ড. আতিউর রহমান
নিঃসন্দেহে দিনবদলের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের কৃষিও বদলে গেছে। কৃষি বলতে এখন আর শুধু ফসল উৎপাদন বোঝায় না। ফসলের উৎপাদনশীলতার উন্নতির পাশাপাশি সবজি, মাছ, মুরগি, গবাদি পশু, ফুল-ফল উৎপাদনে অনেক শিক্ষিত উদ্যমী তরুণ উদ্যোক্তা যুক্ত হচ্ছেন। বিদেশে কিছুদিন কাজ করে খানিকটা পুঁজি সংগ্রহ করে অনেক উদ্যমী প্রবাসী এখন বাংলাদেশে ফিরে এসে মাছের চাষ, মাল্টার বাগান, ড্রাগন ফল, ফুলের চাষ, মুরগি, গরুর খামারসহ নানা উদ্যোগ গড়ে তুলছেন। তাঁদের দেখাদেখি অন্য শিক্ষিত তরুণরাও নতুন করে কৃষিতে ঝুঁকছেন। তাঁদের কারণেই কৃষি আজ উদ্যমী উদ্যোক্তাদের কাছে সবচেয়ে আশা-জাগানিয়া এক ভরসার খাত হিসেবে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের নয়া কৃষির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার এই বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরির জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নীতি-সমর্থনের কথা না বললেই নয়। প্রতিটি বাজেটে তিনি কৃষি খাতে বাড়তি বাজেট বরাদ্দ দিয়ে যাচ্ছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশের অংশ হিসেবে তিনি গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করার লক্ষ্যে যান্ত্রিকীকরণ, পেমেন্ট পদ্ধতি এবং সরবরাহ চ্যানেল ডিজিটাল করার জন্য নানামুখী নীতি-সমর্থন দিয়ে চলেছেন। এই দুর্যোগকালেও তিনি কৃষি ও গ্রামীণ খুদে ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা দিয়েছেন। এই কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়নই এ সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকার ব্যাংকগুলোর ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে।
মানতেই হবে, কৃষিসহ অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কৌশল গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ফলে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন তথা কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিস্ময়কর উন্নতি হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে অবস্থানরত কূটনীতিকরা তাঁর এই জনমুখী নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। তবে তাঁর উন্নয়ন অভিযাত্রা করোনা সংকটের ফলে বেশ খানিকটা ধাক্কা খেয়েছে। তা সত্ত্বেও দুর্যোগ দুঃসময়ে জেগে ওঠার যে ঐতিহ্য আমাদের রয়েছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই অন্তর্নিহিত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে যেভাবে চলমান অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলার কৌশল গ্রহণ করেছেন, তার সুফল বাংলাদেশ এরই মধ্যে পেতে শুরু করেছে। এ কথা ঠিক যে বিশ্বজুড়েই করোনাকালে জীবন ও জীবিকার নানা সংকট দেখা দিয়েছে। দ্য ইকোনমিস্ট তার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ সংখ্যায় বলেছে, দারিদ্র্য নিরসনে বিশ্ব যে সাফল্য অর্জন করেছিল গত দশকজুড়ে তা করোনা দ্রুতই কেড়ে নিচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের সূত্র ধরে সাময়িকীটি দাবি করেছে যে অতিদরিদ্রের সংখ্যা এ বছর সাত থেকে ১০ কোটি বাড়বে। আর জাতিসংঘ বলছে, মৌলিক আবাসন, পরিষ্কার পানি বা শিশুর বুভুক্ষার মতো সূচকের অবনতিকে এসবের সঙ্গে যোগ করলে এই সংখ্যা ২৪ থেকে ৪৯ কোটি বেড়ে যেতে পারে। এই মহামারি থেকে বাঁচার