1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

একাত্তরের গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের কাছে তারা ক্ষমা চাইবে কবে?

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ১ অক্টোবর, ২০২৩

আওয়ামী লীগ, বিএনপিতে এখনো এমন নেতা আছেন, যারা মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গনে আহত হন। তাদেরকে একাত্তর সালে পাকিস্তানি সেনারা হত্যা চেষ্টা, বা আহত করেন পাকিস্তানকে চীনের দেয়া অস্ত্রশস্ত্রে। একাত্তরে পাকিস্তানি ‘সোনাবন্ধুকে’ চীনের তখনকার প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইয়ের সরকার অস্ত্রশস্ত্র দেয় বাঙালি নিধনে। সেই সময় যুক্তরাষ্ট্র ও চীন শুধু পাকিস্তানের গণহত্যার প্রতি নীরব সমর্থনই জানায়নি, যে অস্ত্র দিয়ে পাকবাহিনী বাঙালি নিধন চালায়, এর অধিকাংশ এসেছিলো ওই দুই দেশ থেকে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পরও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশ প্রশ্নে বিতর্কে চীন দাবি করে, ‘পূর্ব পাকিস্তানে’ যারা সামরিক তৎপরতায় লিপ্ত ছিলেন, তারা ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে বাংলাদেশকে চীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতিও দেয়নি।

একাত্তর সালে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত স্বাধীনতাযুদ্ধকে ঘিরে কথিত ‘অবজ্ঞাভরা’ যে বক্তব্য দেন, চীনের ‘ঋণের ফাঁদে আওয়ামী লীগের সরকার পা দিয়েছে’ বলে ইতিহাসের পাতা থেকে সেই কর্মকাণ্ড মুছে ফেলা সম্ভব নয়। সেই চীনের কূটনৈতিক ছায়াতলে থেকে বায়ান্ন বছর পর এসে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির কারণে দেশটির মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ভূমিকার জন্য ‘জনমত তৈরির’ চেষ্টা পক্ষপাতমূলক। যা শর্ষিনার পীর, হেফাজত, চরমোনাইয়ের পীরের মতো স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী দল, সংগঠনগুলোকে বগলের নিচে রেখে জামায়াতের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার আজকালের আহ্বানের মতো বিষয়। বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদেরকে পুরস্কৃত করা, প্রশ্রয় দেয়া এইচ এম এরশাদকে মহাজোটে রেখে একই অভিযোগে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপিকে দমনের পক্ষে জনমত সৃষ্টির মতো। বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদেরকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনে এরশাদের ন্যাক্কারজনক ভূমিকাকে তার দল আওয়ামী লীগের জোটে আছে বলে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই।

২০১৩ সালে নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ‘ব্লাড টেলিগ্রাম’ বইয়ের লেখক গ্যারি ব্যাস লেখেন, ‘একাত্তরের গণহত্যা ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের নিক্সন-কিসিঞ্জারের অপরাধ। কিন্তু সে অপরাধের কথা আমরা ভুলে গেছি’। ব্যাসের এ কথা বাংলাদেশেরই প্রতিধ্বনি। যুক্তরাষ্ট্র, চীন এখন বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার। তবুও সত্য, দুই দেশের হাত থেকে একাত্তরের গণহত্যার রক্তচিহ্ন এখনো মুছে যায়নি। দেশ দুটি বাংলাদেশের কাছে গণহত্যায় ভূমিকার জন্য আজ পর্যন্ত ক্ষমা চায়নি, আনুষ্ঠানিক দু:খ প্রকাশ করেনি। তারা ক্ষমা না চাওয়ায় বাঙালির বুকে ঘৃণার দগদগে ঘা রয়ে গেছে। দুটি দেশকেই ক্ষমা চাইতে হবে। বায়ান্ন বছর কেটে গেছে বলে অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনায় কোনো অন্তরায় হতে পারে না। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শত বছর পরও ক্ষমা প্রার্থনার অসংখ্য নজির আছে।

ব্রিটিশ লেখক ক্রিস্টোফার হিচেন্স বলেছিলেন, ‘একাত্তরে গণহত্যায় সমর্থনের জন্য একা ইয়াহিয়া খান ও পাকিস্তানি জেনারেলদের নয়, হেনরি কিসিঞ্জারেরও বিচার হওয়া উচিত।’ গত বায়ান্ন বছরের মধ্যে দেশের কোনো সরকার এ দাবি জানাতে পারেনি, এমনকি কোনো সরকার চীন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গণহত্যার জন্য ক্ষমার দাবিও তোলেনি।

লেখক : হাসান শান্তনু – সাংবাদিক


সর্বশেষ - রাজনীতি