চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে সেবা খাতের রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আলোচ্য সময়ে সার্বিকভাবে সেবা খাতের রপ্তানি বেড়েছে পূর্বের অর্থবছরের একই সময়ের চাইতে ২৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এ সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ছয় শতাংশের বেশি রপ্তানি হয়েছে। ফলে স্বস্তি রয়েছে রপ্তানিকারকদের মধ্যে। টাকার অঙ্কের যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৯শ’ কোটি।
চলতি অর্থবছর পণ্য ও সেবা মিলিয়ে মোট ৩ হাজার ৭৫০ কোটি মার্কিন ডলারের রপ্তানির লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। এর মধ্যে সেবা খাতের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৩৫০ কোটি ডলারের। অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে সেবা খাতের রপ্তানির মাধ্যমে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৫৮ কোটি ৩৩ লাখ ডলারের। রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৬২ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাত থেকে রপ্তানি হয়েছে ৫০ কোটি ১৩ লাখ ডলার। সেই হিসেবে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রপ্তানি বেড়েছে ১১ কোটি ৮৬ লাখ ডলার বা ৯৪৯ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮০ টাকা হিসেবে)।
সেবা খাতের রপ্তানির মধ্যে মূলত ১২টি খাত রয়েছে। এর মধ্যে পরিবহন, ভ্রমণ, নির্মাণ সেবা, বীমাসহ অন্যান্য আর্থিক সেবা, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সেবা (কম্পিউটার সেবাসহ), অন্যান্য ব্যবসায়িক সেবা, সাংস্কৃতিক ও বিনোদনমূক সেবা, অন্যান্য ব্যবসা ছাড়াও সরকারি পণ্য ও সেবা এবং মেনটেইনেন্স ও রিপেয়ার সেবাও রয়েছে এ তালিকায়।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত তিন মাসে একক খাত হিসেবে সেবা খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় হয়েছে টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সেবা রপ্তানির মাধ্যমে। এর মধ্যে সফ্টওয়্যারসহ কম্পিউটার সেবাও রয়েছে। আলোচ্য সময়ে এ খাত থেকে রপ্তানি হয়েছে ৮ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের সমপরিমাণ সেবা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত আগস্টে সেবা খাতের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে ২৯ কোটি ১৬ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সেবা রপ্তানি হয়েছে ৩১ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের। আর গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রপ্তানি হয়েছিল ২৬ কোটি ৮০ লাখ ডলারের। অর্থাত্ রপ্তানি বেড়েছে ৪ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের।
সেবা খাত থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ১০ শতাংশের কম। অথচ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সফটওয়্যারসহ এ খাতের প্রতি মনযোগ দিলে সেবা খাতের রপ্তানি সহজেই মোট রপ্তানির এক তৃতীয়াংশে উন্নীত করা সম্ভব। এ জন্য দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যমাত্রার পাশাপাশি সরকারের নীতি সহায়তাও প্রয়োজন। অবশ্য এ ধরনের বেশকিছু খাতকে সরকার ইতিমধ্যে কিছু সহায়তা দিতে শুরু করেছে।