ভোলা থেকে গ্যাস আনতে তিন দেশীয় কোম্পানি প্রস্তাব দিয়েছে। পেট্রোবাংলাকে দেওয়া প্রস্তাবে কোম্পানিগুলো বলছে, তারা ভোলা থেকে সিএনজিতে রূপান্তরিত করে গ্যাস এনে দিতে পারবে দেশের অন্যান্য জায়গায়। তবে পেট্রোবাংলা বলছে, এখনও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি তারা পর্যালোচনা করে দেখছে আদৌ এটি কতটা অর্থনৈতিকভাবে উপযোগী।
ভোলা থেকে গ্যাস এনে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া কোম্পানি তিনটি হচ্ছে– ইন্ট্রাকো সিএনজি, সুপার গ্যাস ও অফসিডিয়ার সিএনজি। এই কোম্পানি তিনটিরই দেশে সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন রয়েছে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম বলেছেন, ভোলা থেকে প্রতিদিন ৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সিএনজি করে নিয়ে আসা হবে। এতে দেশের জাতীয় গ্রীডে দৈনিক অন্তত ৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যোগ হবে।
পেট্রোবাংলার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখন আমরা যেসব ইনফরমেশন জোগাড় করছি তার পুরোটা ইন্টারনেট থেকে। আবার যে তিনটি কোম্পানি আমাদের কাছে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে তারাও আমাদের নানা ধরনের ইনফরমেশন দিচ্ছে। বিষয়টি একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে গ্যাস আনার খরচ বিবেচনা করেই বলা যাবে এটি করা সম্ভব কি না।
দেশের শিল্প কারখানাগুলো এই পদ্ধতিতে ট্রাকে সিলিন্ডারে করে গ্যাস পরিবহন করে। যদিও তার পরিমাণ খুবই কম। বেশি পরিমাণ গ্যাস এই পদ্ধতিতে পরিবহন করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে পেট্রোবাংলা।
পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, ভোলার গ্যাসক্ষেত্র থেকে এখন মোট ১২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনযোগ্য। এরমধ্যে ৬৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে ভোলায়। এর বাইরে উদ্বৃত্ত হিসেবে রয়ে যাবে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এই গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে বরিশালে আনার প্রাথমিক পরিকল্পনা অনেক আগেই করা হয়েছিল৷ কিন্তু নদীর নিচ দিয়ে রিভারক্রসিং করে পাইপলাইনের এই গ্যাস আনাটা বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হবে না বলে পরে তা পিছিয়ে যায়। কিন্তু এখন ইউক্রেন রাশিয়া সংকটের কারণে সারাবিশ্বে যখন জ্বালানি সংকট, স্পট মার্কেটের এলএনজির দাম অনেক বেড়ে গেছে। এই অবস্থায় সরকার স্পট মার্কেটের এলএনজি আমদানি করতে না পারার কারণে দেশে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সংকট কাটাতে এবার ভোলার গ্যাস জরুরি ভিত্তিতে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা জানান, ভোলার গ্যাস আমরা সিএনজিতে রূপান্তরিত করে কাভার্ডভ্যানে করে নিয়ে আসার প্রাথমিক পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছি আমরা। এতে করে অল্প জায়গায় বেশি গ্যাস আনা সম্ভব হবে। এখন সেই গ্যাস নদীপথ হয়ে সড়কপথে আনাটা কতখানি নিরাপদ হবে তা নিয়েই আমরা পর্যালোচনা করছি। নিরাপত্তার পাশাপাশি কারিগরি ও আর্থিক দিকও দেখা হচ্ছে।
১৯৯৫ সাল থেকে ভোলায় গ্যাস পাওয়া যায়। কিন্তু ভোলা শাহবাজপুর ছাড়াও ভোলা নর্থ এ গ্যাস পাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাপেক্স। ভোলায় আরও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনার কথাও সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে। কিন্ত সেখান থেকে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ করার মতো কোনও পাইপলাইন নেই।