1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

এবার যাবে বাড়ী পাতাল গাড়ি

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৩

উড়ালপথের মেট্রোরেল চালুর পর ঢাকাবাসীকে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে পাতাল রেল প্রকল্প। ২০২৬ সালের মধ্যেই ঢাকাবাসী পাতাল রেলে চড়তে সক্ষম হবে। এর মাধ্যমে পাতাল রেলের যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের পূর্ণতা দিতে মেট্রোরেল লাইন-১-এর আওতায় দুটি রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। একটি লাইন বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার অংশ মাটির নিচ দিয়ে যাবে। আর নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়ালপথ। দেশের প্রথম পাতাল রেলের ডিপো নির্মাণ করা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চিতলগঞ্জে। মেট্রোরেলের লাইন-৬ বাস্তবায়নের সুফল ইতোমধ্যে ঢাকাবাসী পেতে শুরু করেছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল নিয়মিতভাবে যাতায়াত করছে। ৪ নভেম্বর মতিঝিল পর্যন্ত চালু হলো মেট্রোরেল লাইন-৬। একইভাবে লাইন-১ বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে লাইন-৬ বাস্তবায়নের বেলায় ঢাকাবাসীকে যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে সে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না পাতাল রেল নির্মাণের ক্ষেত্রে। কেননা পাতাল রেলের লাইন স্থাপনের সব ধরনের কাজই সম্পন্ন হবে মাটির নিচে। স্মর্তব্য, পৃথিবীর যেসব শহরের মেট্রোরেল সফল ও জনপ্রিয় তার বেশিরভাগই মাটির নিচে। পাতাল রেল নির্মাণের মাধ্যমে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত পাতালপথে রেলস্টেশন থাকবে ১২টি- কমলাপুর, রাজারবাগ, মালিবাগ, রামপুরা, আফতাবনগর, বাড্ডা, উত্তর বাড্ডা, নতুন বাজার, নর্দা, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ ও বিমানবন্দর। মেট্রোরেলের পাতাল রেল অংশের নির্মাণের সিংহভাগ খরচ জোগাবে জাপানের জাইকা। বাদবাকি খরচ দেবে বাংলাদেশ সরকার। বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে পাতাল রেলের যোগসূত্র থাকায় তা দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এটি বাস্তবায়ন হলে দেশের শিরস্ত্রাণে সাফল্যের সোনালি পালক হিসেবে বিবেচিত হবে।

পাতাল রেল নির্মাণকাজ ২০২৬ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দৈনিক ৮ লাখ যাত্রী এ পাতাল রেল পথে যাতায়াতের সুযোগ পাবে। এর মধ্যে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত এ রুটে মাটির নিচ দিয়ে চলবে রেল। এটি ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রুট। এ রুটে স্টেশন হবে মোট ১২টি।

এগুলো হচ্ছে- বিমানবন্দর, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩, খিলক্ষেত, যমুনা ফিউচার পার্ক, নতুনবাজার, উত্তর বাড্ডা, বাড্ডা, হাতিরঝিল, রামপুরা, মালিবাগ, রাজারবাগ ও কমলাপুর। আর পূর্বাচল রুটে নতুনবাজার স্টেশনটি হবে পাতালে। এরপর নতুনবাজার থেকে পূর্বাচলের নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জ পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়ালপথে। এ রুটে আবার স্টেশন হবে ৯টি। এগুলো হচ্ছে- নতুনবাজার, যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা, পুলিশ অফিসার্স হাউসিং সোসাইটি, মাস্তুল, পূর্বাচল পশ্চিম, পূর্বাচল সেন্টার, পূর্বাচল পূর্ব, পূর্বাচল টার্মিনাল ও পিতলগঞ্জ ডিপো। পাতাল ও উড়াল মেট্রোরেল পরিবেশ দূষণ ছাড়াই যাত্রীদের যাতায়াত নিশ্চিত করবে। ঢাকার যানজট নিরসনেও অবদান রাখবে এ রেলপথ। ২০৩০ সালের মধ্যে আরও তিন রুটে মেট্রোরেল তৈরির কাজ সম্পন্ন হবে। ঢাকাকে বসবাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকীকরণের কার্যক্রম।

