1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বিএনপির ‘বিদেশ নির্ভরতা’ নতুন নয় 

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৩

২০১৬ সালে পপুলিজম শব্দটা সবখানে উচ্চারিত হয়েছে। এর আগে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে পপুলিস্ট মুভমেন্ট হয়েছিল জার শাসকদের বিরুদ্ধে। উনিশ শতকে। সেটার চাইতে এই পপুলিজম থিওরির বয়ান ভিন্ন। এই পপুলিজমে রাজনৈতিক নেতারা দাবি করেন যে ‘জনগণ’ তাদের সঙ্গেই আছে। তারা আন্দোলন গড়ে তোলার চাইতে প্রেজেন্টেশনের জন্য যতোটুকু ম্যানুফ্যাকচারিং করতে হয় সেটা করায় বেশি ব্যস্ত থাকেন। নতুন পপুলিজমের নৈতিকতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি হলো, ন্যায়নিষ্ঠ ‘জনগণ’ বদমাশ ‘এলিট’ শ্রেণির বিরুদ্ধে লড়াই করছে এটাকে প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু কে কোনো শিবিরের অন্তর্ভুক্ত তা পরিষ্কার থাকে না। কারণ পপুলিজমের ভাষা বড় বেশি আবেগসঞ্চারি ও অনির্দিষ্ট।

যেমন, প্যালেস্টাইন প্রশ্নে ইসরায়েলের পক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে হাসপাতালে লাশের স্তূপ জমলেও সমস্যা নেই। কিন্তু ঢাকায় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তারা তৎপর। এক পুলিশ সদস্য ২৮ অক্টোবর মারা গেছেন। এতেই যুক্তরাষ্টসহ পশ্চিমা মানবাধিকার সংস্থাগুলো চিন্তিত যে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে। ওদিকে আমেরিকায় নির্বাচনের আগে ২০২০ সালের ২৫ মে এক শেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক শওভিন মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে কৃষাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের গলা চেপে ধরেছিল প্রায় নয় মিনিট ধরে। সেখানেই ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়েছিল। এতো কথা বলার কারণ বর্তমানে যে আন্দোলন চলছে এর চরিত্র বোঝার চেষ্টা করা। আগে আন্দোলনে লাশ পড়লে কখনোই প্রশ্ন উঠতো না, ‘এটি ওরা করেছে। আমরা না।’ অন্যদল বলতো না, ‘না আমরা নই, এটি ওরা করেছে।’ এখন পুলিশই পুলিশের হাসপাতালে হামলা করলো কিনা, এ প্রশ্নও তোলা হয়। এই ম্যানুফ্যাকচারিং রাজনীতির সময়ে আবারও বিএনপির মিয়ান আরাফি সিনড্রম দেখা দিলো। এটা নতুন নয়। পুরনো। জজ মিয়া নাটকেরও বহু আগে, শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের দিনের ঘটনায় জিয়াউর রহমানের প্রতিক্রিয়াও সেই সাজানো/বানানো আচরণ দেখা গিয়েছিল। সেদিন জেনারেল জিয়া একদিকে শেভ করছেন একদিকে শেভ করেননি। শাফায়াতকে দেখে স্লিপিং স্যুটে দৌঁড়ে এলেন। শাফায়াতকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘শাফায়াত কী হয়েছে?’ শাফায়াত বললেন, ‘অ্যাপারেন্টলি দুই ব্যাটালিয়ন স্টেজড্ এ ক্যু। বাইরে কী হয়েছে এখনো আমরা কিছু জানি না। রেডিওতে অ্যানাউন্সমেন্ট শুনতেছি প্রেসিডেন্ট মারা গেছেন।’

