রাজনীতিকে জটিল করে তোলার মধ্য দিয়ে আর যাই হোক, মানুষের কষ্ট দূর হয় না। যারা কাজ করে দিন আনে দিন খায় তাদের জন্য ভোগান্তি কেন বা কী উদ্দেশে- এটা খেটে খাওয়া মানুষের কাছে পরিষ্কার। মানুষ মানুষের জন্য এটা রাজনীতিবিদেরা ভুলে যান কেন? হরতাল-অবরোধ দিয়ে মানুষের কষ্ট বাড়িয়ে জাতির ক্ষতি হয়। এখন এগিয়ে যাওয়ার পালা আমাদের। সারা দুনিয়ার মানুষ উৎপাদন বাড়ানোর কথা চিন্তা করছে আর আমরা ক্ষমতায় যাওয়া-বসার চিন্তা করছি যেন। এর চেয়ে বড় দুঃশ্চিন্তা কিছু আছে? মীমাংসিত বিষয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু। অথচ এটাই সামনে নিয়ে এসেছে বিএনপি। সমাবেশে তাদের প্রধান চাওয়া ছিল এটি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলেন আর নির্দলীয় সরকার বলেন কোনো অনির্বাচিত ব্যক্তির হাতে রাষ্ট্রের ক্ষমতা কেন তুলে দেওয়া, এ প্রশ্নটি সামনে এসেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের এক সুতাও বাইরে সরকার যাবে না এটা বোঝা যায়। এখন বিএনপির দাবি হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার হতে হবে, তাহলে দলটি ভোটে আসবে। ২০১১ সালের দিকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবৈধ ঘোষণা দিয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়। কিন্তু আমরা যদি অতীত দেখি, সেখানে বাংলাদেশের দুটি বড় দল বিএনপি ও জাতীয় পার্টির ইতিহাস জানি। তাদের অগণতান্ত্রিক দুঃশাসন ভাঙতে গিয়ে শতশত জীবন দিতে হয়েছে। সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করছি, বাংলাদেশে দায়িত্বরত কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত আমাদের রাজনীতিতে নাক গলানোর ঘটনায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দেশ কি তারা চালাচ্ছেন? নাকি বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা চালাচ্ছেন। তারা গণতন্ত্রের কতটা বুঝে থাকেন। এতে আর যাই হোক সকল সচেতন নাগরিককে অবাক করে দিয়েছে তাদের আচরণ। তাঁরা কি জানেন না আন্তর্জাতিক আইনে ‘রাজনীতি’ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের বিরত থাকার নির্দেশনা রয়েছে।
জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ কার সৃষ্টি? বিএনপির সৃষ্টি জঙ্গিবাদ। যুক্তরাষ্ট্র যখন বাংলাদেশের র্যাব’-এর সাত কর্মকতার ব্যাপারে স্যাংশন দিল তখন কয়েকদিন বিএনপির নেতাদের মুখে খৈ ফুটেছে। যাদের তারা (যুক্তরাষ্ট্র) স্যাংশন দিল, তাদের অধিকাংশ এই সন্ত্রাস দমনে ভূমিকা রেখেছিলেন। সারাদুনিয়া জানে যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার মারাত্মক বিপর্যয়ে। এই যখন অবস্থা তখন তারা কীভাবে আমাদের দেশের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলে? এক তথ্যে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক লোক নিখোঁজ হয়। সেখানে একটি রাজ্য কলম্বিয়া। এ রাজ্যে মানবাধিকারের অবস্থা ভয়াবহ। যুক্তরাষ্ট্রে নাকি শতকরা ত্রিশ ভাগ নারী নির্যাতন মামলার আসামি খালাস পায়। খুন, ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের চিত্র সেখানে ভয়াবহ।
লেখক : দীপক চৌধুরী – উপ সম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, কলামিস্ট ও কথাসাহিত্যিক