1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

রবীন্দ্র চিন্তায় উঠে এসেছিলো ধর্মব্যবসার ভয়াবহতা

স্বদেশ রায় : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ৮ মে, ২০২৩

আজ যে সময়ে দিকে দিকে ধর্ম ব্যবসায়ীরা ধর্মের নামে রাষ্ট্র ক্ষমতার আধিপত্য থেকে সব আধিপত্য রক্ষায় ব্যস্ত– সে সময়ে যথানিয়মে আরেকটি ২৫শে বৈশাখ আমাদের জীবনে এসেছে। তবে রবীন্দ্রনাথ যে সভ্যতায় জন্মেছিলেন, ওই সভ্যতার গোটা-ভূমিতে তাকালে কোথাও মনে হয় না ২৫শে বৈশাখের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ নতুন করে আবার এই সভ্যতার সব আচরণের মানুষের কাছে ফিরে আসেন। এমনকি, কিছু আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া কতটুকু তিনি মানুষের হৃদয়ে ও বোধে ফিরে আসেন তা নিয়ে প্রশ্ন যদি উঁকি দেয়– তাকে খুব দূরে ঠেলে দেওয়া যায় না।

তবে এও সত্য, রবীন্দ্রনাথ শুধু জন্ম বা মৃত্যুদিনের ভেতরে আটকে থাকা একজন মানুষ নন, এমনকি কোনও বিশেষ সংঘের অনুসারীদের মধ্যেও আটকে থাকার নয়। রবীন্দ্রনাথ বিশ্বায়নের সন্তান। মানুষের দীর্ঘ সভ্যতার নির্যাস থেকে, ভারতীয় বিশাল সভ্যতার ভাণ্ডারের নির্যাস থেকে রবীন্দ্রনাথই প্রথম উনবিংশ শতাব্দীতে আবার নতুন করে উচ্চারণ করেছেন, আমি পৃথিবীর সন্তান। মানুষকে তিনি পৃথিবীর সন্তান হওয়ার জন্যে নিরন্তর চলতে বলেছেন। কখনও কোনও বিশেষ গণ্ডির মধ্যে, কোনও একটি বিশেষ মতাদর্শের মধ্যে মানুষের আটকে থাকাকে তিনি এক ধরনের মৃত্যু হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন।

কোন একটি বিশেষ মতাদর্শের মধ্যে যখন মানুষ আটকে থাকে তার অবস্থা কীরূপ হয় তা রবীন্দ্রনাথ তাঁর নিজের জীবনের একটি ঘটনা উল্লেখ করে বলেছেন, একদিন তিনি পদ্মার বুকে বোটে মোমবাতি জ্বালিয়ে বই পড়ছিলেন। তখন ওই মোমবাতির ক্ষীণ আলোতে বোটের ভেতরটার অন্ধকার খুব সামান্য পরিসরে দূর করেছিল। একপর্যায়ে মোমবাতিটি নিভিয়ে দিলে তিনি দেখতে পান, আকাশের চাঁদের আলো এসে বোটের ভেতরে ঢুকে ভেতরটা উজ্জ্বল করে তুলেছে। কোনও একটি ক্ষুদ্র পরিসরে নিজেকে আটকে রাখলে আসলে মানুষ যে চাঁদের বা সূর্যের আলো– যার সবকিছুকে আলোকিত করার ক্ষমতা আছে, বাস্তবে তাকেই আটকে রাখে। আর এই উজ্জ্বল আলো ঢোকার পথ বন্ধ করে দিয়ে ক্ষীণ আলোতে কতটুকুই বা পথ দেখা যায়?

