বাংলাদেশের আলোচিত ব্যক্তিত্ব ড. মুহম্মদ ইউনূস এবং মার্কিন নির্বাচনে পরাজিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন একই মানসিকতার মানুষ। যে কারণে তাদের মধ্যে সখ্যতাও গড়ে উঠবে, সেটিই স্বাভাবিক। দুজনই বড় মাপের প্রতারণা করে জনগণকে ধোঁকা দিয়েছেন। ড. ইউনূস গরিবের পকেট কেটে অর্থনীতির কারবার করে নোবেল পেয়েছেন শান্তিতে! অবাক করা বিষয়টি নিয়ে সে সময় বিস্তর আলোচনা হয়েছিল। ওদিকে হিলারি তার লক্ষ্য পূরণ করতে পারেননি। মার্কিন জনগণ তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল। কারণ সেবার নিজ দলের জনপ্রিয় ডেমোক্রেট নেতা বার্নি স্যান্ডার্সকে ‘চক্রান্ত’ করে প্রেসিডেন্সিয়াল প্রার্থীতার দৌঁড় থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। দলের নীতিনির্ধারক ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটিকে দিয়ে আগেই স্যান্ডার্সকে বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়ে হিলারি মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়েছিলেন সেবার। যার ফলে সেবার দুই লাখ ভোট বেশি পেয়েও হেরে যান হিলারি। এটি তার ‘পাপের’ ফল হিসেবেই মানেন অনেকে। (প্রসঙ্গত, প্রার্থিতা বাগানোর কেলেঙ্কারির দায় নিয়ে সে সময় পদত্যাগ করেন ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির (ডিএনসি) প্রধান ডেবি ওয়াসারম্যান শুলজ। কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর নিজ দলের সমর্থকরা কয়েকটি রাজ্যে হিলারির বিরুদ্ধে বিক্ষোভও করেন সে সময়।)
অর্থনীতি নিয়ে কায়কারবার করা ইউনূস সাহেব সেবার নোবেল পান শান্তিতে! নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে শান্তির নোবেল বরাবরই বিতর্কিত। সেবার আগের সব বিতর্ককে ছাড়িয়ে যায় যখন ড. ইউনূস শান্তিতে পান নোবেল। পশ্চিমা বন্ধু হিলারিদের কল্যাণেই যে তিনি সেবার নোবেল পান, সেটি পরে পরিষ্কার হয়। নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে পশ্চিমের সমালোচক কাউকে অদ্যাবধি পুরস্কারটি দেওয়ার নজির নেই। উদীয়মান অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশের সামনে কড়া নাড়ছে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। সারাবছর কোনো টু শব্দ নেই। গত কয়েক মাস ধরে হঠাৎ আলোচনায় আসে ড. ইউনূস এবং তার বিরুদ্ধে দায়ের করা কিছু মামলা। দেশে প্রায় অর্ধকোটি মামলা আছে। সেগুলো বিচারাধীন। দেশের সব নাগরিকই সমান। গণতন্ত্রে কাউকে বিচার থেকে রেহাই দেওয়ার সুযোগ নেই।
কিন্তু হঠাৎ করে ড. ইউনূস সাহেবকে নিয়ে তার পশ্চিমা মিত্ররা সরব হয়ে উঠলেন। তার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়ে চললেন। এই বিবৃতিবাজিকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের জন্য এটি রীতিমতো ভয়ের। তবে আমার বিশ্বাস, এই ভয়কে বাংলাদেশ জয় করতে পারবে। এর চেয়েও কঠিন পরিস্থিতি ছিল একাত্তরে। তখন যদি পারে, এই অর্ধশতাব্দি পরে এসে পরিণত বাংলাদেশ নিশ্চয়ই পারবে সকল ভীতি জয় করতে। তবে জনগণকে থাকতে হবে সজাগ।
লেখক : লুৎফর রহমান হিমেল – সম্পাদক, দ্য রিপোর্ট.লাইভ