তীর-ধনুক হাতে জুটিবদ্ধ হয়ে আরচ্যারিতে সাফল্যের লক্ষ্যভেদ করেছেন দেশসেরা তীরন্দাজ রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী। আরচ্যারির পর তারা এবার জীবন জয়ের লক্ষ্যে গাঁটছড়া বেঁধেছেন। ভালোবাসার তির তাদের বাস্তব জীবনও এক করে দিয়েছে।
বুধবার (৫ জুলাই) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে নীলফামারীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে উভয় পরিবারের সদস্য ও আরচ্যারি ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ধুমধামের সঙ্গে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বাংলাদেশে আরচ্যারির নাম বললেই যাদের কথা চলে আসে তারা হলেন খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার জয়পুর পূর্ব রূপসা গ্রামের রোমান সানা ও নীলফামারী সদর উপজেলার বাসিন্দা সাংবাদিক নুর আলমের কন্যা দিয়া সিদ্দিকী। এরা দুজনেই দেশ ও দেশের বাইরে খেলে কয়েকবার সফল তীরন্দাজ হয়েছেন। বয়ে এনেছেন দেশের সুনাম।
এদিকে বেশ কিছুদিন ধরে ক্রীড়াঙ্গনে গুঞ্জন চলছিল রোমান ও দিয়ার বিয়ের বিষয়টি। দিয়া সম্প্রতি নিজেও বিয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সেটি বুধবার দুপুরে বাস্তবে রূপ নিল। উভয় পরিবারের সম্মতিক্রমে পাঁচ লাখ ১০১ টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করে কনের হাত, কান ও গলার স্বর্ণ বাবদ দুই লাখ টাকা নগদ পরিশোধ করে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে উভয় পরিবারের আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ আরচ্যারি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আনিছুর রহমান দিপু, সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজিব আহমেদ চপ্পল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম কিরণ, কোচ মাট্রিন ফেডথরিথ, ট্রেইনার ফারুক ডালিসহ আর্চারি ফেডারেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার রাতে একই কমিউনিটি সেন্টারে দিয়া সিদ্দিকীর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। বরসহ প্রায় ৩০ জন বরযাত্রী মঙ্গলবার রাতে নীলফামারীতে এসে শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে রাতযাপন করেন। দুপুর দেড়টার দিকে বরযাত্রীসহ কমিউনিটি সেন্টারে আসেন বর। এরপর ধুমধামের সঙ্গে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
তাদের বিয়েতে উকিল হন বেসরকারি টেলিভিশন বাংলাভিশনের রংপুর ব্যুরোপ্রধান আনজারুল ইসলাম জুয়েল।
২০২১ সালের টোকিও অলিম্পিক ও একই সালে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ আরচ্যারির চাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের সাফল্য আসে রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকীর হাতের তীর-ধনুকে। খেলার মাঠের পর সংসার জীবনেও তাদের ভালোবাসা অটুট থাকুক- এমনটাই প্রত্যাশা করেন ক্রীড়াঙ্গন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারশের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজিব আহমেদ চপ্পল বলেন, এই জুটি বিয়ের পর আরচ্যারিতে আরো বেশি বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।
কোচ মাট্রিন ফেডথরিথ জানান, তাদের বিয়েতে তিনি খুব খুশি। তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হোক এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
দিয়া সিদ্দিকী জানান, প্রথম পর্যায়ে বড় ভাইয়ের সম্পর্ক তৈরি হলেও এক পর্যায়ে তা গড়ায় প্রেমে। এরপর দুই পরিবারের সম্মতিতে আজকের এ বিয়ে। আগে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জুটিবদ্ধ হয়ে খেলে যেমন দেশের সুনাম অর্জন করেছেন; বিয়ের পরেও তারা সেই ধারা অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টা রাখবেন।
রোমান সানা বলেন, বিয়ের পরেও আগামীতে নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে আমরা আরচ্যারিকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবো। দিয়াকে আগে যেমন সাপোর্ট দিয়েছি এখন আরো বেশি সাপোর্ট দিতে পারব বলে আশা রাখি। এতে আমরা শতভাগ ভালোটা দেশবাসীকে উপহার দিতে সক্ষম হবো বলে আশা করি।
