1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও একটি চেতনার নাম

মানিক লাল ঘোষ : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২২

শহিদ নূর হোসেন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক সাহসী যোদ্ধার নাম। গণতন্ত্র মুক্তি পাক-স্বৈরাচার নিপাত যাক বুকে-পিঠে ধারণ করে অমিত তেজ আর বুকভরা সাহস নিয়ে মিছিলে নেমে এক যুবক ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর বুকের রক্তে ঢাকার পিচঢালা কালো রাজপথকে করেছিল রক্তে রঞ্জিত। সে আমাদের ’৫২ ’৬৯ ’৭১ এর সাহসী দেশপ্রেমিকদের গর্বিত উত্তরসূরি, আমাদের সংগ্রামী চেতনার আরেক নাম। সেদিন স্বৈরশাসকের লেলিয়ে দেওয়া পুলিশ বাহিনী গুলি করে হত্যা করেছিল গণতন্ত্র রক্ষার এই সাহসী বীরকে। তার এই সাহসী আত্মত্যাগ আমাদেরকে আন্দোলিত করে, চেতনাকে জাগ্রত করে প্রতিটি লড়াই-সংগ্রামে। শহিদ নূর হোসেন আজ একটি আন্দোলনের মাইলফলক। গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গকারী নূর হোসেনের সাহসী আত্মদানকে আমার সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করি।

১০ নভেম্বর এলেই রাজপথে যাদের ঠিকানা তাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটায় শহিদ নূর হোসেন, তারা বার বার ফিরে যায় ১৯৮৭ সালে। বিশেষ করে তৎকালীন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যারা জড়িত ছিলো।

১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর— ১৫ দল, ৭ দল ও ৫ দলের সচিবালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি ছিলো। সেই কর্মসূচির সাথে সম্পৃক্ত ছাত্র সংগঠনগুলোর সমর্থনে অবস্থান ধর্মঘট ঘেরাও কর্মসূচিতে রূপ লাভ করেছিল। স্বৈরশাসকের সকল বাধাকে উপেক্ষা করে ১০ নভেম্বর সকাল থেকেই সচিবালয়ের চারদিকে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার মিছিল সমবেত হয়। তখন তোপখানা রোডের মুখে পুলিশ বক্স পেরিয়ে শুরু হয় নূর হোসেনদের সাহসী মিছিল, সাহসী যুবক উদাম গায়ে লিখেছিল ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক-স্বৈরাচার নিপাত যাক’।

সেদিন ওই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সাহসী নেত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সমাবেশ উপস্থিত হওয়ার সাথে সাথে শুরু হয় পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ। আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রনেতাদের শুরু হয় সংঘর্ষ। পল্টন তখন রণক্ষেত্র। এরই মধ্যে খবর আসে পুলিশের গুলিবর্ষণে শহিদ হয়েছেন নূর হোসেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য।

নূর হোসেনের আত্মদানের মাধ্যমে সেদিন গণতন্ত্রের নতুন সংগ্রাম শুরু হলো। শুরু হলো নূর হোসেনের বুকে পিঠে লেখা সেই স্লোগান নিয়ে আন্দোলনের নতুন যাত্রা। নূর হোসেন উদ্বুদ্ধ করল লাখ লাখ ছাত্র-যুবকদের। সেই সংগ্রামের ধারায় ১৯৯০ সালের ৪ ডিসেম্বর স্বৈরাচারী শাসক হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

২৯ বছর পার হয়ে গেলেও মূল্যায়ন হয়নি তার এ আত্মদানের। আজও পূরণ হয়নি নূর হোসেন স্বপ্ন, সেদিন নূর হোসেনরা স্বপ্ন দেখেছিলো স্বৈরাচারের ধ্বংসস্তুপের ওপর গণতন্ত্রের পতাকা, কিন্তু সেই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণের স্বপ্ন আজও স্বপ্নই থেকে গেল।

গণতন্ত্রর রক্ষার আবেদন নিয়ে ১০ নভেম্বর প্রতিবছর পালিত হয় শহিদ নূর হোসেন দিবস। তাই নূর হোসেন আত্মার প্রতি শুদ্ধা জানাতে হলে শুধু টিভি বা মিডিয়া কভারেজ নয়, বাস্তবিক অর্থে দুর্নীতিমুক্ত, সাম্প্রদায়িকতামুক্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। গণতন্ত্রের শত্রু, তথা দুর্নীতিবাজ কালোটাকার মালিক, কালো আইন ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গণতন্ত্র সংকটমুক্ত হোক, নূর হোসেনর আত্মা শান্তি পাক-এটাই আমাদের কামনা।

 

লেখক: মানিক লাল ঘোষ – ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-এর সহ সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।


সর্বশেষ - রাজনীতি