1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

‘শান্তিওয়ালা’ ড. ইউনূসের বিদেশি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন 

হাসান শান্তনু : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৩

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চড়া সুদের গ্রামীণ ব্যাংক থেকে প্রথম ঋণ নেওয়া চট্টগ্রামের হাটহাজারীর জোবরা গ্রামের সেই নারী দোতলা বাড়ির মালিক। নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার আগে ড. ইউনূস ও তাঁর সহযোগীরা এমন প্রচারণা চালান দেশ-বিদেশে। যে বাড়িটিতে ওই নারীকে দাঁড় করিয়ে ফটোসেশন হয়, সেটা ছিলো এক প্রবাসীর। সত্য হচ্ছে, প্রথম ঋণ নেওয়া ওই নারীর বাড়িটা কবি জসীম উদ্দীনের ‘আসমানিদের বাড়ির’ মতো। ভয়ংকর এ প্রতারণার বিষয়টি প্রথম জানাজানি হয় বিএনপির শীর্ষপর্যায়ের এক নেতার মাধ্যমে। তার দেওয়া তথ্যে ২০০৭ সালে দৈনিক আমার দেশ (এখন প্রকাশনা বন্ধ) এ বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বিএনপিরও তখন অবস্থান ছিলো- ‘ইউনূস ঠেকাও’। নোবেল পুরস্কার পাওয়ার আগে ভারত থেকে ড. ইউনূস একাধিক পত্রিকা প্রকাশ করান তাঁর গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের ব্যবসার গালগল্প ছাপাতে। কলকাতা থেকে প্রকাশিত একটা সাপ্তাহিক পত্রিকার কথিত উপদেষ্টাও ছিলেন তিনি।

তাঁর সঙ্গে ওই পত্রিকার কথিত উপদেষ্টাবাজিতে প্রয়াত ফজলে হাসান আবেদও ছিলেন। সুদের ব্যবসার তত্ত্ব তুলে ধরতে ড. ইউনূস ঢাকার সংবাদমাধ্যমের বদলে কলকাতার পত্রিকাকে কেন বেছে নেন, এটা শুরু থেকেই পরিষ্কার ছিলো। সুদের ব্যবসার নয়া তত্ত্ব প্রচারের জন্য মহাজন ইউনূস দখলদার জায়নবাদী বা ইহুদবাদীদের কাছ থেকে বিশাল অংকের টাকা-পয়সা আনেন। কারণ শুধু এশিয়া নয়, ইউরোপ-আমেরিকার পত্রিকা, টিভি চ্যানেলেও টাকা-পয়সা পয়সা খরচ করে প্রচারণা চালান তিনি নোবেল পুরস্কারের আশায়। অধ্যাপক আনু মুহম্মদের এক গবেষণায়ও উঠে এসেছে সুদখোর ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণের ফাঁদে জড়িয়ে গ্রামের অসংখ্য পরিবারের সর্বস্ব হারিয়ে নগর, শহরে পাড়ি জমানোর নির্মম বাস্তবতার কথা।

বদরুদ্দীন উমরেরও এ বিষয়ে একই বক্তব্য। ঋণের ফাঁদে জড়িয়ে সর্বস্ব হারানো পরিবারের করুণ দীর্ঘশ্বাস, আত্মহত্যাকারীদের অভিশাপগ্রস্ত গ্রামীণ ব্যাংক। আওয়ামী লীগের সরকার সুদের কারবারি ইউনূস প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কিছু আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে। শুধু আওয়ামী বিদ্বেষের কারণে বিষয়টির সমালোচনার কোনো সুযোগ নেই। ইউনূস আইনের ঊর্ধ্বের কেউ নন। অন্যের লুটপাটের নজির দেখিয়ে জোচ্চোর ইউনূসকে ‘ধোয়া তুলসিপাতা’ বলার কোনো যুক্তি নেই। তাঁর প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপকে অসমর্থনের সুযোগ নেই। ড. ইউনূস সরকারকে উল্টো চাপে রাখতে আর্ন্তজাতিক নানা কুকাণ্ড ধারাবাহিকভাবে করে আসছেন।

সবশেষ তিনি চল্লিশ বিশ্বনেতার তাঁর পক্ষে বিবৃৃতি সংগ্রহ করে প্রায় কোটি টাকা খরচ করে ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপিয়েছেন। এতো বড়ো ‘শান্তিওয়ালাকে’ বিদেশি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপাতে হয় কেন? ইউনূস সাম্রাজ্যবাদীদের নীচুশ্রেণির দালাল। তাঁর পক্ষে দেশ-বিদেশের আধিপত্যবাদীদের দালালরা কথা বলবেন, এটা সহজসরল সত্য। আওয়ামী লীগের সরকার তাঁর প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে সাহসিকতা দেখিয়েছে। আরেকটা বিষয়, ষাট, সত্তর, আশির দশকের দিকে যুক্তরাষ্ট্র, এর মিত্ররা মিলে তৃতীয়বিশ্বের দেশগুলোতে সেনাবাহিনীকে সরাসরি ক্ষমতায় বসাতো। পরে তাদের কৌশল বদলে যায়। সেনাসমর্থিত সরকারকে ক্ষমতায় বসায়। ‘লিভ টুগেদারে’ কাজ হওয়ায় মন্ত্র পড়ে বিয়ের ঝুঁকি না নেওয়ার মতো।

আমাদের দেশের এক-এগারোর ডক্টরেট ডিগ্রিওয়ালা বা তিন উদ্দিনের (মঈন, ফখরুদ্দিন, ইয়াজউদ্দিন) সরকারটা তেমনই ছিলো। ওই সরকারের সময় দুই নেত্রীকে (শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া) রাজনীতি থেকে সরানোর আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন ইউনূস। রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার খায়েশ নিয়ে রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামেন তিনি। একপর্যায়ে রাজনীতির মাঠকে ‘তালাকের’ ঘোষণা দিয়ে খোলা চিঠি লেখেন ইউনূস। অনেকে ধরে নেন, এটা তাঁর ‘আত্মোপলব্ধি’। সবটাই ভুল। ইউনূসকে যারা মাঠে নামান, তারাই তাঁকে একপর্যায়ে তল্পিতল্পা গোটাতে বলেন। কারণ ততোদিনে বদলে যায় আর্ন্তজাতিক প্রেক্ষাপট। ‘অনন্তকালের জন্য ক্ষমতায়’ বসা উদ্দিনদের সরকারও ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে দেশে সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়। ওই বছরের নভেম্বরে ছিলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকারের কাছ থেকে সমর্থনের জন্য দেনদরবারও করেন মঈন উ, ফখরুদ্দিন, ইউনূসরা। সমর্থন পাননি। আমাদের দেশটা সভ্য হলে এতোদিনে এক-এগারোর ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ইউনূস ও তাঁর সহযোগীদের বিচার হতো। ইউনূসের ঋণের ফাঁদে জড়িয়ে অনেকের আত্মহত্যার জন্যও তাঁকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতো।

লেখক : হাসান শান্তনু – সাংবাদিক


সর্বশেষ - রাজনীতি