সিরাজগঞ্জের চলনবিলে চলছে মাছ ধরার ধুম। সুতিজাল, বেড়জালসহ বিভিন্নভাবে মাছ ধরছেন জেলেরা। এদিকে বিলের পাশে বসানো হয়েছে শুঁটকির অস্থায়ী চাতাল। সেই চাতালে বিভিন্ন মাছ শুকিয়ে তৈরি করা হচ্ছে শুঁটকি। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও উল্লাহপাড়ায় চলনবিলের পাশজুড়ে এসব চাতাল দেখা যায়। ওই অঞ্চলে গেলেই প্রথমে নাকে আসবে শুঁটকির গন্ধ। এসব শুঁটকি দেশের গন্ডি পেড়িয়ে চলে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
জানা যায়, এসব শুঁটকি এখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে বিদেশেও। উল্লাহপাড়া উপজেলার আড়ুয়া পাঙ্গাসী গ্রামের শুঁটকি ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন বলেন, চলনবিলের শুঁটকি যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, বাহরাইন, কাতার, দুবাইসহ ১০-১২টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। একই গ্রামের শুঁটকি ব্যবসায়ী আকবর আলী বলেন, মাছ ধরার মৌসুমে চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ীভাবে চাতাল বসানো হয়েছে। এসব চাতালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয়।
ব্যবসায়ীরা আরও জানান, মানভেদে এসব শুঁটকি কয়েকটি ভাগে বাছাই করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো মানের শুঁটকিগুলো রপ্তানি হয়। মূলত ঢাকার ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরেই এখানকার শুঁটকি বিদেশে যায়। এছাড়া এখানকার শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে ঢাকা, সৈয়দপুর ও তিস্তা অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। চলনবিলের শুঁটকির মান ও আকারভেদে দামও ভিন্ন। ছোট আকারের এক মণ শুঁটকির দাম ১০ থেকে ২২ হাজার এবং বড় আকারের শুঁটকির দাম ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
শুঁটকি ব্যবসায়ী মানিক বলেন, গত বছর তার চাতালে প্রায় ২০০ মণ শুঁটকি উৎপাদন হয়েছিল। এবার আরও বেশি শুঁটকি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। আমজাদ আলী নামের এক স্থানীয় ব্যবসায়ী জানান, আশ্বিন থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত এখানে শুঁটকি তৈরি হয়। প্রতি মণ তাজা মাছ থেকে ১৫ কেজি শুঁটকি পাওয়া যায়। এভাবে প্রায় তিন মণ তাজা মাছ শুকালে এক মণ শুঁটকি হয়।
আমজাদ আলী আরও বলেন, শুঁটকি ব্যবসায় যেমন লাভ আছে, তেমন লোকসানও আছে। ভালোভাবে মাছ শুকানো না হলে শুঁটকি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে ভালো মানের শুঁটকির কদর বেশি। বড় ব্যবসায়ীরা এগুলো কিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করেন।