1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ঘুরে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রামের জাহাজ ভাঙা শিল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ৬ মার্চ, ২০২২

করোনার ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকার জাহাজ ভাঙা শিল্প। ব্যস্ততা বেড়েছে নির্মাণশিল্পে। দেশের স্টিল রি-রোলিং মিলগুলোতেও বেড়েছে উৎপাদন। রডের চাহিদা বাড়ায় জাহাজ ভেঙে পাওয়া স্ক্র্যাপের (কাঁচামাল) চাহিদাও বেড়েছে কয়েকগুণ। গত এক বছরে চট্টগ্রাম বন্দরে ২৬২টি পুরনো জাহাজ আমদানি করা হয়েছে। এসব জাহাজের আমদানি খরচ ১২ হাজার ২০৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।

সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট থেকে বারো আউলিয়া পর্যন্ত উপকূলের ২০ কিলোমিটারজুড়ে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড। জাহাজ ভাঙার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে ৫৮টি ইয়ার্ড। এই কাজে প্রায় ৫০ হাজার লোকজন সরাসরি জড়িত।
পরোক্ষভাবে আরও প্রায় পাঁচ লাখ লোকজন এই শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিটি জাহাজ ভাঙার জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়। কোন জাহাজ ভাঙতে কত লোক লাগবে, জাহাজের আকারের ওপর নির্ভর করে নিয়োগ দেওয়া হয়। ছোট জাহাজ ভাঙতে ৩০০-৪০০ শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। বড় জাহাজ ভাঙতে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়।

একটি জাহাজ ভেঙে শুধু স্ক্র্যাপ (কাঁচামাল) নয়, নানা ধরনের জিনিসপত্র পাওয়া যায়। পুরনো জাহাজ ভাঙলে খাট, কিচেন, সিংক, বেসিন, বাথটাব এমনকি ফুলদানিও পাওয়া যায়। এসব জিনিসের কিছু রপ্তানি হয়। আবার কিছু স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়। ভাঙা জাহাজের পুরনো জিনিসপত্র নিয়ে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি এলাকায় গড়ে উঠেছে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ভাটিয়ারি ফৌজদারহাট এলাকায় রাস্তার পাশে ভাঙা জাহাজের জিনিসপত্র কিনতে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ে।
এসব প্রতিষ্ঠানে বছরে কয়েক কোটি টাকার জিনিস বিক্রি হয়। জাহাজ ভাঙার পর শুধু ব্যবহার উপযোগী জিনিসপত্র নয়, বিপজ্জনক পদার্থও পাওয়া যায়। এসবের মধ্যে আছে অ্যাসবেসটস, ভারী ধাতু, তেল, জাহাজের তলা ও ব্যালাস্ট ওয়াটার, পলিসাইক্লিক অ্যারোমাটি হাইড্রোকার্বন, পলিক্লোরিনেটেড বাইফিনাইল, পোড়া তেল ও অর্গানোটিনসহ বেশ কিছু বিপজ্জনক পদার্থ। এসব পদার্থের কিছু নিয়ম মেনে ডাম্পিং করা হয়।

পুরনো জাহাজ আমদানিকারকরা জানান, শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডেই বিপজ্জনক পদার্থ বিশেষ প্রক্রিয়ায় ডাম্পিং করা হয়। ভবিষ্যতে আধুনিকভাবে সেন্ট্রাল ট্রিটমেন্ট স্টোরেজ ডাম্পিং ফ্যাসিলিটি অনুসরণ করে বর্জ্য অপসারণ করা হবে। এজন্য কাজ চলছে।
জানা যায়, সারাবিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৮০০ জাহাজ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ২৫ বছর পার হলেই জাহাজগুলোকে বাতিল ঘোষণা করা হয়। এ ধরনের জাহাজ চালানো বিপজ্জনক।

সেসব জাহাজই বিক্রি করা হয় বিভিন্ন দেশের আমদানিকারকের কাছে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে পুরনো জাহাজ কিনে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শিপইয়ার্ডে ভাঙা হয়। আমদানিতে প্রতি এক হাজার মেট্রিক টন জাহাজের দাম পড়ে চার কোটি টাকা। ১০ হাজার টন জাহাজের আমদানি মূল্য ৪০-৪২ কোটি টাকা।

২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে ২৬২টি পুরনো জাহাজ আমদানি করা হয়। এসব জাহাজের ওজন ২৭ লাখ ১৪ হাজার ২৫২ মেট্রিক টন। জাহাজগুলোর আমদানি খরচ ১২ হাজার ২০৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। জাহাজ আমদানি খাতে ৪০৭ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস গত বছর জাহাজ আমদানি খাতে ৪০৭ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে।

আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, এসব জাহাজ থেকে সমপরিমাণ স্ক্র্যাপ (কাঁচামাল) পাওয়া যাবে। এরই মধ্যে অনেকগুলো ভাঙা শেষ হয়েছে। বাকিগুলো ভাঙার প্রক্রিয়ায় আছে। গড়ে বছরে আড়াই শতাধিক জাহাজ আমদানি হয়। সীতাকুণ্ড উপকুলজুড়ে বন্ধ ও সচল মিলিয়ে ১৬০টি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড আছে। এর মধ্যে সচল আছে ৫৮টি। বাকিগুলো নানা কারণে বন্ধ। ভাঙা জাহাজের পুরনো জিনিসপত্র নিয়ে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি এলাকায় গড়ে উঠেছে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তারা আরও জানান, শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড থেকে প্রতি বছর ৩০-৩৫ লাখ টন স্ক্র্যাপ পাওয়া যায়। ৭০ শতাংশের বেশি হচ্ছে ইস্পাত শিল্প; বিশেষ করে স্টিল রি-রোলিং মিলে সরবরাহ হচ্ছে এসব স্ক্র্যাপ। ভাঙা জাহাজের বড় ক্রেতা চট্টগ্রামসহ দেশের ১৩০টির বেশি ছোট-বড় স্টিল রি-রোলিং মিল। করোনার ধাক্কা সামলে এখন জাহাজ ভাঙা শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে।


সর্বশেষ - রাজনীতি