জানা গেছে, এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের দুটো লাইন থাকবে। হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দর থেকে মাটির নিচ দিয়ে কমলাপুর পর্যন্ত এই পাতাল পথে রেলের স্টেশন থাকবে ১২টি। স্টেশনগুলোর নির্ধারিত জায়গাগুলোর মধ্যে রয়েছে- কমলাপুর, রাজারবাগ, মালিবাগ, রামপুরা, আফতাবনগর, বাড্ডা, উত্তর বাড্ডা, নতুন বাজার, নর্দা, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ এবং বিমানবন্দর। আর এমআরটি লাইন-১-এর অপর অংশ নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত উড়ালপথে। স্টেশন থাকবে ৭টি। সেগুলোর নির্ধারিত জায়গা হলো- জোয়ার সাহারা, বোয়ালিয়া, মস্তুল, শেখ হাসিনা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, পূর্বাচল সেন্ট্রাল, পূর্বাচল পূর্ব এবং পূর্বাচল টার্মিনাল। এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের দৈর্ঘ্য হবে ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার।

এদিকে, দেশের প্রথম মেট্রোরেল বা এমআরটি লাইন-৬-এর উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলাচল করছে। এমআরটি-৬ দেশের প্রথম মেট্রোরেল এবং এমআরটি-১ দেশের প্রথম পাতাল রেল। ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় ৬টি মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার। এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকায় ১৩০ কিলোমিটার শক্তিশালী মেট্রো নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে চায় সরকার। তখন মেট্রো নেটওয়ার্কে প্রতিদিন প্রায় ৫০ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে।

পাতাল রেল দেশবাসীকে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির নতুন যুগের সঙ্গে যুক্ত করবে। মানুষ কম খরচে শহরের বাইরে থাকতে পারবে এবং অফিস ও অন্যান্য কাজে সহজে ঢাকায় আসতে পারবে। প্রকল্প এলাকার বাণিজ্যিক উন্নয়ন ঘটবে এবং রুটের চারপাশের সুবিধাগুলোর মূল্য বাড়বে। ওইসব এলাকায় বসবাসকারী স্বল্প আয়ের লোকজন কম ভাড়ার জায়গায় চলে যাওয়ার গরজ অনুভব করবে এবং এতে মানুষ রাজধানীর শহরতলিতে বিকেন্দ্রীভূত হবে। ঢাকা এ মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম মেগা সিটি। বিশ্বের বৃহৎ নগরীগুলোর মধ্যে ঢাকা সবচেয়ে বেশি ঘনবসতি সম্পন্ন। জনসংখ্যার তুলনায় সড়কের সংখ্যা কম হওয়ায় যানজট অনিবার্য হয়ে ওঠে। মেট্রোরেল, পাতাল রেল সেই দুর্বিষহ অবস্থা সহনশীল পর্যায়ে আনতে সহায়তা করবে।

বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং গণতন্ত্র বিকাশে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম ও অতুলনীয়া। বাংলাদেশ, পৃথিবীর মানচিত্রে সত্যিই এক উদাহরণ। এই উদাহরণ অগ্রগতির উদাহরণ। অর্থনীতি ও আর্থ সামাজিক বেশিরভাগ সূচকে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে গেছে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশকে। বাংলাদেশ আজ বড় সম্ভাবনার দেশ। বাংলাদেশের উন্নয়নের এই অগ্রগতিকে একটি ‘উন্নয়ন বিস্ময়’ বলে আখ্যায়িত করা হয়।

লেখক: দিলীপ কুমার আগরওয়ালা – ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেড


সর্বশেষ - রাজনীতি