স্বপ্ন যদি আকাশ কুসুম হয় তাহলে তার বাস্তবায়নের চেষ্টাও হয় বৃথা ও অবান্তর। বাঙালি স্বপ্ন দেখেছিল ব্রিটিশ বাংলা ছেড়ে চলে গেলে অখন্ড বাংলা স্বাধীন হবে। সেই অবাস্তব স্বপ্নের হাত ধরেই সূর্য সেন , ক্ষুদিরাম প্রীতিলতা প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন। তাদের জীবন বিসর্জন বৃথা যায়নি। কিন্তু স্বপ্ন সফল হয়নি। নেতাজীকে কখনোই পূর্ব পশিচম উত্তর দক্ষিণের খোট্টারা উঠতে দেয়নি। চলার পথে কাঁটা বিছিযে দিয়েছে।কারন, তখন কথা ছিল , “ বাঙালি যা আজ ভাবে, সারা ভারত তা ভাবে পরের দিন।”কাজেই সবাই ভেবেছে , বাঙালি শাখামৃগ হয়ে একবার যদি বেয়ে উপরে উঠতে পারে তাহলে আর রক্ষে নেই। একটা ফলও অন্য কারও ভাগ্যে জুটবেনা।অমূলক আতঙ্ক অহেতুক আশঙ্কা। বাঙালির এক হওয়ার সুযোগটা কোথায়?দেশবন্ধু সঠিক কথাটাই বলেছিলেন , হিন্দু মুসলমান এক হয়ে যাবে, সব ভেদাভেদ মুছে যাবে, হাজার বছরের সব ক্ষৎ শুকিয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, তা আমি ভাবিনা”হিন্দু মুসলমানের ঐক্য হতে পারে , তবে তা হতেহবে পলিটিকাল কনফেডারেশন এর মত।” সেই পুরাতন কথামৃত।“তুমি যার উপাসনা কর আমি তার এবাদত করিনা।তুমি যে ধর্ম পালন কর , আমি সে ধর্ম পালন করিনা।তুমি তোমার ধর্ম পালন কর। আমি আমার ধর্ম পালন করি, চলো একসাথে বসবাস করি।”এটা তো ইসলামের নবীর কথা!এরই সম্পূরক অমৃতবানী হ’ল, “তুমি যা ভাবো, আমি তা হয়ত ভাবিনা, তুমি যা বিশ্বাস কর , আমি তাতে হয়ত বিশ্বাস রাখিনা।তোমার মতামত হয়ত আমার মতের সাথে মিশ খাবেনা। কিন্তু তোমার মত প্রকাশের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাথতে দরকার হলে আমি প্রাণ দেবো।”একথা বললেন ফরাসী বিপ্লবের পিতৃতূল্য দার্শনিক ভলতেয়ার। সেই গুরুবাক্য নিয়েই তো রচিত হয়েছে,রাজনীতির সহ অবস্থানের শ্রেষ্ঠ মন্ত্র। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার”।এসবই অমিয়বানী।বাস্তবে যা কোনদিনই খাপ খায়নি।এর পিছনে রয়েছে ইতিহাস আর ইতিহাসের কিছু নির্মমতা এবং কদর্য নিষ্ঠুরতা।
হিন্দু-মুসলমান যে একই বৃন্তে দুটি ফুল সে কথা বলেছিলেন , একজন মুসলিম দার্শনিক, নাম তার ইরফান হাবিব।বই এর নাম- “তিমুর ইন পলিটিকাল ট্রাডিশন এন্ড হিস্ট্রিও বাইওগ্রাফি অফ মোঘল ইন্ডিয়া”।কথাটা তার মনগড়া মোটেও না।শাব্দিক অর্থে, হিন্দ মানে ভারতবর্ষ। আর হিন্দু মানে ভারতবাসী। আর ভারতবাসী মানে জাতিধর্ম নির্বিশেষে ভারতের আপামর জনগন।