জাতীয় সঙ্গীতের প্রতি এতো অবজ্ঞা, এতো অনীহা, এতো বিরোধিতা কোথাও পাবেন না। উপমহাদেশের দেশগুলোর দিকে তাকান। পাকিস্তানিদের নিন্দা করি বটে এ বিষয়ে তারা একজোট। খেলোয়াড়দের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখলেই বুঝতে পারবেন কতোটা দরদ তাদের। পছন্দ করেন আর না করেন, ভারতের জাতীয় সঙ্গীতটি সুরও বাণীতে অসাধারণ। এটি কোন রাজা কোন ভাইসরয়ের আগমন উপলক্ষ্যে লেখা হয়েছিল তা নিয়ে তেনা প্যাঁচিয়ে লাভ নেই। বলছি দেখবেন, ভারতীয়রা কী দরদ কী আশ্চর্য আবেগ দিয়ে গাইতে গাইতে এটিকে শক্তিতে পরিণত করে তুলেছেন।
অমিতাভ বচ্চন গেয়ে লাখো দর্শক শ্রোতার ভেতরে শিহরণ জাগান। এ আর রহমান এটিকে ধ্রুপদী করে তুলেছেন। লতা মুঙ্গেশকার ভূপেন হাজারিকা, থেকে উত্তর দক্ষিন সব এলাকার সেলিব্রিটিদের কন্ঠে জনগণ মন এক অপূর্ব ধারার মতো প্রবহমান। দেখবেন আমীর খান গাইছেন চোখ বন্ধ করে। গাইছেন মিজোরামের কোনো অচেনা পাহাড়ি। সবার এক অনুভূতি। কেন আমরা পারি না? আমাদের জাতীয় সঙ্গীতটি রক্ত ও অশ্রু দিয়ে কেনা। বহু সাধনা যুদ্ধ ও সংগ্রামের ভেতর দিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ রবীন্দ্রনাথ ও জাতীয় সঙ্গীত এনে দিয়েছে। অথচ তার প্রতি এতো বিতৃষ্ণা, এতো সন্দেহ। সমাজ ও দেশ যদি তার বিখ্যাতজন তার মেধাবী সন্তানদের দিয়ে চেষ্টা শুরু করে, যদি তার মর্মবাণী তার গুরুত্ব প্রচারে আন্তরিক হয়ে ওঠে হয়তো একটা পথ খুলে যেতে পারে। কী দারুণ গান আমাদের। [১] কি আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, [২] নদীর কুলে কুলে…[৩] এমন গানটি কি শুধু ই, [৪] বদন খানি মলিন হলে আমি নয়ন জলে ভাসি, [৫] এই টুকুতেই ঘুরপাক খাবে? [৬] সমবেত সকলে একবার বুকে হাত রেখে চোখের জলে বলুন না, [৭] আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।
লেখক : অজয় দাশগুপ্ত, কলামিস্ট ও সাংবাদিক