নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১৭১ জন বিশিষ্ট নাগরিক, বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী। শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমকে পাঠানো বিবৃতিতে তারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে লেখা খোলা চিঠিকে বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ার ওপর ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ’ উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নেসার হোসেন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিভিন্ন দেশের কয়েকজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের সদস্যের লেখা খোলা চিঠি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। উক্ত খোলা চিঠির বক্তব্য বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর স্পষ্ট হুমকি হিসেবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। চিঠিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত চলমান মামলাসমূহের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। দেশের বিবেকবান নাগরিক হিসেবে আমরা বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ার ওপর এ ধরনের অযাচিত হস্তক্ষেপের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিকই আইনের দৃষ্টিতে সমান বলেও উল্লেখ করেন বিবৃতিদাতারা। তারা বলেন, ‘সংবিধানে সবারই আইনি সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। উল্লেখ্য, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচারকার্য বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুসারে ও স্বাধীনভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে বিচারিক হেনস্তার অভিযোগ অমূলক ও অনভিপ্রেত। পাশাপাশি ড. ইউনূস বাংলাদেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে সবসময়ই দেশে ও বিদেশে ব্যক্তিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সকল কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছেন। প্রেরিত খোলা চিঠিতে বিদেশি স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিদের নিজ নিজ দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। আমরা প্রত্যাশা করি, তারা তাদের নিজ নিজ দেশের মতো বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকেও নিজস্ব আইন অনুযায়ী চলার সুযোগ দেবেন এবং সম্মান করবেন।’
বিবৃতিদাতারা হলেন, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. অনুপম সেন, ড. সনৎ কুমার সাহা, ড. আতিউর রহমান, শিল্পী হাশেম খান, অধ্যাপক বুলবন ওসমান, শিল্পী রফিকুন নবী, অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ, অধ্যাপক মাহফুজা খানম, অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ, ড. আবুল বারকাত, ড. বজলুল হক খন্দকার, অধ্যাপক আব্দুল বায়েস, মমতাজউদ্দীন আহমেদ, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, অধ্যাপক মুনতাসির মামুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজ্জাদ আলী জহির, অধ্যাপক ড. এ. কে এম মনোয়ার উদ্দিন আহমদ, মানবাধিকার কর্মী অ্যারমা দত্ত, রোকেয়া কবীর, সাংবাদিক আবেদ খান, শ্যামল দত্ত, অজয় দাশগুপ্ত, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, নাঈমুল ইসলাম খান, মোজাম্মেল বাবু, হারুন হাবীব, মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, সুভাষ সিংহ রায়, নূহ-উল আলম লেনিন, প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. শামীম বসুনিয়া, কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন, কার্টুনিস্ট শিশির ভট্টাচার্য, মফিদুল হক, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দীন ফকির, মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ, মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দিন. শাহরিয়ার কবির ও অধ্যাপক ড. খালেদ হোসাইন।
এছাড়াও বিবৃতি দিয়েছেন চিকিৎসক ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন, ডা. বরেন চক্রবর্তী, নুজহাত চৌধুরী, মামুন আল মাহতাব, ডা. কাজী শহীদুল আলম, ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী, ডা. জামাল উদ্দীন চৌধুরী, ড. প্রাণ গোপাল দত্ত, ডা. কামরুল হাসান খান। ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান, নাট্যজন মামুনুর রশীদ, অভিনয় শিল্পী লাকী এনাম, চঞ্চল চৌধুরী, তারানা হালিম, ড. ইসরাফিল শাহিন, মঞ্চসারথী আতাউর রহমান, শিল্পী শেখ আফজাল হোসেন, ফরিদা জামান, সংস্কৃতিকর্মী সঙ্গীতা ইমাম, নাট্য নিদর্শক অসীম দাশ, চলচ্চিত্র নির্মাতা মসিহউদ্দিন শাকের, নৃত্যশিল্পী শিমুল ইউসুফ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুস, ফাল্গুনী হামিদ, আফসানা মিমি, আবৃত্তিকার আহকাম উল্ল্যাহ, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ, অসীম সাহা, রুবী রহমান, তারিক সুজাত, পীযূষ বন্দোপাধ্যায়, হারিছুল হক, চলচ্চিত্রকার মানজারে হাসিন মুরাদ, নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসান, নাট্যজন ম. হামিদ, শিল্পী আবুল বারক আলভী, নাসিরুদ্দিন ইউসুফ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসান ইমাম, রামেন্দু মজুমদার ও সুবর্ণা মুস্তাফা।