গুম নয়, স্বেচ্ছায় নিখোঁজ হওয়া খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার যুবক মো. রফিক হোসেন পলকে (৩২) এক বছর তিন মাস পর উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজার শাহীন বিচ এলাকা থেকে তাকে উদ্ধারের পর শনিবার খুলনায় নিয়ে আসা হয়। এরপর দুপুরে র্যাব-৬ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মোস্তাক আহমেদ জানান, গত বছরের ৭ জানুয়ারি নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার ১৪ নম্বর রোডের ৩৩ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে মো. রফিক হোসেন পল স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে চলে যান এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরিবারের পক্ষ থেকে নিখোঁজ হিসেবে জিডি করা হয় এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারস্থ হন তারা। পরে খুঁজে না পাওয়ায় তাকে গুম বা অপহরণ করে মেরে ফেলা হয়েছে বলে বিভিন্ন রকম অপপ্রচার চালানো হয়।
সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে গুম করার বিভিন্ন অপপ্রচার প্রতিরোধে এবং বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার লক্ষ্যে নিখোঁজ বিভিন্ন ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ ও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করে র্যাব-৬ এর একটি দল।
এরই অংশ হিসেবে দলটি গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নিখোঁজ ব্যক্তির অবস্থান নিশ্চিত করার চেষ্টা করে। তারা জানতে পারেন, নিখোঁজ রফিক স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রেখেছেন। দলটি শুক্রবার বিকেলে শাহিন বিচ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে রফিককে উদ্ধার করে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, রফিক করোনা পূর্ববর্তী সময়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। করোনার কারণে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে চাকরি হারানোয় এবং পারিবারিক চাপের কারণে হতাশা থেকে মুক্তির জন্য তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেন। আত্মগোপনে থাকাকালে তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখেন। তিনি প্রথম সাত মাস ঢাকায় মাস্ক বিক্রি করেন। ঢাকা সদরঘাটে তিন মাস হকার হিসেবে খেলনা বিক্রি, মুন্সীগঞ্জে নয়দিন হকারি, নারায়ণগঞ্জে পাঁচ মাস টোকাই হিসেবে পুরাতন বোতল ও লোহা কুড়িয়ে বিক্রি করেন। সর্বশেষ কক্সবাজার শাহীন বিচ এলাকার ইউনুসের চায়ের টং দোকানে মাসিক নয় হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন।
র্যাবের অধিনায়ক বলেন, একজন ব্যক্তি নিখোঁজ হলেই যে তাকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে, এই ধারণাটি সঠিক নয়।