1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

চার কারণে বিএনপির আন্দোলন জনসম্পৃক্ত হয়নি

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩

দেশে রাজনীতি কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একদিকে নির্বাচনী হওয়া বইছে, আরেক দিকে ঝিমিয়ে পড়া আন্দোলন চলছে। শাসক দল আওয়ামী লীগ এবং তার মিত্র জোট, দল নির্বাচনী আয়োজনে ব্যস্ত। বিএনপি ও তার মিত্ররা আন্দোলন করার চেষ্টা করছে। তারা হরতাল ডাকছে। কিন্তু তার কোনো দৃশ্যমান প্রভাব নেই। গত ৪ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ছিলো, ‘বিএনপি আন্দোলন জমাতে পারছে না।’ আর ৫ ডিসেম্বর বলেছে, ‘দলটি হরতালের বিকল্প খুঁজছে।’ একটা কথা প্রায়ই বলা হয় যে, বিএনপি বড় সমাবেশ করেছে, অনেক মানুষের সমাবেশ করেছে। কিন্তু আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে পারেনি। বরং এই অকার্যকর হরতাল-অবরোধ করে মানুষকে ত্যক্ত করছে। দৃশ্যত বিএনপির আন্দোলনে প্রচুর মানুষ যোগদান করলেও স্বতঃস্ফূর্ততা সেভাবে দেখা যায়নি।

প্রথমেই দেখা যাক, জনসম্পৃক্ততা কাকে বলে? জনগণ যার সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু আন্দোলনে জনগণ সম্পৃক্ত হয় আসলে কেমন করে? স্বাধীনতার আগে পরে অনেক আন্দোলন হলেও সবগুলোতে মানুষ সেভাবে সম্পৃক্ত হয়নি, সেটা আমরা জানি। মহাত্মা গান্ধীর জীবন থেকে একটা ধারণা পাওয়া যায়, জীবন ও রাজনীতিতে সম্পূর্ণভাবে পূর্ণ শৃঙ্খলায় বিশ্বাসী মহাত্মা গান্ধী চাইতেন, ‘ব্রিটিশবিরোধী এমন আন্দোলন হবে যেখানে আন্দোলনের তুঙ্গে অবস্থায় থেকেও আন্দোলনের সর্বোচ্চ নেতার নির্দেশ পালিত হবে, আন্দোলনকারীরা আবেগ সংযত রাখবে এবং আন্দোলন চালিয়ে যাবে কিংবা প্রয়োজনে আন্দোলন গুটিয়ে নেবে। তাহলেই মানুষ নিজেকে সেখানে দেখতে পাবে।’

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। এর সঙ্গে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে তফসিল বাতিলের দাবি। দাবি আদায় করে ভোটে যেতে চায় দলটি- এই লক্ষ্যে একমাসের বেশি সময় ধরে তারা হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করছে। ঝটিকা মিছিল করছে। গাড়িতে আগুন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আন্দোলন জমছে না। বিএনপির নেতা শাহজাহান ওমর বিএনপির সঙ্গে ৪৫ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে নৌকায় চরে বসেছেন। আন্দোলনের মাঠ থেকে নির্বাচনের মাঠে চলে গিয়েছেন জেনারেল ইব্রাহিম। আরও অনেকেই স্বতন্ত্র নির্বাচন করছে। তবু এই কথাটি বলতেই হবে যে বিএনপির হেভিওয়েট নেতারা কেউ নির্বাচনে যাননি এবং দলীয় ভাঙনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু আন্দোলন জমাতে পারছে না এটি সত্য। সরকার পতন তো দূরের কথা, হরতাল-অবরোধ দিয়ে যে নির্বাচন ঠেকানো যায় না, সেটা এখন সবাই বুঝতে পারছে। এটিও ঠিক যে, সামাজিক বা রাজনৈতিক আন্দোলনের বাস্তব অবশ্য সবসময় পরিকল্পনা মতো হয়ও না। উত্তেজিত আন্দোলনকারীরা অনেকসময় আন্দোলনেরই ক্ষতি করে। যেমনটা হয়েছে গত ২৮ অক্টোবর। পুলিশ খুন, সাংবাদিক পেটানো, প্রধান বিচারপতির বাড়ি আক্রমণ, হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দেওয়াসহ সামগ্রিক সহিংসতা এবং সর্বশেষ দলীয় কার্যালয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একজন ভুয়া উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলন বিএনপিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

সহিংসতার কথা বিএনপি অস্বীকার করে। গণআন্দোলন আর জনপ্রিয় আন্দোলন এক নয়। সব জনপ্রিয় আন্দোলন স্বতঃস্ফূর্ত হয় না। স্বাধীনতার পর থেকে সফল আন্দোলনগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, দলগুলো সাধারণ মানুষের দাবি-দাওয়া নিয়ে গণআন্দোলন গড়ে তুলে নিজেদের সমর্থনভিত্তি বাড়িয়েছে। এগুলোর সবকটির মধ্যেই কমবেশি দলীয় নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল চোখে পরার মতো। তাই এসব আন্দোলন ছিল চরিত্রগতভাবে একাধারে গণ, জনপ্রিয় এবং জনপ্রিয় আন্দোলনও বটে। বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ভোটাধিকারের আন্দোলন করছে। কিন্তু মানুষকে কেন জড়াতে পারলো না তার একটি হিসাব চলছে। বলা হচ্ছে নেতাকর্মীদের এখন কিছুটা বিশ্রাম দিতে হবে, আত্মাগোপন অবস্থা থেকে তাদের বের হওয়ার সুযোগ দিতে হবে, নতুন করে আন্দোলন করার জায়গা দিতে হবে।

আমার দৃষ্টিতে মূলত চারটি কারণে বিএনপি জনম্পৃক্ততা করতে পারছে না।

[১] এই দলটি শুরু থেকে দেশ-বিদেশে থাকা কিছু ফেসবুকার এবং ইউটিউবারের উপর নির্ভর করেছে। এসব ফেসবুকার আর ইউটিউবাররা সামাজিক মাধ্যমে প্রতিনিয়ত সরকার ফেলে দিয়েছে, শেখ হাসিনাকে বিদায় করে দিয়েছে এরকম তথ্য ছড়িয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এমন কিছু হয়নি।

[২] অতিমাত্রায় বিদেশি নির্ভরতা। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। তারা ভেবেছে যুক্তরাষ্ট্র কিছু একটা করে দেবে এবং যুক্তরাষ্ট্র করে দেবেই এমন একটা অবস্থার মধ্যে নেতারা চলে গিয়েছিলেন। তাদের নেতারা নানা অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলতেনও। এমনকি টেলিভিশন টকশোতে এসেও বলেছেন।

[৩] মানুষের সম্পৃক্ততা। মানুষ আসলে ভয় পেয়েছে। ২০১৩ থেকে ১৫-তে পেট্রোলবোমা, আগুন-সন্ত্রাসের যে অভিজ্ঞতা মানুষের হয়েছে, ফলে মানুষ চাইলেও সেই আন্দোলনে যায়নি পুড়ে মরার ভয়ে। সতর্ক থেকেছে, দূরে থেকেছে।

[৪] ২৮ অক্টোবরের পরে পুলিশ এবং সরকার যে চরম হার্ডলাইনে গিয়েছে, তাতে বিএনপি মূলত কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।

(সূত্র : সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজার ফেসবুক পেজ থেকে)


সর্বশেষ - রাজনীতি