হিন্দু ধর্ম বলেও কিছু ছিলনা। বেদ উপনিষদের অনুষঙ্গ যে ধর্মমত, তার নামতো বৈদিক ধর্ম।বৈদিক ধর্মের মূল কথা সেই জাতিভেদ। মানবজাতির চারটি শাখা- ১, ব্রাহ্মন ২. ক্ষত্রিয় ৩. বৈশ্য ৪. শূদ্র।বাহ্মন মন্ত্র দেবে মন্ত্র পাঠ করবে, পূজাপাঠে থাকবে তাদের একচেটিয়া অধিকার। তারাই হবে রাজগুরু । রাজা উঠবে বসবে তাদের কথায়। ক্ষত্রিয় অস্ত্র ধারণ করবে। অস্ত্র চালনা করবে । দেশজয করবে। দেশ শাসন করবে।বৈশ্য বানিজ্য করবে। রসদ জোগাবে। শূদ্র উৎপাদন করবে। অর্থণীতিকে সচল রাখবে।প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে হুকুমে নির্দেশে পেটে পাথর বেঁধে প্রভুর সেবা করবে।অস্ত্র শিক্ষা করে অর্জুন হতে চাইলে একালব্যের বৃদ্ধাঙ্গুলি কাটা পড়বে।দেব দেবী সূর্য পাহাড় পর্বত পূজা আর ভূতপ্রেতের অর্চনা সারা বিশ্বের প্রাচীন রীতি।শুধু ভারতবর্ষের না।পেগান ধর্ম রোমের যেমন আরবেরও তেমনি। ভারতবর্ষের ঘটনাও তাই।ইসলামের লেবাজ পরে হার্মাদ নরপশুরা ভারতবর্ষে এসে হিন্দু রক্তে ঝিলাম বিপাশা গঙ্গা যমুনার স্রোতের রঙকে লাল করে দিলো ।তৈমুর লঙ ঢুকলো পাঞ্জাবের হরিয়াণা দিয়ে। তার সৈন্যরা প্রত্যেকে ৫০/১০০ জন করে হিন্দু খতম করলো।দিল্লী দখল করার আগে লক্ষাধিক হিন্দুবন্দীকে জবাই করলো।পেগান তথা মূর্তী পূজারী নারী পুরুষ সম্ব্রম বাঁচাতে গাযে আগুন ধরিয়ে আত্মহননে প্রবৃত্ত হ’লো।সব ধর্মের মানুষ দিল্লীর মসজিদে আশ্রয় নিলো । কিন্তু তাদের প্রাণ রক্ষা হ’ল না।এ ইতিহাস তো তৈমুর লঙ এর আত্মজীবনী ,“তাজকে তিমুরি”গ্রন্থেই লিপিবদ্ধ রয়েছে।তাতেই প্যাগান হিন্দুদের “হিন্দুয়ানে গবার” বলা হয়েছে।ঘনবসতিপূর্ণ দিল্লী নগরীর প্রকাশ্য রাজপথে “কাৎলে আওয়াম” ঘটিয়ে মাত্র ৬ ঘন্টায় যে ৩০,০০০হাজার ভারতীয়কে কচুকাটা করলো হানাদাররা তারা সবাই কী রামু নাসির নগর বা রংপুরের হিন্দু বৌদ্ধ ছিল?(সূত্র:তারিখে হিন্দি-রুস্তম আলী, বয়ানে ওকাই,- dআব্দুল করিম)।
মুসলিম হ’ল আরবী শব্দ। ‘মু’ মানে অনুসরণ।যারা ইসলাম অনুসরণ করে তারাই মুসলমান। আর হিন্দু মানে ভারতবর্ষের মানুষ হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খৃষ্টান সবাই।ইসলামের ধ্বজাধারী পাকিস্তানী হার্মাদরাও একাত্তরে বাঙালি জবাই করে বললো আমরা হিন্দু মেরেছি। তারা সেই হানাদার তৈমুর লঙ ও নাদির শাহ এবং তাদের হিংস্র সেপাইদেরই জারজ সন্তান। বাংলা দখল করে ঘোড় সওয়ার বখতিয়ার খিলজি যে বংশধারা সৃজন করে গেছে তারাই এখনও রামু ,নাসির নগর গোবিন্দগঞ্জ ও রংপুরে হিন্দু নামের নিরীহ অসহায় ভিন্ন ধর্মালম্বীদের হত্যা করে চলেছে। তাদের প্রেরণা যোগাচ্ছে এ সময়ের সেরা কবি আল মাহমুদের সাদা ঘোড়ার মহাকাব্যিক ব্যঞ্জনা।