1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

হেফাজত তাণ্ডবের দশকপূর্তি

ইবার্তা সম্পাদকীয় : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ৫ মে, ২০২৩

আজ ৫ মে পূর্ণ হলো হেফাজত ইসলামের তাণ্ডবের ১০ বছর।

২০১৩ সালের ৫ মে (রবিবার) ঢাকা ঘেরাও এবং মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচিতে মতিঝিল-পল্টনসহ আশপাশ এলাকায় সরকারি প্রতিষ্ঠান, যানবাহন, ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে এক ভীতিকর অবস্থা তৈরি করা হয়। হেফাজতে ইসলামের ওই তাণ্ডবে কেটে ফেলা হয় সড়কের দুপাশের শত শত গাছ। হামলা থেকে রক্ষা পায়নি ফুটপাতের দোকানিরাও।

রাজধানীবাসী সেদিন হেফাজতের চরম বর্বরতা ও নৃশংসতার সাক্ষী হয়েছিল।

পরে গভীর রাতে পুলিশ-র‌্যাব ও বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ কমান্ডো অভিযানের মুখে মতিঝিল ছাড়তে বাধ্য হয় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা।

২০১৩ সালে হেফাজতের তাণ্ডবের পরপরই সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, তাদের আড়াই হাজার কর্মী ও সমর্থক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতও একই ধরনের কথা বলে আসছে।

মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ এর দাবি, ৬১ জন নিহত হয়। পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে হেফাজত ও অধিকারের দেওয়া তথ্য ভুল।

পুলিশ পরে জানায়, হেফাজতের সঙ্গে সংঘর্ষে রাজধানীতে এক পুলিশ সদস্যসহ ১৩ জন নিহত হয়েছেন।

যা ঘটেছিল সেই দিন

৫ মে ঢাকা অবরোধের নামে মতিঝিল এলাকায় প্রায় ৮ ঘণ্টা তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। এতে মতিঝিল এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। হেফাজতের কর্মীরা দোকানপাট, মার্কেট, বাণিজ্যিক ভবন, অফিস, গাড়ি সব কিছুতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

ওই দিন ভোর পাঁচটা ফজরের নামাযের পরই ঢাকার প্রবেশপথগুলো দখলে নিয়েছিলেন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা।

ঢাকার উত্তরে গাবতলী বাস টার্মিনাল, টঙ্গী এবং দক্ষিণে সায়দাবাদের কাছে কাঁচপুর ব্রিজসহ রাজধানীকে ঘিরে ছয়টি প্রবেশমুখেই অবরোধ তৈরি করেছিলেন হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে সারাদেশ থেকে আসা

বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসার হাজার হাজার ছাত্র-শিক্ষক। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অবরোধকারীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়াতে থাকল, যখন এর নেতৃত্ব ঢাকার ভেতরে প্রবেশ করে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল।

পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ

হেফাজত যখন তাণ্ডব চালাচ্ছিল তখন পুলিশ বাধা দিতে গেলে তাদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। মতিঝিল এলাকা পরিণত যুদ্ধক্ষেত্রে। এর আগে হেফাজতে ইসলামের নেতারা শাপলা চত্বরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর অনুমতির জন্য পুলিশের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন।

ওই দিন সকালে দফায় দফায় তাদের অলোচনা চলে। বেলা সাড়ে ১১টায় অনুমতি মেলার আগেই কয়েকটি মিছিল ঢুকে পড়ে এবং সংঘর্ষ শুরু হয় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এবং পল্টন এলাকায়।

ওই সময় দায়িত্বরত এক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, শেষ পর্যন্ত পুলিশ অনুমতি দিয়েছিল শাপলা চত্বরে এসে শুধু মোনাজাত করেই কর্মসূচি শেষ করার শর্তে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এবং পল্টন এলাকায় সহিংসতা চলেছিল সন্ধ্যার পরও।

রাতে অভিযান

সমাবেশের জন্য বেঁধে দেয়া নির্ধারিত সময় বিকেল ৫টার পরও শাপলা চত্বরে থেকে যাওয়ার ঘোষণা দেয় হেফাজতের কর্মীরা। এরপর রাত আড়াইটার দিকে বিজিবি, ব়্যাব ও পুলিশের যৌথ বাহিনী মতিঝিলকে ঘিরে অভিযান শুরু করলে ১০ মিনিটের মধ্যেই হেফাজতের কর্মীরা পিছু হটে।

ওই দিন রাত পৌনে তিনটায় শুরু হয় মূল অভিযান। এর আগে সন্ধ্যার দিকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হেফাজতে ইসলামীর কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দেন। মূলত তার এই বিবৃতির পর থেকে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে হেফাজতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তিন দিক থেকে ফাঁকা গুলি আর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করতে থাকে। থেমে থেমে সাউন্ড গ্রেনেডও ব্যবহার করা হয়। শত শত রাউন্ড গুলি এবং সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ এবং অন্ধকার এলাকায় এসবের আলোর ঝলকানি মুহূর্তেই ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি করেছিল।

পুলিশ পুরো এলাকার দখল নেওয়ার পর বিভিন্ন ভবনে আশ্রয় নেওয়াদের বের করে এনে ওই এলাকা ছেড়ে যেতে সহায়তা করে।

হামলার শিকার সংবাদমাধ্যম

হেফাজতের হামলা থেকে মুক্তি পায়নি গণমাধ্যমের কর্মীরাও৷ এছাড়া পল্টন এলাকায় অবস্থিত ব়্যাংগস ভবনের ‘সকালের খবর’ পত্রিকা অফিসে আগুন দেয়া হয়।

ওই দিন সংবাদ সংগ্রহ করার সময় রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় হামলার শিকার হয়েছেন একুশে টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার নাদিরা শারমিন। পুরুষদের মধ্যে নারী রিপোর্টার কেন? -এমন প্রশ্ন তুলে হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা নাদিরাকে পেটাতে পেটাতে দিগন্ত টিভির কার্যালয়ের সামনে নিয়ে যায়। পরে মারাত্মক আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নাদিরা ছাড়াও হেফাজত কর্মীদের হামলায় আরও ৭ সংবাদকর্মী আহত হন।


সর্বশেষ - রাজনীতি