1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

দাশেরকান্দির পয়োবর্জ্য দিয়ে তৈরি হচ্ছে সিমেন্ট

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

রাজধানীর বেশকিছু এলাকার পয়োবর্জ্য হাতিরঝিলের রামপুরা ব্রিজ সংলগ্ন স্যুয়ারেজ লিফটিং স্টেশন থেকে আফতাবনগর হয়ে চলে যাচ্ছে দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারে। সেখানে প্রতিদিন ৫০ কোটি লিটার পয়োবর্জ্য পরিশোধন করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিদিন পয়োবর্জ্য পরিশোধন করে ৪৮ কোটি লিটার স্বচ্ছ পানি ফেলা হচ্ছে বালু নদে। যে কারণে বালু নদের দূষণের মাত্রা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। আবার পয়োবর্জ্য পরিশোধনের সময় প্রতিদিন ৪৫ থেকে ৫০ টন ফ্লাই অ্যাশ (শুষ্ক বর্জ্য) তৈরি হচ্ছে। এগুলো কাঁচামাল হিসেবে সিমেন্ট কোম্পানিগুলোর কাছে বিক্রি করা হচ্ছে।

ঢাকা ওয়াসার দাশেরকান্দি অত্যাধুনিক পরিবেশবান্ধব পয়ঃশোধনাগার দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বৃহত্তম। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে তিন হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। কিছুদিন আগে এ পয়ঃশোধনাগারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।

জানা গেছে, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পটির জন্য ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে, ঋণ কার্যকর হয় ২০১৭ সালের ৮ মে। প্রকল্পের কাজ ২০১৮ সালের ১ জুলাই শুরু হয়। এতে অর্থায়ন করে চীনের এক্সিম ব্যাংক। দেশটির একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজটি করে।

দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকার রমনা থানার অন্তর্গত মগবাজার, ওয়্যারলেস রোড, ইস্কাটন, নয়াটোলা, মৌচাক, আউটার সার্কুলার রোড, মহানগর হাউজিং এলাকা, কলাবাগান, ধানমন্ডি (পূর্বাংশ), তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, তেজগাঁও এলাকা, নাখালপাড়া, গুলশান, বনানী, বাড্ডা, আফতাবনগর, নিকেতন, সাঁতারকুল ও হাতিরঝিল এলাকার সৃষ্ট পয়োবর্জ্য পরিশোধন করা হচ্ছে।

২০১৫ সালের ২৫ আগস্ট দাশেরকান্দি প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। শুরুতে প্রকল্পের খরচ ছিল তিন হাজার ৩১৭ কোটি টাকা। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এতে প্রকল্পের খরচ বেড়ে দাঁড়ায় তিন হাজার ৭১২ কোটি টাকা। তবে, দ্বিতীয় সংশোধনীতে এ প্রকল্পের ব্যয় ২৩০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে দাবি করছে ঢাকা ওয়াসা। যে কারণে প্রকল্পের মোট ব্যয় হয়েছে তিন হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পটি প্রায় ৬২ একর জমির ওপর নির্মিত।

যেভাবে পয়োবর্জ্য থেকে হচ্ছে সিমেন্টের কাঁচামাল ফ্লাই অ্যাশ

হাতিরঝিলের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে মোট ১১টি স্পেশাল স্যুয়ারেজ ডাইভারশন স্ট্রাকচার (এসএসডিএস) দিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পয়োবর্জ্য এবং রান্নাঘরের পানি ও বর্জ্য চলে যাচ্ছে রামপুরা ব্রিজ সংলগ্ন স্যুয়ারেজ লিফটিং স্টেশনে। পয়ঃশোধনাগারের কাজ শুরু হয় এ লিফটিং স্টেশন থেকেই। প্রথমে সবধরনের পয়োবর্জ্য এসে এখানে ঢোকে। তারপর পলিথিন, বোতলসহ এ ধরনের বড় বর্জ্য ছাকনির মাধ্যমে আলাদা করে রাখা হয়। আর পয়োবর্জ্য ও কিচেন ওয়াটারের বর্জ্যযুক্ত অংশ স্যুয়ারেজ লিফটিং স্টেশন থেকে আফতাব নগর হয়ে ট্রাংক স্যুয়ারেজ লাইনের মাধ্যমে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে চলে যাচ্ছে দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারে।

দাশেরকান্দি শোধনাগারে প্রতিদিন প্রায় ৫০ কোটি লিটার পয়োবর্জ্য কয়েক দফায় পরিশোধন করে তা থেকে ৪৮ কোটি লিটার স্বচ্ছ পানি আলাদা করা হচ্ছে। সেই স্বচ্ছ পানি বালু নদে ফেলা হচ্ছে। এই পরিশোধনের মাধ্যমে প্রতিদিন উৎপন্ন হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টন ফ্লাই অ্যাশ বা ছাই, যা সিমেন্ট কোম্পানিগুলোর কাছে কাঁচামাল হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারের প্রকল্প পরিচালক মহসিন আলী বলেন, পয়োবর্জ্য থেকে উৎপাদন করা ফ্লাই অ্যাশ সিমেন্ট কোম্পানির কাছে আমরা বিক্রি করছি। আপাতত তিনটি সিমেন্ট কোম্পানি আমাদের কাছ থেকে এগুলো সংগ্রহ করছে টাকার বিনিময়ে।

জানা গেছে, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারে বিশাল আয়তনের ১২টি গোলাকার ট্যাংক রয়েছে। সেখান থেকে বিভিন্ন স্তরে পরিচ্ছন্ন করা হয় পয়োবর্জ্য। এরপর সেখান থেকে বের হওয়া অবশিষ্টাংশ (কাদাযুক্ত ময়লা বা স্লাজ) পুড়িয়ে শুকানোর ইউনিট বা বার্নিং সিস্টেমে ফ্লাই অ্যাশ তৈরি হচ্ছে।

ঢাকা ওয়াসার মতে, প্রতিদিন উৎপন্ন হওয়া পয়োবর্জ্যের জন্য ঢাকায় ৮৮১ কিলোমিটার পয়োনালা আছে। বর্তমানে ঢাকার ২০ ভাগ এলাকা পয়োনালার আওতায় এসেছে।

দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারের সার্বিক বিষয় নিয়ে প্রকল্পটির পরিচালক মহসিন আলী বলেন, হাতিরঝিলের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে নির্মিত ১১টি স্পেশাল স্যুয়ারেজ ডাইভারশন স্ট্রাকচারের মাধ্যমে পয়োবর্জ্য রামপুরার স্যুয়ারেজ লিফটিং স্টেশনের মাধ্যমে দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারে আসছে। এসব এলাকা থেকে আসা প্রতিদিন প্রায় ৫০ কোটি লিটার পয়োবর্জ্য শোধন করে প্রায় ৪৮ কোটি লিটার পানি ফেলা হচ্ছে। এতে করে বালু নদসহ পাঁচটি খালের পানির দূষণ কমে গেছে। এ ছাড়া, এ শোধনাগারে প্রতিদিন ৪৫ থেকে ৫০ টন ফ্লাই অ্যাশ (শুষ্ক বর্জ্য) তৈরি হচ্ছে। এগুলো কাঁচামাল হিসেবে কিনে নিচ্ছে সিমেন্ট কোম্পানিগুলো। সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব প্রক্রিয়ায় কাজ চলছে।


সর্বশেষ - রাজনীতি