মানুষ এই পৃথিবীতে জন্ম নেয় মূলত নিজেকে আলোকিত করার জন্যে, আলোর পথে চলার জন্যে– সেই পথ তো আর যাই হোক ক্ষীণ আলোতে দেখা যায় না।

কিন্তু রবীন্দ্রনাথের এই ১৬২তম জন্মদিনে তিনি যে সভ্যতায় জন্মেছিলেন ওই সভ্যতার ভূমি’র প্রতিটি ক্ষেত্রে তাকালে মনে হচ্ছে, সব খানে যেন চন্দ্র সূর্য দুইকে ঢেকে রাখার এক তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। ক্ষীণ আলোকে আলো হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার এক অসুস্থ প্রতিযোগিতায় রুগ্ন হয়ে পড়েছে এ ভূমি। আর রবীন্দ্রনাথের প্রকাশের অনুকরণে বলা যায়, বিষয়ীও যতটা উগ্রতার সঙ্গে নিজের জমির আল পাহারা দেয় না তার থেকেও এখন ধর্ম ব্যবসায়ীরা আরও কঠোরভাবে পাহারা দিচ্ছে নিজ নিজ ধর্মের আল। কিন্তু বিচার করলে দেখা যাবে ধর্মের নামে বা সাধারণ মানুষের কাছে ধর্ম হিসেবে উপস্থিত করে যে চিন্তাটির বা যে বিষয়টি’র আল তারা পাহারা দিচ্ছে- তা আসলে কোনও ধর্ম নয়, বাস্তবে ধর্ম থেকে তার অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে। তারা ওই ধর্মের নামে নিজের মাপে একটি ধর্ম বানিয়ে নিয়েছে। পৃথিবীর সভ্যতায় যে ঈশ্বর ও ধর্মের সৃষ্টি হয়েছে– সে ধর্ম বা ঈশ্বর কখনও সংকীর্ণ নয়। বাস্তবে তা সত্য ও আনন্দ থেকে উদ্ভূত। আর ধর্মকে তো অবশ্যই সত্য হতে হবে। আর পূর্ণ সত্য কি তার প্রকাশ করতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ অতি সহজভাবেই বলেছেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত এই জগৎ আমাদের নিকট সেই আনন্দরূপে, প্রেমরূপে ব্যক্ত না হয় , ততক্ষণ তাহা পূর্ণ সত্যরূপেই ব্যক্ত হইল না।” অথচ সভ্যতার দীর্ঘ পথ বেয়ে বিদ্বেষ, হিংসা থেকে মানুষকে আনন্দময় জগতে আনার জন্যে মানুষের যে ধর্ম তৈরি হয়েছিল, সেই ধর্ম এখন ধর্ম ব্যবসায়ীদের জিম্মায় উন্মাদের হাতে খোলা তরবারি হতে চলেছে। অতীতেও দেখা গেছে, মানুষের সভ্যতার ধর্মকে, তার জীবন ধর্মকে যখন ধর্ম ব্যবসায়ীরা তাদের নিজের মাপের তৈরি করে এমনি উন্মাদের খোলা তরবারি তৈরি করেছে – তার শেষ হয়েছে মহাদুর্যোগে। রবীন্দ্রনাথের কথা ধরেই বলা যায়, ওই সকল দুর্যোগই নিষ্কৃতি পেয়েছে নানা দুঃখ, আঘাত ও বৃহৎ শ্মশানের মধ্য দিয়ে।

