করোনা মহামারির টানা দুই বছরের আর্থিক সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী জামদানি পল্লীর তাঁতিরা। কারখানাগুলোতে পুরোদমে ব্যস্ত কারিগররা। কিন্তু পরিশ্রম অনুযায়ী ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন তারা। এদিকে এ শিল্পের প্রচার ও প্রসারে নানা উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে বিসিক।
১৫ বছর ধরে শহীদুল ইসলাম রূপগঞ্জ উপজেলার নোয়াপাড়ার জামদানি পল্লীর কারিগর। জামদানি বুননের মাধ্যমেই পরিবারের খরচ চালান তিনি। তিনি বলেন, কাজের চাপ অনেক বেশি। আর আমি যে ডিজাইনগুলো করছি, তার সর্বনিম্ন মূল্য হচ্ছে ১০ হাজার।
তার মতো একইভাবে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা ব্যস্ত থাকেন অন্য কারিগররাও। ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকা মূল্যের জামদানিও তৈরি করেন তারা। তবে কারিগরদের আক্ষেপ, পরিশ্রম অনুযায়ী উপযুক্ত মজুরি পাচ্ছেন না তারা।
এবিষয়ে এক জামদানি কারিগর বলেন, কাজের পরিস্থিতি মোটামোটি ভালো, তবে লোডশেডিং এর জন্য কাজ করতে পারছি না। তাছাড়া বাজারে নিত্যপণ্যের যে দাম যে অনুযায়ী আমাদের মজুরি ১০ টাকাও বাড়েনি।
ক্রেতাদের আকর্ষণে নিত্যনতুন ডিজাইন ও বাহারি রঙের জামদানি পাইকারি দোকানগুলোতে সাজিয়ে রাখা হয়। তাছাড়া বেচাবিক্রিও আগের তুলনায় ভালো।
এবিষয়ে পাইকারি বিক্রেতারা জানান, করোনা মহামারির সময়ে বাজারে ধস নেমেছিল। তবে বর্তমানে অবস্থা ভালো। বাজারে জামদানির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। অনেকেই জামদানি শাড়ি কিনছেন।
এদিকে জামদানি পল্লীতে চলাচলের রাস্তাগুলোর খুবই বেহাল অবস্থা। বর্ষাকালে পানি জমে থাকে। ফলে দ্রুত রাস্তা মেরামতের দাবি জানান ক্রেতা ও বিক্রেতারা। এক ব্যবসায়ী বলেন, রাস্তাঘাট অনেক খারাপ। সামান্য বৃষ্টি হলে ড্রেনের পানি ও বৃষ্টির পানিতে রাস্তা কদাচার হয়ে যায়। এতে পরিবেশ ঠিক থাকে না। আমাদেরও হাঁটাচলায় বিঘ্ন হয়।
অপরদিকে জামদানি শিল্পকে এগিয়ে নিতে তাঁতিদের আন্তর্জাতিক ও দেশের প্রদর্শনীগুলোতে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে বলে জানান নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জ বিসিক জামদানি শিল্পনগরীর কর্মকর্তা বায়েজিদ হোসেন।
রূপগঞ্জের জামদানি পল্লীতে ৩০০ এরও বেশি কারখানায় ২ হাজারের বেশি কারিগর কাজ করেন। প্রতি শুক্রবার এখানে ভোর ৫টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত সাপ্তাহিক হাট বসে।