জন্য উন্নত দেশগুলো তাদের জিডিপির ১০ শতাংশ খরচ করতেও দ্বিধা করেনি। উন্নয়নশীল দেশগুলো গড়পড়তা ৩ শতাংশ খরচ করেছে এই সংকট থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য। গরিব দেশের পক্ষে ১ শতাংশ খরচ করাই মুশকিল হয়ে গেছে। তবে বাংলাদেশ জিডিপির ৪ শতাংশের বেশি প্রণোদনা কর্মসূচিতে ব্যয় করছে। কৃষির জন্য আলাদা কর্মসূচি দিয়েছে। কিন্তু প্রচলিত নিয়ম-কানুন, কাগজপত্রের চাপে কৃষক খুব সহজেই সরকারের দেওয়া এই অর্থ পাচ্ছে, এটি দাবি করা ঠিক হবে না। সে কারণেই গ্রামীণ প্রণোদনা বাস্তবায়নের হারও এখনো আশাতীত নয়।
এমনি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আমাদের প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন যে বিশ্বজুড়ে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা যে আরো বাড়ছে তা অস্বীকারের উপায় নেই। বাংলাদেশেও দারিদ্র্যের হার এখন বেড়ে ২৯ শতাংশ হয়েছে (সূত্র : বিবিএস)। অভাব-অনটন বেড়েছে। তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন যে বাংলাদেশের মানুষকে এর আঁচ থেকে বাঁচাতে তিনি বদ্ধপরিকর। আর তাঁর এই সংকল্পের মূলে রয়েছে বাংলাদেশের কৃষির সাফল্য। বাংলাদেশ একসময় ব্যাপক খাদ্যঘাটতির দেশ ছিল। তাকে বলা হতো ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’। সেখান থেকে দেশটি কৃষির নানা খাতে প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার করে উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে।
তবে খাদ্য মজুদ থাকলেও কিন্তু দুর্ভিক্ষ হয়। মানুষের খাদ্য কেনার সক্ষমতা না থাকলেই তেমনটি হয়। বাংলাদেশ সেদিক থেকেও ভাগ্যবান। বঙ্গবন্ধুকন্যা খুবই দ্রুত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কাজে নেমে পড়েছেন। গরিব-দুঃখী মানুষের জন্য প্রচলিত সামাজিক সুরক্ষার পাশাপাশি নতুন নতুন নগদ সহায়তা ও ত্রাণ কর্মসূচি চালু করেছেন। একই সঙ্গে মানুষ যাতে দ্রুতই কাজে নেমে পড়তে পারে, সে জন্য অর্থনীতি আবার খুলে দিয়েছেন। মহামারি শুরুর প্রথম দু-তিন মাসে অনানুষ্ঠানিক খাতের মানুষের কাজ ছিলই না বলা চলে। কৃষকের পণ্যও বাজারে আসতে পারছিল না। এ অবস্থা খুব বেশিদিন চলতে দেননি তিনি। তা ছাড়া আনুষ্ঠানিক বড় শিল্প গার্মেন্ট খাতের কলকারখানা সেই অর্থে বন্ধই ছিল না। এসব কারখানার শ্রমিকদের বেতন যাতে ঠিকমতো দেওয়া হয় তার ব্যবস্থা করেছেন। মাত্র ২ শতাংশ হারে ঋণের ব্যবস্থা করেছিলেন গার্মেন্ট মালিকদের জন্য। সেই টাকা শ্রমিকদের মোবাইল ব্যাংক হিসেবে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মনে রাখা চাই, গার্মেন্ট শ্রমিকরাও প্রধানত কৃষকের সন্তান। এর পাশাপাশি জিডিপির ৪.০৩ শতাংশ বা ১৩.২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রণোদনা কর্মসূচি চালু করেছে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক।
এরই মধ্যে কৃষিঋণের বিতরণ বেড়েছে। পরিবহনব্যবস্থা সচল হওয়ায় এখন কৃষকের উৎপাদিত পণ্য বেশ খানিকটা সঠিক দামে বিক্রি হচ্ছে। এ কথাও ঠিক, কৃষকদের উদ্বৃত্ত পণ্য বিক্রির সমস্যা দেখা দিয়েছিল এপ্রিল-জুন সময়টায়। সে সময়ে পোল্ট্রি, মাছ, সবজি, দুধ বিক্রির সরবরাহ চ্যানেল ভেঙে পড়েছিল। এখন অবশ্য সে অবস্থা কেটে গেছে। বরং সবজির দাম অনেক বেড়ে গেছে। শহরের মধ্যেও কম আয়ের মানুষের বাজেটে টান পড়ছে। এখন প্রতিদিন মোবাইল ব্যাংকেই দুই হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। তাই