দৃশ্যমান হচ্ছে বহু প্রতীক্ষিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন। ১০০ কিলোমিটার এই রেললাইনে সাতকানিয়া অংশে মাত্র ১০০ মিটার রেললাইন বসানোর কাজ বাকি ছিল। রবিবার (৮ অক্টোবর) সকাল থেকে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক এ কাজ করছেন। সোমবারের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মফিজুর রহমান।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘সোমবার থেকে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের পুরো ১০০ কিলোমিটার রেললাইন দৃশ্যমান হবে। এরপর আগামী কয়েক দিন কোথাও কোনও ত্রুটি বা সমস্যা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। আগামী সপ্তাহে এ রুটে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৯০ শতাংশ। চলতি মাসেই কক্সবাজারে নির্মাণাধীন রেলওয়ে স্টেশনের পুরো কাজ শেষ হবে। বাকি স্টেশন ও সড়কের কাজ কয়েক মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।’
পটিয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘গত ১ আগস্ট থেকে কালুরঘাট ব্রিজের সংস্কার কাজ শুরু হয়। ৭ আগস্ট থেকে ব্রিজ দিয়ে ট্রেন এবং যানবাহন চলাচল একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগেই ৬ আগস্ট ছয়টি নতুন বগি এবং একটি দুই হাজার ২০০ সিরিজের ইঞ্জিন আনা হয়। যেগুলো রাখা আছে পটিয়া রেলওয়ে স্টেশনের সামনে। কোরিয়া থেকে আনা এসব বগিতে ৬০ জন করে যাত্রী বসতে পারবেন।’
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেললাইন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরমধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার এবং রামু থেকে কক্সবাজার ১২ কিলোমিটার।
প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের প্রায় সাত বছর পর ২০১৮ সালে ডুয়েল গেজ এবং সিঙ্গেল ট্র্যাক রেললাইন প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রথমে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এতে অর্থায়ন করেছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার। এটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফার্স্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৮ শতাংশ। ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৯২ কিলোমিটার অংশে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।