সারাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর উদ্দেশ্যে বড় ধরনের নাশকতার ছঁক কষছে বিএনপি-জামায়াত-এমনটাই গোয়েন্দা সংস্থার দাবি। বিএনপি-যুবদল ও জামায়াত-শিবিরের অন্তত দুই ডজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতার গতিবিধির ওপর নজরদারি শুরু করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। আকস্মিকভাবে রাজধানীর ৯ বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সিসি টিভির ভিডিও ফুটেজ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি শীর্ষ নেতার সঙ্গে এক নেত্রীর ফোনালাপ, গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এ ধরনের তথ্য উপাত্ত পাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর থেকে দেশের জেলা শহর, মেট্রোপলিটন এলাকা ও রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর স্থানে নিরাপত্তা জোরদার ও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশ সদর দফতর ও গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের খোঁজ নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অনেকে নেতাই বাড়িতে রাত কাটাচ্ছেন না। দিনের বেলায়ও খুব সাবধানে সতর্ক অবস্থায় গা ঢাকা দিয়ে চলছেন। রাজধানীর কয়েকজন যুবদলের নেতাকে খোঁজা হচ্ছে যাদের বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সম্পৃক্ততা থাকার তথ্য মিলেছে। ৯টি বাসে অগ্নিসংযোগের মোট ১৪টি মামলায় ৩২ জনকে গ্রেফতার করে আদালতের আদেশে ২৮ জনকে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড নিয়ে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে তদন্তকারী দলটি।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পরাজয়ে বাস পোড়ানোর নাশকতার এ পথ বেছে নেয় বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আবারও নাশকতা ও নৈরাজ্যের পথ বেছে নিবে এমনটাই ধারণার অতীত। কারণ বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বর্তমানে সাজাপ্রাপ্ত এবং সরকারের অনুকম্পায় কারাগারের বাইরে মুক্ত জীবন যাপন করছেন। বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের বাস পোড়ানোর নাশকতার বিষয়টি সরকারের শীর্ষ পর্যায়কে বিক্ষুব্ধ করবে- এটাই স্বাভাবিক। হঠাৎ করে কেন দলটির নেতাকর্মীরা হঠকারী ভূমিকায় অবতীর্ণ হলো তার খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা।
গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, বিজয়ের মাস ডিসেম্বরকে সামনে রেখে স্বাধীনতাবিরোধীরা তৎপর আছে এমন খবর পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা। ডিসেম্বর মাসের পর আগামী ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের বর্ষপূর্তি। এই নির্বাচনকে মেনে নেয়নি বিএনপি-জামায়াত। সামনের মাসগুলোকে সামনে রেখে সারাদেশেই বড় ধরনের নাশকতা ও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছে গোয়েন্দা সংস্থা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে সরকারকে ব্যতিব্যস্ত রেখে উন্নয়ন ও অগ্রগতি ধারাকে ব্যাহত করার জন্য নাশকতার পথ বেছে নেয়া হতে পারে। এজন্য পেশাদার দুর্বৃত্ত, জঙ্গীগোষ্ঠীর সদস্যদের ভাড়া করা হতে পারে বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। সামনে রেখে বড় ধরনের নাশকতার ছক কষেছে দুর্বৃত্তরা এসব তথ্য পেয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ইতোমধ্যে নাশকতা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। সব জেলা ও মেট্রোপলিটন এলাকায় নিরাপত্তা বাড়াতে পুলিশ সদর দফতর বিশেষ বার্তা পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সদর দফতরের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দিনে দুপুরে রাজধানীর জনাকীর্ণ সড়কে নয় যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গনও ফের উত্তপ্ত হচ্ছে কিনা তার খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।