গ্রামীণ অর্থনীতিতেও চাহিদার কমতি নেই। যাঁরা প্রবাস থেকে ফিরে এসেছিলেন তাঁরাও ধীরে ধীরে তাঁদের কর্মস্থলে যেতে শুরু করেছেন। তবে নগরের অনানুষ্ঠানিক খাতের চাঞ্চল্য এখনো আগের পর্যায়ে আসেনি। সে কারণে যাঁরা গ্রামে চলে গিয়েছিলেন কাজ ফেলে, তাঁদের আর্থিক কষ্ট এখনো বেশ খানিকটা রয়েই গেছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অবশ্য কৃষি এ বছর খানিকটা চাপের মুখে রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ছাড়াও বেশ কয়েকবার বন্যা হওয়ার কারণে এ বছর দেশের এক-চতুর্থাংশের বেশি অঞ্চলে কৃষকের আমন ধান উৎপাদনে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গ ও মধ্যাঞ্চলে ফের বন্যা আসায় আমনের ফলন নিয়ে শঙ্কা জাগছে বৈকি। আমনের ঘাটতি পূরণে আগাম প্রস্তুতি খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। সে জন্য কৃষি বিভাগকে আরেকটু সচেতন হয়ে রবি ফসলের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতার কথা নিবিড়ভাবে ভাবতে হবে। ভুট্টা, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ শীতকালীন ফসলের ভালো বীজ সরবরাহ, সম্প্রসারণ সেবা এবং কৃষিঋণ বাড়াতে এবং তা সহজলভ্য করতে হবে। একই সঙ্গে বোরো ধানের উৎপাদনের প্রস্তুতি এখন থেকেই নিতে হবে। মনে রাখা চাই, এটি অর্থনির্ভর ফসল। আমনের ঘাটতি রবি ফসল আর বোরো দিয়েই পুষিয়ে নিতে হবে। তবে এ বছর ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকদের বাড়তি বোরো উৎপাদনে উৎসাহ বেশি থাকার কথা। কিন্তু তাদের হাতে চলতি পুঁজি নেই। সেদিকে নজর দিতে হবে।
তবে এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে সবাই মিলে অনেক দিনের চেষ্টায় আমরা বাংলাদেশের কৃষিতে এমন বিপ্লব আনতে পেরেছি, যার সুফল এখন পাচ্ছি। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, কৃষির উন্নতি কৃষকের একার কাজ নয়। তাঁর সঙ্গে বিজ্ঞানী ও বিদ্বানকে হাত মেলাতে হবে। বঙ্গবন্ধুও ছিলেন কৃষি অন্তপ্রাণ। তিনি কৃষকের দুঃখ মোচনে সদাই তৎপর ছিলেন। তাঁর কন্যাও কৃষকের উন্নয়নে সদাই নীতি-সহায়তা দিতে উন্মুখ হয়ে থাকেন। আমি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনার সময় যখনই কৃষকের জন্য বাড়তি ঋণ ও আর্থিক সেবার উদ্যোগ নিয়েছি, তখনই তিনি সেসবের প্রতি আন্তরিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর সে কারণেই ২০০৯ সালে তিনি ফের ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে প্রতিবছর কৃষিতে অন্তত ৯ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ (অর্থনীতিবিদরা বলেন ‘ভর্তুকি’) করে যাচ্ছেন। ব্যক্তি খাতকেও তিনি কৃষি উন্নয়নে নানাভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। এসবের ফলে এমন সংকটকালেও আমাদের কৃষি খুবই ভালো করছে। কৃষি গবেষণায় বেশি করে সমর্থন দেওয়ার ফলে নতুন নতুন জাতের ধান, গম, ভুট্টা ও সবজির উৎপাদন বেড়েছে। আর জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ্বের নেতৃত্ব দেওয়া আমাদের প্রধানমন্ত্রী কৃষিকে টেকসই করার কাজে সমর্থন দেবেন সেটাই তো স্বাভাবিক। এরই মধ্যে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার জন্য প্রতিকূল পরিবেশসহিষ্ণু ১৩টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে। তা ছাড়া ২০১৩ সালে বিশ্বে প্রথমবারের মতো জিংকসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেন আমাদের কৃষি গবেষকরা। এর বাইরে পাটের কয়েকটি জাতও উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ পাট গবেষণা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি পাটের জীবনরহস্যও উন্মোচন করেছে। কৃষি গবেষণায় যে সাফল্য বাংলাদেশ দেখাচ্ছে তা সত্যি অনন্য।
