1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বিএনপি না এলেও যথাসময়েই নির্বাচন হবে

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এ মাসেই সরকারের পতন হবে। এবার রাজধানী ঢাকা নয়, গেছেন রাজশাহীতে। সেখানে অর্থাৎ রাজশাহী শহরে বিএনপির ঝটিকা মিছিলে নেতৃত্ব দেন তিনি। তবে কেউ কেউ মন্তব্য করেন, ছিঃ আবারো সরকার পতনের কথা। তাও এ মাসেই। অভিযোগে রিজভী উল্লেখ করেছেন, ‘জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ আবারও সন্ত্রাসী কায়দায় জনগণের ভোটাধিকার হরণের সব পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।’ আসলে এটা তো পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, আন্দোলন থেকে বিএনপি অনেক দূরে। জনগণকে সম্পৃক্ত করা ছাড়া আন্দোলন কখনো সফল হয় না। কুখ্যাত আইয়ুব-ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান সফল হওয়ার কারণ ছিল জনসম্পৃক্ততা। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদ আর কয়েকলাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বদলে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছিলাম কার নেতৃত্বে? বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। এর নেতৃত্ব কে দিয়েছেন? জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কুখ্যাত স্বৈরশাসক এরশাদের বিদায় হয়েছিল জনগণ রুখে দাঁড়িয়েছিল বলেই। নেতৃত্ব সঠিক ছিল। জনসম্পৃক্ততা ছাড়া ঈপ্সিৎ লক্ষ্যে পৌঁছান যায় না। ১৯৯০-এ জনগণের অংশগ্রহণ ছিল বলেই গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতন হয়েছিল। আর এখন যা হচ্ছে তা আন্দোলন নয়, সন্ত্রাস। গোপনে গাড়িতে অগুন ধরিয়ে দিয়ে, মানুষ পুড়িয়ে মেরে, রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে, প্রতিহিংসার আগুন ছড়িয়ে আন্দোলন হয় না। আন্দোলনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকারের পতন সম্ভব হয়নি বলেই সরকার ‘উচ্ছেদ’ করার পরিকল্পনা নিয়েছিল বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীসহ কিছু দল। বাস্তবের চিত্র অন্যরকম।

‘অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনের তফসিল বাতিল, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, বেগম খালেদা জিয়াসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে’- বিএনপির ডাকা দশম দফা অবরোধের প্রথম দিন ছিল গতকাল। আসলে এর একটির সঙ্গেও কী জনগণের সম্পৃক্তা আছে? নেই। আর নেই বলেই সারাদেশে নির্বাচনের আমেজ বহমান। বিভিন্ন স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে নানা কথা উঠেছে। নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে- এটা সত্যি। তবে ইসিতে আপিল করা বা আদালতে যাওয়ার সুযোগ তো তাদের আছে। আমরা কেন, কেউই স্বতন্ত্র প্রার্থীকে এখনই বলতে পারি না তিনি দোষী। নানাভাবে যোগ্য বিপুল সংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থীকেও মাঠে দেখা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, আন্দোলন জোরদার করতে নতুন কৌশলের খোঁজ করছে বিরোধী দলগুলো। এক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কথা ভাবছে। এ নিয়ে দুদলের আলোচনাও চলছে। এককথায় বলা যায়, জামায়াত তো ১৯৭১-এর কারণে জনগণের কাছে ঘৃণিত। সুতরাং আন্দোলন করার জন্য মানসিক শক্তির অভাব তীব্র থেকে আরো তীব্রতর হচ্ছে বিএনপির। বহু বছর বিএনপির সঙ্গে জোটে ছিল জামায়াতে ইসলামী। এ কারণে বিএনপির দিক থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীও জামায়াতের বিরুদ্ধে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকাসহ সারা দেশের জেলা সদরে মানববন্ধন কর্মসূচি রয়েছে বিএনপির। এমন কর্মসূচি আওয়ামী লীগও সমমনাদলগুলো দেবে না? নিশ্চয়ই দেবে। সুতরাং সরকার পতনের আন্দোলন ভিন্ন এক রূপ নেবে। যারা সংশয় প্রকাশ করেন, বিএনপিবিহীন নির্বাচন কতটা অংশগ্রহণমূলক হবে কী? তারাও এখন চুপ। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে দেশ, তাতে বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট আরও তীব্র হওয়ার সুযোগ নেই। ভোটের মাঠে নেমে পড়েছে জনগণ। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগে ও পরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হলে বোঝা যায় বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। আগে সন্দেহ করা হতো নির্বাচন হবে কি হবে হবে না। এখন অনেকেই নিশ্চিন্তে বলছেন, জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ বলতে যা বোঝায়, তা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। দল অংশগ্রহণ না করলেও জনগণের অংশগ্রহণ করাটা অনেক বড়। এ নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে ক্ষমতায় কারা অধিষ্ঠিত থাকবেন, সেটিও নির্ধারণ করার সুযোগ হবে।

একটি বড় দল ছাড়া নির্বাচন হলে বিশ্বের কাছে তা গ্রণযোগ্য হবে এ কারণেই যে, নির্বাচনি তফশিল ঘোষণার পরপর জনগণের অংশগ্রহণ বেড়েছে কি না তা দেখে। এছাড়া জনগণের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য, ভোটকেন্দ্রে মানুষের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য বিপুল সংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজেদের স্বার্থে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাবেন। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) চায় বাংলাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচন হোক শান্তিপূর্ণ ও সবার অংশগ্রহণমূলক। যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেছেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে উৎসাহিত করে, যাতে বাংলাদেশের জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা করতে পারে।’ একটি বিষয় লক্ষ্যণীয়, নির্বাচন কিন্তু সবাই অংশগ্রহণমূলক চায়। সেটা কিন্তু জনগণের অংশগ্রহণ। দল অংশগ্রহণ করলো কিন্তু জনগণ অংশগ্রহণ করলো না এটাকে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কি অবাধ বলবে? সরকারের মাথায় এই বিষয়টি এখন। এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, বিএনপি না এলেও আগামী সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে। দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কে এলো, না এলো, সেটি বড় কথা নয়। সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন হবে। কানো দল নির্বাচনে না এলে নির্বাচন হবে না, এ রকম কোনো বিধান সংবিধানে নেই। বিএনপি না এলেও আরও অনেক দল নির্বাচনে আসবে। কাজেই যথাসময়েই নির্বাচন হবে।

লেখক : দীপক চৌধুরী – উপসম্পাদক- আমাদের অর্থনীতি, কলামিস্ট, কথাসাহিত্যিক ও ফিল্মমেকার


সর্বশেষ - রাজনীতি