1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

মিয়ানমারকে আরও চাপ দিন: জাতিসংঘ মহাসচিবকে শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৭

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে সে দেশে পুনর্বাসনের জন্য আরও চাপ সৃষ্টি করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গতকাল শনিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করলে তিনি এই আহ্বান জানান। তারা রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রায় ২০ মিনিট কথা বলেছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা নিয়ে কথা বলতে রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সমকালকে একথা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটের অবসানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তার তুলে ধরা পাঁচ দফা প্রস্তাব যাতে বাস্তবায়িত হয়, সে জন্য আন্তোনিও গুতেরেসের সমর্থন চেয়েছেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের রক্ষায় ৫ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। প্রস্তাবগুলো হলো :অনতিবিলম্বে এবং চিরতরে মিয়ানমারে সহিংসতা ও ‘জাতিগত নিধন’ নিঃশর্তে বন্ধ করা; অনতিবিলম্বে মিয়ানমারে জাতিসংঘের মহাসচিবের নিজস্ব একটি অনুসন্ধানী দল প্রেরণ করা; জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা এবং এ লক্ষ্যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলা; রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত সব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের নিজ ঘরবাড়িতে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালার নিঃশর্ত, পূর্ণ এবং দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
ইহসানুল করিম জানান, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলতে ফোন করায় জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ব্যাপারে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের সহযোগিতা চেয়েছেন এবং সংকটের স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তৎপর থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। শেখ হাসিনা বলেন, বল প্রয়োগ করে বিতাড়িত করা রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ উপায়ে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে ইতিমধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা শুরু করেছে।
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূলের’ চেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধে কয়েক দফায় মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি জোরালো বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
এর আগেও রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ তৈরি করতে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘের হিসাবে, গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংস অভিযানের মুখে প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রাখাইনে শত শত রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ধর্ষণের শিকার হয়েছেন হাজারো রোহিঙ্গা নারী। শিশুদেরও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। নদী ও সাগরপথে পালাতে গিয়ে ডুবে মারা গেছেন অনেক রোহিঙ্গা। এসব ঘটনায় অং সান সু চি ও তার সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।
বিভিন্ন সময় রাখাইনে চলমান সহিংসতাকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে বর্ণনা করে আসছে বিভিন্ন দেশ, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংস দমন-পীড়নকে মানবতাবিরোধী অপরাধ আখ্যা দিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এইচআরডব্লিউ। তথ্য-প্রমাণ বিশ্নেষণ করে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রধান চারটি ক্ষেত্র চিহ্নিত করে সংস্থাটি। তাদের মতে, অপরাধ সংঘটনের এ ক্ষেত্রগুলো হলো- রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরিত ও বাস্তুচ্যুত হতে বাধ্য করা, হত্যা, ধর্ষণ ও অন্যান্য যৌন সন্ত্রাস এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রোম বিধির বিবেচনায় নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড।
তবে সে সব অভিযোগ ধামাচাপা দিতেই বিভিন্ন দেশকে পাশে রাখতে উঠেপড়ে লাগে মিয়ানমার। নতুন করে সু চি সরকারের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও জাতিগত নিধন থেকে চোখ ফেরাতে হিন্দুদের ‘গণকবর তত্ত্ব’ আবিস্কার করছে। এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর দেশটির নেত্রী অং সান সু চি জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতার বিষয়টি এড়িয়ে যান। রোহিঙ্গাবিরোধী অবস্থান নেওয়ায় বিশ্বজুড়েই সমালোচিত হন তিনি। তাকে অনুসরণ করে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে একই সুরে কথা বলেন তার প্রতিনিধি ভাইস প্রেসিডেন্ট হেনরি ভ্যান থিও।


সর্বশেষ - রাজনীতি