1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

কৃষিপণ্য রপ্তানির সুদিন

বিশেষ প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২২

যশোর সদর উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল আওয়ালের পেশা কৃষি। কিন্তু কষ্টের ফসল থেকে এক সময় দাম পেতেন খুব কম। তবে দিন এখন বদলে গেছে। আব্দুল আওয়ালের ক্ষেতে উৎপাদিত ফসল এখন চলে যাচ্ছে বিদেশে। দাম পাচ্ছেন ভালো। ছেলেমেয়ে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে আছেন। নিজের পাঁচ একর জমির সঙ্গে ইজারা নিয়েছেন আরও চার একর। ৯ একর জমিতে এখন তিনি বারোমাসি সবজি চাষ করে মাসে ৫০ হাজার টাকারও বেশি আয় করছেন।

শুধু আব্দুল আউয়াল নন, শাহবাজপুরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের কয়েকশ কৃষকের ভাগ্য এখন বদলে গেছে। রপ্তানিযোগ্য সবজি উৎপাদন করে তাঁরা এখন স্বাবলম্বী। এসব গ্রামের মেঠোপথে যেদিকে চোখ যায়, শুধু বাহারি সবজির ক্ষেত। এমন পরিবর্তন একদিনে হয়নি। গত ৫ থেকে ৬ বছর ধরে ইউএসএআইডির এভিসি প্রকল্পের সহায়তায় যশোরে সহস্রাধিক কৃষককে সবজি ও ফসল ফলনে স্থানীয় জিএপি (গুড এগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিসেস) স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে চাষে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে কৃষকদের উৎপাদিত ফল ও সবজি তাঁদের রিটেইল শপে ‘শুদ্ধ’ নামে বিক্রি হচ্ছে। রপ্তানি হচ্ছে দেশের বাইেরও। যশোর থেকে বিভিন্ন সবজি ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

সারাদেশে সরকারি উদ্যোগেও রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্য চাষাবাদে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি মন্ত্রণালয় এ জন্য তৈরি করেছে রোডম্যাপ। সরকার কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রপ্তানিতে ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা দিচ্ছে। রপ্তানি হয়- এমন কৃষিপণ্যের তালিকায় রয়েছে শাকসবজি, ফলমূল, চা, তামাক, মসলা, শুকনো খাবার ইত্যাদি।

সরকারের নানা উদ্যোগ

কৃষিপণ্যে রপ্তানি আয় ৪ বছরের মধ্যে দ্বিগুণ হয়ে গত অর্থবছরে ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ১১৬ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানির। বিভিন্ন বাধা দূর হলে দুই বছরে কৃষিপণ্য রপ্তানি থেকে ২ বিলিয়ন ডলার আয় হতে পারে। সে লক্ষ্যে পৌঁছতে বেশ কিছু বাধা চিহ্নিত করে তা দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘দেশের শাকসবজি, আলু ও ফলমূল রপ্তানির সম্ভাবনা অনেক। বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য উৎপাদন হচ্ছে দেশের চাহিদার চেয়ে বেশি। এ উদ্বৃত্ত ফসল সারা পৃথিবীতে আমরা রপ্তানি করতে চাই। সে জন্য, রপ্তানির বিভিন্ন বাধা দূর করতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে।’

কৃষি মন্ত্রণালয় শাকসবজি, আলু, ফলমূল ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি বাড়াতে একটি খসড়া রোডম্যাপ বা পথনকশা তৈরি করেছে। এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন বাধা দূর হলে আগামী অর্থবছরে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা সম্ভব হবে। পথনকাশায় কৃষিপণ্য রপ্তানি বাড়াতে বিভিন্ন সুপারিশ এসেছে। কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে রপ্তানি সেল গঠনের কথা বলা হয়েছে। বিদেশ থেকে কাঙ্ক্ষিত জাতের বীজ আমদানি করে দ্রুত রিজিওনাল ট্রেইল গঠনের মাধ্যমে বিএডিসি ও ডিএইর মাধ্যমে বীজ সম্প্রসারণ, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং পদ্ধতিতে জিএপি, জিপিপি ও জিএইচপি অনুসরণের মাধ্যমে নিরাপদ ও মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদনের সুপারিশ করা হয়েছে। বিমানবন্দরের কার্গো স্থানে কৃষিপণ্যের জন্য পৃথক গেট, আলাদা জায়গা ও পৃথক স্ক্যানার মেশিন স্থাপন, সব বিমানে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ স্থান বাধ্যতামূলকভাবে কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য বরাদ্দ রাখা, প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে বিমান ভাড়া পুনর্নির্ধারণ এবং বিমানবন্দর এলাকায় বিএডিসির তত্ত্বাবধানে এক একর জমিতে আধুনিক মানসম্মত হিমাগার স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ ছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে পিপিপি মডেলে একটি আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব স্থাপন, বেসরকারি পর্যায়ের ল্যাবগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা প্রদান, মান পরীক্ষায় বিএসটিআইর কার্যক্রম ত্বরান্বিত করাসহ নানা সুপারিশ এসেছে।

শ্যামপুরের সেন্ট্রাল প্যাকিং হাউসকে আধুনিকায়নের কাজ শুরু করেছে সরকার। ২০১৭ সালে এ ল্যাব চালু হলেও দীর্ঘদিন এর কার্যক্রম ছিল সনাতন পদ্ধতিতে। ল্যাবের আধুনিকায়নে ‘কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউসে স্থাপিত উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাবরেটরিতে রূপান্তর’ শীর্ষক ১৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন আরেকটি প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

এ দিকে রপ্তানির জন্য নির্ধারিত পণ্য পরীক্ষা করার জন্য বাংলাদেশে একটি কৃষি গবেষণাগার স্থাপন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে জার্মান প্রতিষ্ঠান কোটারম্যান জিএমবিএইচ। কৃষি মন্ত্রণালয়ে প্রতিষ্ঠানটির পাঠানো এক চিঠি থেকে জানা গেছে এ তথ্য। বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করতে নভেম্বর মাসে কোটারম্যান জিএমবিএইচের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসবে বলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে লেখা একটি চিঠিতে জানিয়েছেন কোম্পানিটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাজিম ডয়োহান।


সর্বশেষ - রাজনীতি