নিঃসন্দেহে প্রযুক্তির উৎকর্ষে বাংলাদেশের কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে। কৃষি উৎপাদন বেড়েছে কয়েক গুণ। উৎপাদনশীলতাও বেড়েছে অনেকটাই। ১৯৭২ সালের কৃষি উৎপাদনের চেয়ে এখনকার উৎপাদন ২৫ গুণেরও বেশি। এখন আমাদের কৃষকদের ৮০-৯০ শতাংশই প্রযুক্তিনির্ভর। খাদ্যশস্য উৎপাদনে আমরা পেছনে ফেলে দিয়েছি অনেক বড় বড় দেশকে। গত এক দশকে আমরা ধান, মাছ, মুরগি, গরুসহ খাদ্য উৎপাদনে এখন বিশ্বে চতুর্থ, সবজি উৎপাদনে তৃতীয় আর আমে সপ্তম। আমাদের খাদ্য উৎপাদনের সূচক এখন ১৪৫.৩ (২০১৬)। ভারতের এই সূচক ১৪৪। চীনের খাদ্য উৎপাদন সূচকে ১৩৯, ভিয়েতনামের ১৩৬, শ্রীলঙ্কার ১৩১ এবং পাকিস্তানের ১৩০। মাছের উৎপাদনে বাংলাদেশ দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে। গত এক দশকজুড়েই তার প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.২৬ শতাংশ হারে। কৃষি খাতে এখন বছরে গড়ে দুটি ফসল উৎপাদিত হচ্ছে। সরকারের যুগোপযোগী পরিকল্পনা, পরিশ্রমী কৃষক, মেধাবী কৃষিবিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণকর্মীদের পাশাপাশি ব্যক্তি খাত ও অসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর যৌথ প্রয়াসেই এ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
নিঃসন্দেহে কৃষি আমাদের জীবন-জীবিকার রক্ষাকবচ। আধুনিক কৃষিতে এখন শিক্ষিত তরুণরাও উদ্যোক্তা হিসেবে যুক্ত হচ্ছেন। এই মহামারির সময় অনেক শিক্ষিত তরুণ গ্রামে বাস করছেন। তাঁরা খুব কাছে থেকে কৃষকের পরিশ্রমী জীবন অবলোকন করছেন। তাঁদের অনেকেই এখন কৃষকদের প্রতি বেশি শ্রদ্ধাশীল। তাঁরাও পাস করে কৃষি উদ্যোক্তা হতে ইচ্ছুক। অনেক শিক্ষিত নারীও কৃষি উৎপাদনে উৎসাহী হয়ে উঠছেন। বড় বড় শহরে ছাদবাগানে গৃহিণী নারীরা এগিয়ে এসেছেন।
কৃষি উৎপাদনই কিন্তু শেষকথা নয়। এই কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণও কৃষির গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এই সরবরাহ চেইনের কোনো লুপে অব্যবস্থাপনা বা ঘাটতি দেখা দিলে তা কী করে মেরামত করা যায় সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি। প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষিতেও ই-কমার্স ব্যবহার বাড়ছে। নতুন স্টার্টআপগুলোকে প্রশিক্ষণ, পুঁজি ও উৎসাহ দিয়ে আমরা কৃষির সরবরাহ চেইনকে আরো মজবুত করতে পারি। কন্ট্রাক্ট ফার্মিংকে আরো জোরদার করতে পারি। কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে আরো সহায়তা দিতে পারি। করোনাকালে কৃষির অভূতপূর্ব সহায়তায় আমরা অনেক দেশের চেয়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভালো করছি। তাই চর, হাওর, উপকূলসহ সব পর্যায়ের কৃষকদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে আমরা আমাদের চলার পথকে আরো মসৃণ করতে পারি। আমাদের আধুনিক কৃষির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে মহামারিজনিত মন্দা কার্যকরভাবে মোকাবেলা করা খুবই সম্ভব।
লেখক : বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের
সাবেক গভর্নর
dratiur@gmail.com