1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

এই বাংলাদেশকে দমিয়ে রাখা যাবে না

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩

বাংলাদেশ এক বিপুল সম্ভাবনাময় দেশ। এ দেশের মানুষ অফুরন্ত প্রাণশক্তির অধিকারী। অভাব, অনটন, লাঞ্ছনা, বঞ্চনাও তাদের মনোবল ভাঙা যায় না। প্রবল মানসিক দৃঢ়তা এই জাতির মানুষের মধ্যে বিদ্যমান, প্রতিটি পদক্ষেপে তা লক্ষ্য করা যায়। দুঃখ, কষ্ট জয়ের অসীম লড়াই জারি রাখে। সবসময়। প্রতিটি চেষ্টায় সম্ভাবনা তৈরি করে। যে পথে হাঁটলে নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়া যাবে, যে কাজটি করলে নিজেদের অবস্থার উন্নতি করা যায়Ñ সেটিই তিনি করছেন। পরিবার-পরিজন, সমাজ, দেশÑএই অকুতোভয় সাহসী মানুষদের কল্যাণে এগিয়ে যাচ্ছে। যারা এগিয়ে যায়, এগিয়ে যেতে চায় তাদের পিছিয়ে দেওয়া সাধ্য কারও নেই। এ দেশের মানুষ এগিয়ে যায়। এজন্য তারা নিরলস পরিশ্রম করছেন। যে যা করছেন সেটাই পুঁজি করে উন্নতি করতে চাইছেন। ফলে তারা নিজেদের আর্থিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক উন্নতি করতে পারছেন। এ দেশের মানুষের উন্নতি মানে তো বাংলাদেশের উন্নতি। বাংলাদেশকে নিয়েই তারা সামনে এগোতে চাইছেন। যে দেশের মানুষ স্বপ্ন দেখে একদিন স্বপ্নের দেশ গড়বে- সে দেশ তো এগোবেই। কার সাধ্য আছে- সেই দেশকে ঠেকাবে! এ দেশের উন্নতি ঠেকানোর চেষ্টা হয়। তবে অপচেষ্টাকারীরা সফল হয় না। অদম্য বাঘের গর্জনে, অর্জনে তারা অকার্যকর প্রমাণিত হয়। যুদ্ধ করে জয়ী জাতিকে যে দমিয়ে রাখা যায় না, সেটা তারা ভুলে যায়।

টানা পনের বছর ধরে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধিক সরকার এই দেশ পরিচালনা করছে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ হয়। বাংলাদেশের উন্নতি অন্যদের জন্য উৎসাহের কারণ। বাংলাদেশের মতো অন্যরাও এগিয়ে যেতে চায়। এই পনের বছরে অনেক অনেক অর্জন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এসেছে। কতশত উন্নয়ন, অবকাঠামো এখন দৃশ্যমান। সুফল ভোগ করছে মানুষ। পদ্মা সেতু তো এখন আর কোনো স্বপ্নের ব্যাপার নয়। এক বছরেরও বেশি সময় হয়ে গেছে। গাড়ি চলছে। এই সেতু এখন আয় করছে। অথচ কতো কতো বাধা পেরিয়ে এই সেতু নির্মাণ করতে হয়েছিলো। দেশ-বিদেশের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয়েছে। তবুও ঠেকানো যায়নি বাঙালিকে। নিজস্ব শক্তিতে বলিয়ান হয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে আমরা দেখিয়ে দিয়েছি- বাঙালি পারে। চাইলে অসম্ভবকে সম্ভব করা কোনো ব্যাপার নয় বাঙালি জাতির পক্ষে। কে ভেবেছিলো এর আগে এ দেশে মেট্রোরেল হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হবে। যা কেউ ভাবতে পারেনি, তা ভেবেছিলেন একজনই। জাতির জনক কন্যা শেখ হাসিনা। তিনঘণ্টার পথ এখন ২০ মিনিটে পাড়ি দেওয়া যায়। বঙ্গবন্ধু টানেল তো আরেক স্বপ্নের প্রকল্প। যা দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশে প্রথমবার এ ধরনের অকাঠামো, যা বাংলাদেশেই নির্মাণ হয়েছে। ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজারের রেল যাচ্ছে এখন। মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র, ১০০টি বিশেষ ইকোনোমিক জোন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুতের কোনো সংকট নেই। কী হচ্ছে না এখন দেশে। এ দেশের মানুষের উন্নত জীবন নিশ্চিতে সব হচ্ছে, সব।

শেখ হাসিনার সরকার গৃহহীনদের ঘর-বাড়ি বানিয়ে দিয়েছে। লাখ লাখ মানুষ ঘর পেয়েছে। কে ভেবেছিলো কোনো টাকা-পয়সা ছাড়া পাকা ঘর ও জমি পাবে? যা কেউ ভাবেনি আগে তা ভেবেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। বিধবাদের ভাতা দেয় তার সরকার। সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে এমন আরও অনেক ভাতা ব্যবস্থা আছে, যা কেবল উন্নত দেশেই সম্ভব। আমাদের দেশ এখনো উন্নত দেশে পরিণত না হলেও, শত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে শেখ হাসিনা সরকার চেষ্টার কোনো কমতি রাখছে না। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। হয়তো আশাতীত জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। চিকিৎসা ব্যবস্থার অবশ্যই উন্নতি হচ্ছে, উন্নতি না হলে মানুষের গড় আয়ু বাড়লো কীভাবে? মানুষের গড় আয়ু এখন প্রায় ৭৩ বছর। দেশে অনেক জটিল রোগের চিকিৎসা হচ্ছে। এমনকি অনেক গুরুত্বপূর্ণ রোগের সফল অপরাশেন হচ্ছে। কিন্তু আরও উন্নতি হওয়া দরকার, সেটা হয়তো আমরা পারছি না। আগে মানুষ ভারতে গিয়ে হার্টের বাইপাস করাতো, এখন তো দেশেই বাইপাস হচ্ছে। একটা-দুটা অঘটন ঘটলে তা পত্রিকা বা গণমাধ্যমে আসে, কিন্তু হাজার হাজার সফল উদাহরণ তো পত্রিকায় আসে না। এখানে একতরফা হচ্ছে বিষয়গুলো। যেটা ভালো আপনি ভালো বলুন, খারাপ হলে তাও বলা উচিত। কিন্তু আমাদের এখানে একতরফা হচ্ছে। তাতে ভুল বোঝাবুঝি বাড়ছে।