যে কবি একদা লিখেছিলেন,“পরম স্বস্তির মন্ত্রে গেয়ে ওঠো শ্রেণীর উচ্ছেদ”আর বলেছিলেন ,“এমন স্বস্তির বাক্য সাহসিনী করো উচ্চারণ , যেন না ঢুকতে পারে লোকধর্মে আর ভেদাভেদ”; তিনিই জামাতের কাছে কলম আর মাথা বিক্রি করে দিয়ে কাড়ি কাড়ি টাকা আর ভুরি ভুরি সনদ, এবং পদ-পদকের বিনিময়ে লিখলেন , “মাঝে মাঝে হৃদয় যুদ্ধের জন্য হাহাকার করে ওঠে / মনে হয় রক্তই সমাধান , বারুদই অন্তিম তৃপ্তি/ আমি তখন স্বপ্নের ভেতর জেহাদ জেহাদ বলে জেগে উঠি “।তার সেই কাব্যিক প্রেরণায় অগনন তরুণ যুবক ক্ষৌরকাজ ছেড়ে দেয় এবং চাপাতি নিয়ে ‘শ্রেণী উচ্ছেদের’ মন্ত্রে উদ্দীপ্ত মুক্তমনা লেখকদের তাড়া করে ফেরে।কেউবা বিমান নিয়ে গণভবন উড়িয়ে দেয়ার পায়তারা করে, যেখানে রাতের তৃতীয় প্রহরে স্বজন হারানো এক রাষ্ট্রনায়ক জায়নামাজে অশ্রু ঝরায় ইনসাফের কামনায় ।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে, ইসলাম পালন মানে তো কেবল নামাজ রোজা হজ্ব জাকাত না।সেটাতো হ’ল সামাজিক ইসলাম। সেই ইসলাম হজরত শাহ জালালের মত ওলিরা হাতে তজবীহ নিয়ে জায়নামাজে চেপে বয়ে এনেছেন এই বাংলায়।কারও গায়ে টোকাটিও দেননি।কিন্তু তার পাশাপাশি বা আগে পিছে নাদিরশাহ, তৈমূর লং এর কালো-হাতি ও ইখতিয়ারউদ্দীন মোহাম্মদ বখতিয়ার উদ্দীন খিলজির সাদা ঘোড়ায় চেপে হিন্দবাসী এবং বঙ্গবাসীর কল্লা নামিয়ে হল্লা করতে করতে তরবারির মাথায় চেপে এসেছে যে রাজনৈতিক ইসলাম তার চাহিদা তো হচ্ছে “শরিয়া” পালন । আজকের লড়াইতো সে জায়গায় এসে ঝুলে পড়েছে।শরিয়ার মর্মমূলে সবচেয়ে বড় যে কাটা বিদ্ধ হয়ে আছে তা হ’ল পুরুষতন্ত্রের দুষমন নারীবাদ। শরীয়া কায়েম করতে নারীর ক্ষমতায়নের কথা মন থেকে মুছে ফেলতে হবে। এটাই প্রথম কথা। এটাই শেষ কথা। যুগান্তরের ঘূর্ণীহাওয়া যত জোরেই বয়ে যাক সে কথার কোন নড়ন চড়ন নেই।মানুষ মঙ্গলে গেলেও তার কোন ব্যত্যয় হবেনা। অন্যথায় নামাজের শেজদায় থাকতেই কল্লা নামিয়ে দেয়া হবে।
তষ্কর-বলিষ্ঠ এজিদের জল্লাদ প্রিয় নবীর প্রাণপ্রিয় নাতির শিরোচ্ছেদ করেছিল সেভাবেই।নবীজীর জামাতা মানে বিবি ফাতেমার স্বামী হযরত আলী (রা:))খলিফা হয়েছিলেন। তাতে নারী ফাতেমারই ক্ষমতায়ন ঘটেছিল বলে মনে করা হয়।। সেকারন ,খলিফা আলী আতোতায়ীর হাতে নিহত হলেন।