ্ড ঠিক করবে ট্রাস্টি বোর্ড। দুর্ঘটনায় নিহত বা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কারও মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হবে পাঁচ লাখ টাকা। দুর্ঘটনায় কোনও ব্যক্তির গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গহানি হলে এর পরিমাণ হবে তিন লাখ টাকা। গুরুতর আহত ও চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা না থাকলে ক্ষতিপূরণ পাবে তিন লাখ টাকা। গুরুতর আহত ও চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকলে এর পরিমাণ হবে এক লাখ টাকা। সরকারের অনুমোদন নিয়ে ট্রাস্টি বোর্ড সময়ে সময়ে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ কমাতে বা বাড়াতে পারবে।

যেভাবে ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়া যাবে

ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য দুর্ঘটনা ঘটার ৩০ দিনের মধ্যে নির্ধারিত ফরমে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করতে হবে। আবেদন দাখিল হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে বোর্ডের চেয়ারম্যান একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন। এ কমিটি পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আবেদনকারীর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে বোর্ডের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদন দাখিলের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ট্রাস্টি বোর্ড আবেদন মঞ্জুর করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। টাকা আবেদনকারীর ব্যাংক হিসাবে চেকের মাধ্যমে দেওয়া হবে। এছাড়া সব থানা, হাইওয়ে থানা ও উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে আবেদনের ফরম পাওয়া যাবে। আবেদনকারীর আবেদন যাচাই-বাছাই করে ট্রাস্টি বোর্ড মঞ্জুর করলে ক্ষতিপূরণ দেবে বিআরটিএ।

যে ২৩ জনের পরিবার পাচ্ছে ক্ষতিপূরণ

কুমিল্লা বিআরটিএর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত জুন মাসে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার জোড়কানন ইউনিয়নে ফুটবল খেলোয়াড়বাহী শিক্ষার্থীদের একটি পিকআপ দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে ওই ইউনিয়নের লালবাগ গ্রামের মো. মোরশেদ, মো. শাহীন, মো. সাকিব, মো. ফয়সাল, সোহেল নামের পাঁচ স্কুলছাত্র নিহত হয়। এছাড়া আহত হয় ১৫ জন।

পাশাপাশি গত ১৭ এপ্রিল কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের বুড়িচং উপজেলার টিপরাবাজার এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হন বুড়িচং এলাকার মিজানুর রহমান ও বাতেন আহমেদ। জুলাই মাসে একই এলাকায় আরেক দুর্ঘটনায় নিহত হন নারায়ণগঞ্জের আল মামুন। এই পরিবারগুলো ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে।

ফুটবল খেলোয়াড়বাহী শিক্ষার্থীদের পিকআপ দুর্ঘটনায় নিহত শাহীনের বাবা মোহাম্মদ মোহন বলেন, ‘সন্তান হারানোর শোক কখনও পূরণ হবার নয়। তবে ক্ষতিপূরণের যে টাকা পাবো, তা দিয়ে শাহীনের তিন ভাই এক বোনের পড়ালেখা চালিয়ে নেবো। ক্ষতিপূরণ দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।’

এটি সরকারের ভালো উদ্যোগ

জোড়কানন ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘জোড়কাননে সড়ক দুর্ঘটনায় যারা নিহত ও আহত হয়েছে; তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। এটি সরকারের ভালো উদ্যোগ। এতে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে হতাহতদের পরিবারগুলো।’

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কুমিল্লার সহকারী পরিচালক আবদুল মান্নান বলেন, ‘সরকারের এই উদ্যোগের কারণে অনেক অসহায় পরিবারের উপকার হবে। এটি সরকারের প্রথম কোনও উদ্যোগ। সারাদেশের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশ দাঁড়াতেই সরকারের এই চমৎকার উদ্যোগ।’


সর্বশেষ - রাজনীতি