1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

আঠা বিহীন কাঁঠালের নতুন জাত উদ্ভাবন, দেড় বছরে মিলবে ফলন

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) ফল গবেষকদের চেষ্টায় নতুন আরও একটি কাঁঠালের জাত অবমুক্ত করা হয়েছে। বারি-৬ জাতের এ কাঁঠালের কলম চারা রোপণের মাত্র দেড় বছরে মিলবে ফল। ফল পাওয়া যাবে সারা বছর।

গত জুনে জাতটি অবমুক্ত করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জাতীয় বীজ বোর্ড। কৃষি বিজ্ঞানীদের ধারণা এ জাত আবিষ্কারের পর বাণিজ্যিকভাবে জাতীয় ফল কাঁঠাল চাষে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।

বারির উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের ফল বিভাগের বিজ্ঞানীদের ভাষ্য অনুযায়ী, আম, লিচু, পেয়ারা, লটকন, মাল্টাসহ জনপ্রিয় অনেক ফলের চারা সহজে কলম পদ্ধতিতে উৎপাদিত হয়। ফলন আসে এক-দুই বছরের মধ্যে। ফলের জাত, স্বাদ, মিষ্টতা ও ঘ্রাণ থাকে ভালো। এসব কারণে চাষিরা দিন দিন ওই সব ফল চাষে ঝুঁকছেন।

এদিকে, সহজ চাষাবাদ ও ব্যাপক বাজার সৃষ্টি হওয়ায় কয়েক দশক ধরে ফলের বাজারে একক আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে আম। উল্টো চিত্র ছিল কাঁঠালের ক্ষেত্রে। জাতীয় ফল হলেও কাঁঠাল চাষ প্রসারে এতদিন অন্যতম বড় বাঁধা ছিল ‘উন্নত চারা’। কারণ প্রাচীনকাল থেকে কাঁঠালের চাষ হয়ে আসছে প্রচলিত পদ্ধতিতে বীজ থেকে তৈরি চারা দিয়ে। এ পদ্ধতিতে চারা লাগানোর পর গাছে ফলন আসে ৭-৮ বছর পর। তাছাড়া প্রচলিত পদ্ধতিতে জাত, স্বাদ, মিষ্টতা ও ঘ্রাণ কখনও ঠিক থাকে না। তাই জাতীয় ফল হলেও এসব কারণে বাণিজ্যিকভাবে কাঁঠাল চাষে আগ্রহী ছিলেন না চাষিরা। এ সমস্যা সমাধানে কাঁঠালের কলম ও উচ্চ ফলনশীল নতুন জাত উদ্ভাবনের জন্য শুরু হয় গবেষণা।

বারি কাঁঠাল-৬ এর উদ্ভাবক বারির ফল বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে উন্নত আগাম জাতের কাঁঠালের মাতৃজাত সংগ্রহ করে কলম চারা উৎপাদনে প্রথম আমরা সফল হই ২০০৯ সালে। এতে আশার আলো দেখি। পরে ২০১৮ সালে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে উচ্চ ফলনশীল বারোমাসি কাঁঠালের কলম চারা উৎপাদনে শুরু হয় ব্যাপক গবেষণা। সফলতা আসে ২০২১ সালে। চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকা রামগড় থেকে ১৫টি চারা সংগ্রহ করে প্রদর্শনী মাঠে রোপণ করে মাত্র দেড় বছরে ফলন পাওয়া ১৩টিতে।

তিনি আরও বলেন, উদ্ভাবিত বারি-৬ জাতটির গাছ বিস্তৃত ডাল-পালা বিশিষ্ট সতেজ ও সবুজ। অধিকাংশ গাছ দেড় বছরের মাথায় ফলন দিলে সক্ষম হলেও দুই বছর পর সব গাছেই ফল আসে। ফলের গড় ওজন ৩.৯৩ কেজি। ফলের উপরের পৃষ্ঠ দেখতে হলুদাভ সবুজ। পাল্প শক্ত, উজ্জ্বল হলুদ বর্ণের ও আঠাবিহীন। এর মিষ্টতা (টিএসএস) ২৪.৮ শতাংশ। গড় ফলন হেক্টরে ১০.৬ টন। জাতটি উৎপাদনের ফলে চারা রোপণের অল্প সময়ে ফলন আসায় কাঁঠাল চাষে বিপ্লব বয়ে আনবে।

বারি মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট একের পর এক সাফল্য অর্জন করে চলেছে। যার সর্বশেষ অর্জন বারি কাঁঠাল-৬। এটির স্বাদ, মিষ্টতা ও ঘ্রাণ চমৎকার। জাতটি উদ্ভাবনের ফলে দেশে কাঁঠাল চাষে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।

তিনি আরও বলেন, এ বছর ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল অরগানাইজেশন (এফএও) এক দেশ এক অগ্রাধিকার পণ্য হিসেবে কাঁঠালকে বাংলাদেশের জন্য স্বীকৃতি দিয়েছে। কাঁঠাল পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি অর্থকরী ফল। দেশে প্রায় ১৭ লাখ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের চাষ হয়। যা থেকে বছরে আয় হয় প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। কাঁঠালের অপচয় রোধেও কাঁঠাল থেকে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের প্রযুক্তিও উদ্ভাবন করেছেন আমাদের বিজ্ঞানীরা। এতে অনেক উদ্যোক্তাও তৈরি হচ্ছে।


সর্বশেষ - রাজনীতি