1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বানভাসি কৃষকদের পুনর্বাসন বন্যা শেষেই 

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ৩ জুলাই, ২০২২

এবারের বন্যা ১২২ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। স্মরণকালের এ ভয়াবহ বন্যায় ডুবেছে সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলার বিভিন্ন অঞ্চল। এ বন্যায় লক্ষাধিক হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরা। এসব কৃষকদেরকে পুনর্বাসন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য বন্যা শেষ হলেই কাজ শুরু করবে কৃষি মন্ত্রণালয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, অতিবৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া ও পাহাড়ি ঢলে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও করতোয়া নদীর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলো ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্লাবিত হয়েছে। সাম্প্রতিক বন্যায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, নেত্রকোণা, শেরপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, টাঙ্গাইল, গাইবান্ধা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জসহ মোট ১৬টি জেলার ফসল আক্রান্ত হয়।

প্রতিনিয়ত কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা থেকে আক্রান্ত ফসলি জমির সর্বশেষ পরিস্থিতির তথ্য নেওয়া হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অফিসগুলোর সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাদের কৃষকের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে
অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, এসব জেলাগুলোতে বন্যায় আক্রান্ত ফসলী জমির পরিমাণ ১ লাখ ১২ হাজার ৫৫ হেক্টর। এরমধ্যে আউশ ৬৩ হাজার ১২৯ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ৬০৬ হেক্টর, বোনা আমন ১৮ হাজার ৯৭৩ হেক্টর, সবজি ৯ হাজার ৪৯৭ হেক্টর ও অন্যান্য ১৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে।

জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসনে তালিকা করা হবে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা প্রতিদিন ক্ষয়ক্ষতির বিভিন্ন তথ্য নিচ্ছেন। বন্যা শেষ হলে পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করা হবে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি একটি সভাও করা হয়। সভায় বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে-

বন্যা শেষ হয়ে গেলে কৃষকদেরকে সহায়তার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাদের বিনামূল্যে বীজগুলো দেওয়া হবে। প্রণোদনার যে বাজেট আছে, সেখান থেকেই এটি দেওয়া হবে

দ্রুত পানি নেমে গেলে নাবী উফশী জাতের আমন ধানের বীজ/অধিক ফলনশীল জাতের আমন ধানের বীজ সহায়তার মাধ্যমে পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণ, আমনের আপদকালীন চারা উৎপাদন করে বিনামূল্যে চারা বিতরণ কর্মসূচি গ্রহণ, ভাসমান বেডে নাবী জাতের আমন ধানের চারা তৈরি করে বিতরণ করা, রবি মৌসুমে আগাম সরিষা, গম, ভূট্টা, চীনাবাদাম ও সবজি চাষে বিনামূল্যে বীজ বিতরণের মাধ্যমে পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণ করা, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকদের মধ্যে বোরো ধান বীজ ও সার বিতরণের পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণ করা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) ড. মো. আবদুর রৌফ বলেন, বন্যা শেষ হয়ে গেলে কৃষকদেরকে সহায়তার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাদের বিনামূল্যে বীজগুলো দেওয়া হবে। প্রণোদনার যে বাজেট আছে, সেখান থেকেই এটি দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, এখন যে বন্যা, সেটার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ইস্যুতে প্রতিদিন প্রতিবেদন নেওয়ার জন্য আমরা একটা কমিটি করে দিয়েছি। তারা প্রতিদিন প্রতিবেদন দিচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের যে প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে, কিছু-কিছু বীজ সিলেট ও সুনামগঞ্জে পাঠানোও হয়েছে। সমস্যা হচ্ছে বন্যার পানি আবার বাড়ছে। সেক্ষেত্রে পানি যদি পুরোপুরি না নেমে যায়, তাহলে বীজগুলো রোপণ করতে পারবে না।

আবার বৃষ্টি হচ্ছে। আমরা অপেক্ষা করছি। বৃষ্টি কমুক। ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হয়নি। প্রকৃত তথ্য এলে আমরা পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণ করব

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে বিএডিসিতে ১ হাজার ৯৩ মেট্রিকটন প্রণোদনার বীজ ও বন্যা পরবর্তী প্রস্তুতি হিসেবে ১ হাজার ৬০০ মেট্রিকটন আপদকালীন বীজ সংগ্রহে আছে। এছাড়া ৪ হাজার ১২৮ মেট্রিকটন সার মজুদ আছে। এরমধ্যে ২০০ থেকে ২৫০ মেট্রিকটন বন্যার পানিতে ভিজে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম বলেন, এ অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুম সার্বক্ষণিক খোলা রেখে বন্যা দুর্গত অঞ্চল ও জেলা পর্যায়ের অফিসগুলোর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা থেকে আক্রান্ত ফসলি জমির সর্বশেষ পরিস্থিতির তথ্য নেওয়া হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অফিসগুলোর সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাদের কৃষকের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বলাই কৃষ্ণ হাজরা বলেন, আবার বৃষ্টি হচ্ছে। আমরা অপেক্ষা করছি। বৃষ্টি কমুক। ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হয়নি। প্রকৃত তথ্য এলে আমরা পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণ করব।

তিনি আরও বলেন, যে ১৬টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানেই পুনর্বাসন কর্মসূচি নেওয়া হবে। তবে মূল টার্গেট থাকবে সিলেট ও সুনামগঞ্জ।


সর্বশেষ - রাজনীতি