বাস্তবে রবীন্দ্রনাথের চিন্তায় সেই সত্য স্পষ্ট হয়েছে, ধর্ম ব্যবসায়ীদের ধর্মের মধ্যে মানুষের কল্যাণ তো দূরে থাকুক, সভ্যতার ভেতর দিয়ে যে ধর্মের সৃষ্টি হয়েছিল– যে ধর্ম মানুষকে বাল্য ও কৈশোর ও তারুণ্যে শিক্ষা গ্রহণ করতে শেখায়। যে শিক্ষা মানুষকে গৃহস্থ ধর্ম থেকে রাজকার্যের মতো দৈনন্দিন কাজ ছাড়াও পৃথিবী ও মানুষ সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবার মতো কঠিন পথে চলতে শেখায়– ওই ধর্মের সঙ্গে ধর্ম ব্যবসায়ীদের ধর্মের কোনও মিল নেই। বরং তাদের ধর্মের সঙ্গে মিল আছে রাষ্ট্রক্ষমতা লোলুপদের; যেমন তার দলে মাথা গুনতিতে কত মানুষ আছে, কত সৈন্য আছে, কত অস্ত্র আছে– তেমনই ধর্ম ব্যবসায়ীরাও হিসাব করে তার দলে কত মানুষ আছে, কত মানুষ তার কথায় উন্মত্ত হবে, কত উপাসনালয় তার দখলে আছে এটাই। এখানে সংখ্যা বড়, শক্তি বড়, সত্য ও কল্যাণের কোনও স্থান নেই। ভবিষ্যৎ সভ্যতার বুকে রেখে যাওয়ার মতো কোনও সৃষ্টিও সেখানে নেই। বরং এদের কাজের ভেতর দিয়ে তৈরি হয় সভ্যতাকে ধ্বংস করার নানান ফাঁদ। সেখানে প্রতিদিন মানবাত্মার মৃত্যু ঘটে। অথচ ধর্ম বলতে রবীন্দ্রনাথ তাকেই বলছেন, “এই বিশ্বমানবের রাজভাণ্ডারে আমাদের জন্যে জ্ঞান ও ধর্ম প্রতিদিন পুঞ্জীভূত হইয়া উঠিতেছে। এই মানবাত্মার মধ্যে বিশ্বাত্মাকে প্রত্যক্ষ করিলে আমাদের পরিতৃপ্তি ঘনিষ্ঠ হয়।”

বাস্তবে রবীন্দ্রনাথ যে সভ্যতায় জন্ম গ্রহণ করেছিলেন ওই সভ্যতায় হাজার হাজার বছর আগে বিশ্বমানবের রাজভাণ্ডার জ্ঞান ও মানব ধর্ম দিয়ে পরিপূর্ণ করার আকাঙ্ক্ষা জন্মেছিল। ইতিহাসের নানান পথ বেয়ে তার অনেক কিছুই লুপ্ত হয়ে যায়। যাকে রবীন্দ্রনাথ তাঁর সারা জীবনের সাধনা দিয়ে জাগিয়ে তুলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর জীবদ্দশায়ও তিনি যে দুর্ভাগ্যকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন, রাজনীতিক ও ধর্ম ব্যবসায়ীর একই চরিত্র দেখে তিনি নিজেকে কেবল নিজের জগতেই অবিচল রেখেছিলেন। এখনও সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে তাঁর সেই সভ্যতার ভূমি। এবং ধর্ম ব্যবসায়ীদের যে ‘নাঙ্গা’ তরবারি একবার নয় দুইবার রক্তাক্ত করেছে তার সভ্যতার জন্মভূমি সেই তরবারি আবার নানান জোশে জড়ো হচ্ছে ধর্ম ব্যবসায়ীদের হাতে। কোন ভয়াবহ শ্মশানে এর পরিসমাপ্তি ঘটবে তা কেউ জানে না, তবে রবীন্দ্রনাথকে মেনেই বলতে হবে, ভয়াবহ শ্মশানেই এর নিষ্কৃতি।

লেখক : স্বদেশ রায় – সাংবাদিকতায় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত।


সর্বশেষ - রাজনীতি

নির্বাচিত

পোস্টারে জাহাঙ্গীরের নাম-ছবির ব্যাখ্যা চেয়ে জায়েদা খাতুনকে শোকজ

বঙ্গবন্ধু পরিবার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মিশরের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ‘শান্তি’ বৈঠক

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে পতিত জমিতে চাষাবাদ শুরু করেছে সরকারি দপ্তরগুলো 

মেট্রোরেল : উত্তরা-মতিঝিল চলাচল সূচনার পরেই হেমায়েতপুর-ভাটারার কাজের উদ্বোধন

ভারতে সমাধিস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনবে সরকার

‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ হাস্যকর ও লজ্জাজনক

ফাইল ফটো

সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন

কার্নিভাল ক্রুজ: দ্বীপ জেলা ভোলায় নতুন স্বপ্নের হাতছানি

নারীদের মজুরি বৈষম্য ও ক্ষমতায়ন