চিকিৎসাসেবা ভালো করার দায়দায়িত্ব সরকার ও প্রশাসনের। সমস্যা যতো না চিকিৎসকদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি দক্ষ চিকিৎসক তৈরি ও চিকিৎসা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে। আপনি ভালো চিকিৎসক তৈরি করবেন না, কিন্তু ভালো সার্ভিস চাইবেন তা তো হয় না। তাই ভালো চিকিৎসক তৈরির জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। মেডিকেল কলেজ, ল্যাবরেটরি, ইক্যুইপমেন্ট না থাকলে স্বাস্থ্যসেবার ডেভেলপমেন্ট হয় না। যত্রতত্র মেডিকেল কলেজ হচ্ছে, ডিগ্রি দিচ্ছেন, কোয়ালিটি দেখছেন কি? সেসব ঠিক না করে দক্ষ চিকিৎসকের পরিবর্তে অদক্ষ চিকিৎসক তৈরি করলে কীভাবে আপনি ভালো সার্ভিস পাবেন? এর দায়-দায়িত্ব প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। একতরফা চিকিৎসকদের দোষ দিয়ে তো লাভ হবে না। এটা একটা টিমওয়ার্ক, এখানে ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয়-আয়া, টেকনিশিয়ান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সকলে জড়িত। একটা টিম হয়ে কাজ না করলে কীভাবে আপনি জনসাধারণকে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দেবেন? কোনো একটা জায়গায় যদি উল্টাপাল্টা কাজ হয়, পুরো সিস্টেমটাই তো নষ্ট হয়ে যাবে। স্বাস্থ্য খাত উন্নত করতে হলে অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। মানসম্মত হাসপাতাল আরও বাড়াতে হবে। সব বিভাগীয়, জেলা শহর কিংবা উপজেলাগুলোতে বড় বড় হাসপাতাল তৈরি করা যেতে পারে। প্রয়োজনে পদবিও সৃষ্টি করতে হবে। তাহলে মানুষকে কষ্ট করে ভালো চিকিৎসা গ্রহণের জন্য শহরে আসতে হবে না। এতে সর্বস্তরের মানুষ দোরগোড়ায় থেকেই চিকিৎসা পাবেন। উপজেলা বা গ্রাম পর্যায়ে কাজের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের অনাগ্রহের কারণ তাদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয় না। উপজেলায় অন্যান্য পেশার সরকারি অফিসাররা যে সুযোগ-সুবিধা বা নিরাপত্তা পান, চিকিৎসকদের জন্য কি তার ন্যূনতম ব্যবস্থাও করা হয়? ফলে চিকিৎসকেরা তৃণমূলে গিয়ে কাজ করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। আমার মনে হয়, চিকিৎসকদের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করলে গ্রাম পর্যায়ে যেতে কেউ অনাগ্রহে দেখাবে না। এছাড়া চিকিৎসকদের মধ্যে অনেক নারীও থাকেন, তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখতে হবে। সরকার বা প্রশাসন চিকিৎসকদের সুযোগ-সুবিধা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে চিকিৎসকরা যেকোনো জায়গায় চিকিৎসাসেবা দিতে দ্বিধাবোধ করবেন না

শেখ হাসিনা মানুষের নেতা। মানুষের জন্য তার প্রাণ কাঁদে। ব্যক্তিগত কোনো লক্ষ্য নয়, সামষ্টিক সন্তুষ্টি-খুশিই তিনি চান। এ দেশের মানুষের আনন্দই তার আনন্দ। এ দেশের মানুষের স্বচ্ছল জীবনই তার আকাঙ্ক্ষা। এ দেশের মানুষের মাথা উঁচু করে বাঁচার পথটি তিনি তৈরি করে দিয়ে যেতে চান। তিনি আমাদের জাতির জনকের কন্যা। পিতার মতো কন্যাও এ দেশের মানুষের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত। এ দেশের মানুষের জন্যই তিনি ঝুঁকি নেন। বারবার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তিনি সবার দোয়া ও আল্লাহর রহমতে বেঁচে যান। সৃষ্টিকর্তা এ দেশের মানুষের জন্যই বোধহয় বারবার রক্ষা করেন। বাঁচিয়ে দেনে। তা না হলে যাকে হত্যার উদ্দেশে ১৯ বার কিংবা তারও বেশি বার চেষ্টা করা হয়, তার বেঁচে থাকাটা সৃষ্টিকর্তার সদয়ই বলতে হয়। তিনি বেঁচে আছেন। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় আশীর্বাদ। তার মতো একজন অদম, সাহসী নেতা তো এ দেশের মানুষের বড় প্রয়োজন। তিনি যদি না থাকেন কবে আবার আসবে এমন নেতা কে জানে।

লেখক : ডা. এবিএম আবদুল্লাহ – ইমেরিটাস অধ্যাপক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক


সর্বশেষ - রাজনীতি