1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে সরকারের নানা উদ্যোগ

বানিজ্য প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ১০ জুন, ২০২২

চলমান বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা এবং করোনা মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে বাজেটে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। এজন্য কোম্পানির করপোরেট কর হ্রাস, এক ব্যক্তির কোম্পানিতে কর ছাড়, স্টার্টআপ কোম্পানির কর হ্রাসসহ থাকছে নানা উদ্যোগ।

এছাড়া উদীয়মান শিল্পকে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি চলমান সুবিধার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর উত্থাপিত বাজেট পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতে করপোরেট কর সাধারণ গার্মেন্টের জন্য ১২ শতাংশ এবং সবুজ কারখানার জন্য ১০ শতাংশ। অথচ পশ্চাৎপদ শিল্প হিসাবে অ্যাক্সেসরিজ শিল্প বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও তাদের নিয়মিত হারে (৩০ শতাংশ) আয়কর দিতে হয়। পাট, হিমায়িত মাছ, প্লাস্টিক, চামড়া খাতে বৈষম্য আছে।

আগামী বাজেটে রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্যায়নকে উৎসাহ দিতে সব ধরনের রপ্তানিমুখী শিল্পের করপোরেট কর তৈরি পোশাক শিল্পের মতো ধার্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বাণিজ্য ঘাটতি নিুমুখী হবে। ফলে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের পার্থক্য হ্রাস পাবে।

এছাড়া বর্তমান সরকার আইসিটি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্টার্টআপ উদ্যোগকে বাজেটে বিশেষ প্রণোদনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল ছাড়া অন্য সব ধরনের রিপোর্টিংয়ের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।

পাশাপাশি স্টার্টআপ কোম্পানির লোকসান ৯ বছর পর্যন্ত সমন্বয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে ব্যয়সংক্রান্ত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার ও টার্নওভার কর দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ১০ শতাংশ করার প্রস্তাবও রয়েছে।

এছাড়া বাজেটে মোটরগাড়ি উৎপাদন শিল্পে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমান ফ্রিজ, এসি, টিভি, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, মোবাইল সংযোজন, লিফট সংযোজন শিল্পে এ সুবিধা দেওয়া আছে। আরও বলা হয়েছে, প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে সমাজের মূল ধারায় যুক্ত করতে হবে।

এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এজন্য চলমান বিধান সংশোধন করে প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের উভয় ক্ষেত্রে যদি কোনো প্রতিষ্ঠান তার মোট কর্মচারীর ১০ শতাংশ বা ২৫ জনের অধিক এই দুই ধরনের কর্মচারী নিয়োগ করে তাহলে সেই কোম্পানি সুবিধা পাবে। যেমন ওই কর্মচারীদের পরিশোধিত বেতনের ৭৫ শতাংশ বা প্রদেয় করের ৫ শতাংশ যেটি কম, তা নিয়োগকারীকে কর রেয়াত হিসেবে অনুমোদনের প্রয়োজনীয় বিধান সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দেশে বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানি উৎসাহিত ও চোরাচালন বন্ধে স্বর্ণ আমদানিতে বিদ্যমান অগ্রিম কর বিলোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে জুয়েলারি শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ঘটবে এবং সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, পোশাক খাতের অর্থ ধরে রাখতে টেক্সটাইল খাতের বর্তমান প্রণোদনা বহাল রাখা জরুরি।

বর্তমানে টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির বিদ্যমান করহার ১৫ শতাংশ সংক্রান্ত এস.আর.ও’র মেয়াদ আগামী ৩০ জুন শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি। শিল্পকারখানার উৎপাদন ব্যয় কমানোর জন্য ম্যানুফ্যাকচারের কাছে কাঁচামাল সরবরাহের ওপর উৎসে কর কর্তনের হার ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।

বিদ্যমান আইনে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট খাতে ব্যয় অনুমোদনের সুনির্দিষ্ট বিধান না থাকায় ওই খাতকে সংজ্ঞায়িত করে এ খাতের ব্যয় অনুমোদন যোগ্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া পারকুইজিট খাতে অনুমোদনযোগ্য ব্যয়সীমা ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে ১০ লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এছাড়া অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ইতোমধ্যেই ২০ লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে। বর্তমানে সাড়ে ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার আউটনোসিং পেশায় যুক্ত আছেন। সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থান ৩০ লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সেই সঙ্গে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হচ্ছে, যেখানে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

মৎস্য ও পশুপালন খাতেও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ব্যাপক উদ্যোগ চলমান আছে। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে উপজেলা পর্যায়ে ১০০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু হবে। এছাড়া আগামী অর্থবছরে ৮ লাখ ১০ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি ৫ লাখ ২০ হাজার মানুষকে বিভিন্ন ট্রেডে দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

আগামী অর্থবছর আরও দেশীয় শিল্পের উন্নয়নে রয়েছে নানা উদ্যোগ। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-নির্ধারিত তারিখের মধ্যে মূসক বা টার্নওভার কর দাখিলপত্র পেশ না করা ব্যর্থতা বা অনিয়মের ক্ষেত্রে জরিমানার পরিমাণ ১০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এছাড়া ভ্যাট ফাঁকি, ব্যর্থতা বা অনিয়মের ক্ষেত্রে আরোপিত জরিমানার পরিমাণ জড়িত রাজস্বের সমপরিমাণ থেকে কমিয়ে অর্ধেক করা হচ্ছে। এলপিজি সিলিন্ডারের ওপর স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে বর্তমানে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ আছে। সেটি আরও ১ বছরের জন্য বৃদ্ধি করা হবে। রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারের কম্প্রেসর উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে।

পলিপ্রোপাইলিন স্ট্যাপল ফাইবার স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি বলবৎ রাখার পাশাপাশি উপকরণ আমদানির ক্ষেত্রে আগাম কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এপিআই উৎপাদনের ক্ষেত্রে উৎপাদন পর্যায়ে সমুদয় মূল্য সংযোজন কর এবং উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানি ও স্থানীয়ভাবে ক্রয়ের ক্ষেত্রে আগাম করসহ মূসক ও সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি সুবিধা ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

দেশে ভারী শিল্প বিকাশে ২৫০০ সিসি মোটর কার ও মোটর ভেহিক্যালের উৎপাদনে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক সুবিধা ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত থাকবে। থ্রি হুইলার স্থানীয় উৎপাদনে মূল্য সংযোজন কর, আগাম কর ও সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি সুবিধা ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত থাকবে।

কৃত্রিম আঁশ এবং অন্যান্য আঁশের সংমিশ্রণে তৈরি সুতার (ইয়ার্ন) ভ্যাটের পরিমাণ ৬ টাকা থেকে কমিয়ে ৩ টাকা করা হচ্ছে। পাওয়ার টিলার উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি দেওয়া হবে। দেশীয় পোলট্রি শিল্পের খাদ্য তৈরির কাঁচামালের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে।


সর্বশেষ - রাজনীতি