তখন জেনারেল জিয়া বললেন, ‘সো হোয়াট? লেট ভাইস প্রেসিডেন্ট টেক ওভার। উই হ্যাভ নাথিং টু ডু উইথ পলিটিক্স।’ এরপর একাধিক ষড়যন্ত্র ও ক্যু’র ভেতর দিয়ে সেই তিনিই ক্ষমতায় এলেন। দল করলেন বিএনপি। সেসময়ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা। বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলা। এনিওয়ে পরে বিদেশ নির্ভরতার সিনড্রমে খালেদা জিয়া স্যাংশন চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। স্মরণ করুন, অমিত শাহের কণ্ঠস্বর নকল করা হয়েছিল। ৬ কংগ্রেসম্যানের বিবৃতিও নকল করার কাহিনী ধরা পড়েছে। সব শেষে বাইডেনের উপদেষ্টা মিয়ান আরাফিকে হাজির করা। মিয়ান আরাফি ওইদিন বিএনপি অফিসে যে সিগনিফিকেন্ট কথা বলেছেন, তাহলো তিন বছরের জন্য একটা সরকার ব্যবস্থা গঠন করা হবে। এর মানে এটা তো এমনি এমনি তিনি বলেননি। যাই হোক, তিনি যে উপদেষ্টা নন বাইডেনের এটা এরইমধ্যে জানা গেছে। কিন্তু তাকে বাইডেনের উপদেষ্টা বানানোর ফ্যান্টাসিই ‘বিদেশ নির্ভরতা’। এখন আন্দোলন যতো না হয় ‘জনগণের’ ওপর ভরসা করে এর চেয়ে বেশি হয় বিদেশি শক্তির দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। বিএনপির তিনটি লবিস্ট ফার্ম আছে এখন। একটি হলো, ব্লু স্টার স্ট্র্যাটেজিস। এ সংস্থার প্রধান অংশীদার হলেন হান্টার বাইডেন। তিনি বাইডেনপুত্র। তিনি মাসে ১ লক্ষ ২০ হাজার মার্কিন ডলার নিচ্ছেন নিয়মিত। তিনি মাদকাসক্ত। মামলা রয়েছে। এরপরও অস্ত্র কিনেছেন যেটা আমেরিকার নিয়মে মাদকাসক্ত কেউ অস্ত্র কিনতে পারে না। তো হান্টার বাইডেনের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ও পশ্চিমা মানবাধিকার সংস্থাগুলো শীর্ষ পর্যায়ে ভালো যোগাযোগই থাকার কথা। তো, বিএনপি কী প্রমাণ করতে চাইছে, যে দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সুযোগ নেই। এর জন্যই তো হরতাল-অবরোধ? ওকে।

তারা কি আদৌ নির্বাচন চায়? আমরা দেখেছি, আওয়ামী লীগ কখনোই নির্বাচন বর্জন করেনি। ৩৯টি সিট পেয়েছে। তবু নির্বাচনে গিয়েছে। বিএনপির সঙ্গে জনগণ থাকলে তারা নির্বাচনে যেতে কিছু প্রস্তাব দিতে পারে সরকারকে। যেমন ধরা যাক, ফজরের আজানের আগে ভোট কেন্দ্রে ব্যালট বক্স যাবে না। সেনাবাহিনী ও বিদেশি পর্যবেক্ষক, সাংবাদিকদের উপস্থিতি থাকতে হবে। এরকম কিছু প্রস্তাব তারা সংলাপে বসে দিতে পারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১ নভেম্বরও সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। যদি জনগণ তাদের সঙ্গে থাকেন তবে তো কারচুপি হলেও সমর্থকরা বাধা দেবেন। বিদেশিরাও দেখবেন। কারচুপি না হওয়ার জন্য ফজরের সময় থেকে ভোট কেন্দ্রে পাহারা এবং ফলাফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত থাকা এগুলো করলেই তো হয়। নাকি? কিন্তু তারা সম্ভবত নির্বাচনই চাচ্ছেন না। মিয়ান আরাফির কথার সুরের মতো আরেকটি কথা কয়েকদিন আগে শোনা গিয়েছিল যে, তিনবছর মেয়াদী নতুন সরকার ব্যবস্থা গঠিত হবে। সেটা কারা করবে? মধ্যে ইউনূসকে নিয়েও হৈহল্লার সময় বিএনপি চুপ ছিল ও ইউনূস কী করছেন সেটার অপেক্ষায় ছিল। ফলে বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়, নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় নাকি লবিস্ট গ্রুপের ভরসায় ক্ষমতায় যেতে চায় যেনোতেনো ভাবে। রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধে হান্টার বাইডনের লবিস্ট ফার্ম জেলেনস্কির পক্ষে ছিল ও বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছিলো। কিন্তু গত ৩১ অক্টোবর জেলেনেস্কি বলেছেন পশ্চিমাদের কথায়, প্রশ্রয়ে এ যুদ্ধে জড়িয়ে এখন ডুবতে বসেছেন। দেখেন তাকিয়ে পশ্চিমারা পেছনে নেই আর।

লেখক : দেবদুলাল মুন্না – সিনিয়র সাংবাদিক


সর্বশেষ - রাজনীতি