1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

কোভিড ভ্যাকসিনেশন ও ওয়াসা প্রকল্পে বাংলাদেশকে ৩৩০ মিলিয়ন ইউরো দেবে ফ্রান্স

eb-editor : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ১২ নভেম্বর, ২০২১

ফ্রান্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৫ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশকে ৩৩০ মিলিয়ন ইউরো দিতে সম্মত হয়েছে দেশটি। এর মধ্যে ২০০ মিলিয়ন ইউরো মহামারিকালীন বাজেট সহায়তা এবং বাকি অর্থ একটি টেকসই পানি সরবরাহ প্রকল্পের উন্নয়নের জন্য দেওয়া হবে।

ফ্রান্সের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনাকালে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এই সংকট নিয়ে আলোচনা করার জন্য ফ্রান্সকে অনুরোধ করেন তিনি। জাতিসংঘ কাউন্সিলের স্থায়ী সদস্য ফ্রান্স।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, এজেন্স ফ্রাঙ্কাইজ ডি ডেভেলপমেন্ট (এএফডি)-এর ১৩০ মিলিয়ন ইউরোর অতিরিক্ত ঋণটি ঢাকা টেকসই পানি সরবরাহ প্রকল্পের উন্নয়নে দেওয়া হয়েছে। এ ঋণ পরিশোধের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২০ বছর। এছাড়া, ৭ বছরের অতিরিক্ত সময়ও দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশকে। নতুন এই অনুদানের মাধ্যমে বাংলাদেশে এএফডি-এর মোট সহায়তা ১ বিলিয়ন ইউরো ছাড়িয়ে গেছে। এর আগে ৮০০ মিলিয়ন ইউরোর সহায়তা দিয়েছিল তারা।

ঢাকায় টেকসই পানি সরবরাহ প্রকল্পটি চালু করা হয় ২০১৩ সালে। এ প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (২৫০ মিলিয়ন ডলার), ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক (১০০ মিলিয়ন ডলার) এবং এএফডি।

দেশের গন্ধর্বপুর জেলায় স্থাপিত এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো ভূ-পৃষ্ঠের পানি ব্যবহার করে পানীয় জলের উৎপাদন বৃদ্ধি ও টেকসইতা নিশ্চিত করা। তাছাড়া, ঢাকার মানুষের, বিশেষ করে নারীদের এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার উন্নয়নে অবদান রাখাও এই প্রকল্পের দায়িত্ব।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে দেশটি।

ফরাসি নেতাদের উদ্ধৃতি দিয়ে মোমেন বলেন, “রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানে না পৌঁছানো পর্যন্ত আমরা আন্তরিকভাবে বাংলাদেশের পাশে থাকবো।” ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী জিন কাস্টেক্সসহ উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সাথে শেখ হাসিনার আলোচনার বিষয়ে বক্তব্য রাখার সময় এ কথা বলেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফরাসি নেতাদের অবহিত করা হয়েছে যে বাংলাদেশ বিষয়টি সমাধানের জন্য বিভিন্ন আঙ্গিকে চেষ্টা করছে।

“আমরা দ্বি-পাক্ষিক, ত্রি-পাক্ষিক ও বহুপাক্ষিকভাবে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি। এমন কি আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও (আইসিটি) গিয়েছি।”
মিয়ানমার এই সমস্যা সৃষ্টি করেছে এবং এর সমাধানও তাদের হাতে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। মিয়ানমারের সাম্প্রতিক সামরিক অভ্যুত্থান ইস্যুর ব্যাপারে তিনি বলেন, এই অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ মিয়ানমারের সামরিক জান্তা শাসকদের সাথে সরাসরি কোন আলোচনায় বসেনি।

মোমেন বলেন, “আমরা ফ্রান্সের নেতাদের বলেছি, পশ্চিমা বিশ্ব মিয়ানমারের সাথে তাদের বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে এটি বন্ধ করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা তাদেরকে বলেছি ১৯৭০ ও ১৯৯০ এর দশকে মিয়ানমারে সামরিক সরকার ছিল। কিন্তু ওই সময় তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করেছে।”

এই প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৯২ সালে প্রায় দুই লাখ ৫৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসে এবং তাদের মধ্যে দুই লাখ ৩৬ হাজার জনকে সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে ফেরত পাঠানো হয় এবং ১৯৭০’র দশকেও একই কাজ করা হয়।

তিনি আরও জানান, “আমরা ফ্রান্সকে বলেছি, গত চার বছর ধরে দেশটির রাখাইন রাজ্যে কোন সংঘাত ঘটেনি। এখানে কোন সহিংসতা হয়নি। কাজেই, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর এখন উপযুক্ত সময়।” মোমেন আরও জানান, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে সম্মত আছে। “তারা নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা বলেছে। মর্যাদা সহকারে রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত আসার জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির ব্যাপারেও তারা রাজি। তবে তারা কোনো কিছু বাস্তবায়ন করছে না। আমরা আমাদের কষ্টের কথা বলেছি।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফ্রান্সের নেতারা বাংলাদেশের কাছে জানতে চেয়েছে রোহিঙ্গা ইস্যুর ব্যাপারে আসিয়ান’কে কিছু জানানো হয়েছে কি-না। তিনি বলেন,”আমরা উত্তরে বলেছি-অবশ্যই, আমরা আসিয়ান’কে জানিয়েছি। ফ্রান্স বলেছে, তারা আসিয়ানের সাথে কথা বলেছে। তারা আসিয়ানকে এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।” মোমেন বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এক্ষেত্রে আসিয়ানের ধীর গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং সংস্থাটি কোনো সদস্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কোন কিছু বলতে পারে না।

“রোহিঙ্গা ইস্যুতে ফ্রান্সের নেতাদের সাথে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে,” বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মোঃ মোকাম্মেল হোসেন জানান, কর্মীদের জ্ঞান আদান-প্রদান ও প্রশিক্ষণে সহযোগিতা জোরদার করতে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ফ্রান্সের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

এই চুক্তি বিমান নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজনে সহায়তা করবে বলে জানান তিনি।

বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ - রাজনীতি