ক্ষমতা দখল করতে উদ্যোগী হলেন দু্ধর্ষ যোদ্ধা মোয়াবিয়া। খলিফা আলীর জেষ্ঠ্য পুত্র ,নবীর নাতি ঈমাম হাসান মসনদের যৌক্তিক দাবি থেকে সরে আসলেন ইসলামের ইতিহাসকে ভ্রাতৃঘাতী রক্তপাতের কলঙ্ক থেকে মুক্ত রাখতে।তাঁর প্রাণপাত হ’ল ষড়যন্ত্রের বিষে।মাবিয় চুক্তিভেঙ্গে তষ্কর পুত্র এজিদকে যুবরাজ বানালেন।তার ‘সুপারি’ খাওয়া ভাড়াটিয়া ঘাতক সিমার হযরত আলী ও বিবি ফাতেমার দ্বিতীয় পুত্রের শিরোচ্ছেদ করলো নামাজের শিজদায় থাকতে ঘাড়ের পিছন দিকে তলোয়ারের কোপ দিয়ে,যাতে নবীর কন্যার উত্তাধিকার সালতানাতের মসনদের দিকে পা বাড়াতে না পারে।
সেই একই নিয়মে আজও পিছন থেকে চাপাতি চালিয়ে অভিজিৎদের গর্দন ভূলুন্ঠিত করা হচ্ছে। আমরা যারা ভাবতাম ইসলাম মানে ‘শান্তি’ তারা এখন মূর্খ বেকুব প্রতিপন্ন হয়েছি।ধর্ম নিরপেক্ষতার ওলি বাঙালির জাতির পিতা সংবিধানে আছেন । কিন্তু হাদিসে নেই।
অন্ধকার যুগে জন্মের সাথে সাথে নারী শিশু হত্যা করার রেওয়াজ ছিল। সেই হত্যা বন্ধ করেছিলেন নবী মোহাম্মদ(দ:)।কিন্তু শরিয়ায় ভর করা রাজনৈতিক ইসলাম পিতৃ সম্পদে নারীর উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে দেয়নি।সামাজিক ক্ষমতায়নে পুরুষের অর্ধেক উত্তরাধিকার নারীকে অর্ধেক মানুষ করে রেখেছে।শরিয়াই রাজনৈতিক ইসলামের বড় খুটি বলে ইরাক সিরিয়া রক্তাক্ত হচ্ছে শরিয়া প্রতিষ্ঠার জন্যে। তাদের শরীকরাই বিমান নিয়ে বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনেতা শেখ হাসিনাকে তাড়া করছে শরিয়ার তাড়নায়।মাত্র ১ শতাংশ মানুষের হাতে এখন সারা বিশ্বের ৫০% ভাগ বিত্ত-অর্থ-সম্পদ বন্দী হয়েছে। ক্ষমতার শতভাগ তাদের নিয়ন্ত্রণে। তাদের পিতৃপুরুষরা যেমন চেয়েছিল নারী হবে বীরভোগ্যা অসূর্য্ম্পশ্যা।অন্তপূরবাসিনী , সন্তান প্রসবিনী মাতা কন্যা জায়া ! সংসার সুখের হবে রমনীর গুনে। রাজা করিবে রাজ্যশাসন , রাজারে শাসিবে রাণী!আজও পৃত্থীরাজ হয়ত তাই চায়।একদা যারা অটোমান সাম্রাজ্য ধ্বংস করে খেলাফত বরবাদ করেছিল, আজ তারাই যে শরিয়া শিরোধার্য করাতে খেলাফত পুনপ্রতিষ্ঠার পায়তারা করাচ্ছেনা তা কে বলতে পারে?তেজস্বী নরীকে শয্যায় কাবু করা যায়না অস্থি মজ্জা ও মস্তিষ্ক নিস্তেজ না হলে।লাষ্যময়ী ললনা হাস্যময়ী হয়ে খাজানা শূন্য করে দেয় , কোন বাধা মানেনা।তাই নারীকে শরিয়া দিয়ে বেধে রাখার কোন বিকল্প থাকেনা ।
