1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

শুনতে পাচ্ছে বধির, কথা বলছে বাকপ্রতিবন্ধী

বিশেষ প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২

জন্মের পর থেকে শিশু কানে শুনতে না পারায় কথা বলার ক্ষমতাও তৈরি হয় না। এ জন্য জন্মগতভাবে বধির শিশু বাকপ্রতিবন্ধী হয়। এসব শিশুর সুচিকিৎসা মিলছে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউটে। নামমাত্র খরচে চিকিৎসা নিয়ে শুনতে পাচ্ছে বধির; কথা বলছে বাকপ্রতিবন্ধীরা। চিকিৎসা শেষে কারও কারও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে শ্রবণশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক যন্ত্র হিয়ারিং এইড।

জন্মগত বধির ৩ বছরের শিশু উদয় সাহাকে নিয়ে তার মা সুবর্ণ সাহা ইএনটি ইনস্টিটিউটে এসেছিলেন কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে। বহির্বিভাগে কথা হলে তিনি জানান, তাঁর ছেলে জন্মগতভাবে বধির ছিল। সাধ্যমতো অনেক চিকিৎসা করালেও ভালো হয়নি। অবশেষে চিকিৎসক প্রাণ গোপাল দত্তের পরামর্শে ইএনটি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এক বছর ধরে এ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। এরই মধ্যে ছেলের কানে বসানো হয়েছে মেশিন। জন্মগত বধির উদয় এখন শুনতে পাচ্ছে। আস্তে আস্তে কথা বলছে সে। এখনও স্পিচ থেরাপি চলমান।

একই কথা জানান রাজশাহীর বাগমারার তরুণী মর্জিয়া খানম। তিনি এসেছেন বাবাকে নিয়ে। তাঁর বাবা কানে কম শোনেন। মাথা ভার হয়ে থাকে। চিকিৎসা নেওয়ার পর অনেকটাই সুস্থ তাঁর বাবা।

তিন বছর ধরে জিহ্বার ক্যান্সারে ভুগছিলেন ঝালকাঠি থেকে আসা ময়না রানী মালাকার। চিকিৎসার জন্য ভারতের কলকাতায়ও গিয়েছিলেন। কোনো লাভ হয়নি। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ইএনটিতে ভর্তি হওয়ার পর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর জিহ্বার ক্যান্সার অপসারণ করা হয়। বর্তমানে সুস্থ আছেন। কথা বলতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে ২০১৩ সালের ১৯ জুন থেকে সেবা দেওয়া শুরু হয় নাক-কান-গলার বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানটিতে। এই হাসপাতালে ২০১৮ সালে যুক্ত হয় বধির ও জিহ্বা প্রতিস্থাপন সেবা। এ পযন্র্ত জন্মগত বধির ৩১৮ শিশু চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছে। জিহ্বা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে ২০০ জনের। তাঁরা সবাই বর্তমানে সুস্থ।

সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত বহির্বিভাগে রোগী দেখা হয়। মাত্র ১০ টাকার টিকিটে বহির্বিভাগে দৈনিক ৪-৫শ রোগী দেখা হয়। প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয় বিনামূল্যে। পরীক্ষা-নিরীক্ষায়ও নামমাত্র সরকারি ফি নেওয়া হয়।

এখানে রোগী দেখেন বিশেষজ্ঞ (কনসালট্যান্ট) চিকিৎসকরা। হাসপাতালটিতে রক্তনালির টিউমার, প্যারেটিড গ্রন্থির টিউমার, কানের পর্দা লাগানো, নাকের পলিপ ও হাড়ের অপারেশন, সাইনাস ক্যান্সারের আধুনিক এনডোসকোপিক অপারেশন, শ্বাসনালির ক্যান্সার, থাইরয়েড ক্যান্সার ও জিহ্বার ক্যান্সারের মতো জটিল অপারেশনও করা হচ্ছে বিনা খরচে। গলা না কেটে এনডোসকপির মাধ্যমে থাইরয়েড অপারেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে বহির্বিভাগের পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টা দেওয়া হচ্ছে জরুরি সেবা।

প্রতিষ্ঠানটির ১৩৫ শয্যার মধ্যে ৮১টি শয্যা বিনামূল্যে সেবার আওতায় রাখা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, মুক্তিযোদ্ধা, দুস্থ, দরিদ্র ও প্রতিবন্ধীরা বিনামূল্যে সেবা পেয়ে থাকেন। ৩৮টি শয্যার রোগীদের অর্থের বিনিময়ে চিকিৎসাসেবা নিতে হয়। এর মধ্যে ৩৩টি পেয়িং শয্যা। নন-এসি কেবিনের দৈনিক ৫২৫ টাকা এবং এসি কেবিনে ১১২৫ টাকা ভাড়া। কেবিনের রোগীদের বড় অপারেশনে ২ হাজার টাকা এবং ছোট অপারেশনে ১ হাজার টাকা দিতে হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, দেশে নাক-কান-গলার রোগীর পরিসংখ্যান নেই। সরকারি হাসপাতালে আসা রোগীদের মধ্যে ২০-৩০ শতাংশ নাক-কান-গলার রোগী। আর মোট ক্যান্সার রোগীর ৩০ শতাংশ হেডনেক ক্যান্সারে আক্রান্ত।

ইএনটি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আবু হানিফ বলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীরা একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার পর ক্যান্সার সাপোর্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দরিদ্র রোগীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। হেড অ্যান্ড নেক ক্যান্সার সাপোর্ট ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে কয়েকজনকে অটোরিকশা ও গরু কিনে দেওয়া হয়েছে। ঘরবাড়িও করে দেওয়া হয়েছে কয়েকজনকে। এ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পাঁচ বছরে ৩০ লাখ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে ক্যান্সার রোগীদের। তাঁদের লক্ষ্য- শুধু চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা নয়, পুনর্বাসন করে সমাজের মূল স্রোতে নিয়ে আসা। হেড অ্যান্ড নেক ক্যান্সার সাপোর্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মানিকগঞ্জের মিতরায় ২৫০ শয্যার একটি পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার হাসপাতালও তৈরি করা হয়েছে।


সর্বশেষ - রাজনীতি

নির্বাচিত