শরীয়ার তাগিদ সাথে নিয়েই জামাতে ইসলামী বিএনপিতে বিলীন হয়ে চলেছে। এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে মীমাংশার শেষ সম্ভাবনাও যে অতি দ্রুত বিলীন হয়ে যাবে সে কথা পাগল ও শিশুর জন্যেও দুর্বোধ্য হবেনা।অথচ মীমাংশা না হলে রক্তপাতই যে হবে একমাত্র সমাধান সে কথা সবার উপলব্ধিতে ঠাঁই পেয়েছে কিনা তা বলা কঠিন। সংখ্যধিক্য কখনোই যুদ্ধজয়ের নিশ্চয়তা দেয়না।ঘনবসতিপূর্ণ আমাদের ছোট্ট দেশটা এখনও বৈশ্বিক দন্দ্বের বাইরে দৃঢ় আবস্থান নিতে পারেনি।তাতেকরে একতরফাভাবে একক সিদ্ধান্তে চলার সুযোগ নিরঙ্কুশ হয়নি। সরকার সেটা না বুঝলে ঐক্য সম্প্রসারনের চেষ্টায় মরিয়া হয়ে ঊঠতো না।১৪ দলের ঐক্য সম্প্রসারিত হলে ২০০৮ এর মত আর একটা বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে উন্নয়নের পথে অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখা হয়ত সম্ভব হবে। কিন্তু নয়া উপনিবেশবাদের ছোবল প্রতিহত করতে পারবে কিনা সেটা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।বিএনপি জামাত একীভূত হওয়ায় রুয়ান্ডা বা ইন্দেনেশিয়ার মত পরিস্থিতি সৃজনের সুযোগ বাড়ছে।বঙ্গোপসাগরের অগভীর তলদেশে বিপুল সম্পদ এখন উঁকিঝুকি দিচ্ছে ।চলমান সমৃদ্ধির ধারা বেগবান হবে তার ছোঁয়া পেয়ে, সেই আশায় যেমন বুক বাঁধা যায় তেমনি মিষ্টি ফলে পোকা ধরার চিরাচরিত আশঙ্কাকেও মুছে ফেলা যায়না।তবে মুশকিল আহসান হবে যদি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তির ঐ্ক্য অটুট থাকে। বাঘা সিদ্দিকীর শুভবুদ্ধির আমি তারিফ করি। মুজহিদুল ইসলাম সেলিম নিশ্চই বুঝবেন বিপ্লবের স্তর এখনও স্যেকুলার গন্ডিতেই বাঁধা রয়েছে; শ্রেণী উচ্ছেদের পর্যায়ে উপনীত হয়নি, যেমনটা হয়ত বাসদের ক্ষুরবুদ্ধি আর আনু মোহাম্মদের দুর্বুদ্ধিতে উপলব্ধ হচ্ছে।
জাপ উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে মাও সন্ধি করেছিলেন চিয়াংকাইশেকের সাথে।ফ্যাসিবাদ ধ্বংশ করতে স্তালিন ইঙ্গমার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সাথে জোটবদ্ধ হয়েছিলেন। ইতিহাসের সেই শিক্ষা গ্রহন না করলে বাংলাদেশের “চিরশিশু“ কম্যুনিস্টরা ইরাকের ব্যর্থ লাচার কম্যুনিস্টদের মত ভুলের কবরে সমাধিস্ত হবেন, তাতে কোন সন্দেহ রাখিনা আমি।কারণ তত্ব জ্ঞানে ঋদ্ধ না হলেও আমি এটা বুঝি যে,রাজনীতি হাডুডু খেলা না।তাই কেবল হাতপা ছুড়লে ল্যাংড়া লুলা হয়ে হুইল চেয়ারেই বসতে হবে। মসনদ জুটবে না।রাজনীতি এবং যুদ্ধ দুটোই মাথা দিয়ে খেলতে হবে ।বুদ্ধি করে কৌশল করে লড়তে হবে।যতক্ষণ শত্রু নির্মূল এবং নিশ্চিহ্ন না হয়।
লেখক: ভাষা সৈনিক,মুক্তিযোদ্ধা , কলামিস্ট।ভার্জিনিয়া,