1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বিশ্লেষণ: শেখ হাসিনার দিল্লি সফর

নিউজ ডেস্ক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের দিল্লি সফরটি হাই-প্রোফাইলের। সামনে বাংলাদেশের নির্বাচন; ভারতেও জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। তারওপর আঞ্চলিক কূটনৈতিক পরিস্থিতিও একটা বড় ঘটনা। তাই এ সফরের মধ্য দিয়ে কেবল বাংলাদেশের রাজনীতি নয়, আঞ্চলিক কূটনীতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ-ভারত দু’দেশের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্মতি সত্ত্বেও মমতা ব্যানার্জির বিরোধিতার কারণে এবারও তিস্তার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তিস্তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে সামনে চলে এসেছে দু’দেশের মধ্যে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট-সেপা চুক্তি। যা বাংলাদেশের মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন হয়ে আছে। এটি হলে দু’দেশের মধ্যে শত শত পণ্যের অবাধ ও শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে।

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ঝালাই, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতি, করোনা মহামারি, যুদ্ধ-সংঘাত, বৈশ্বিক মন্দার জের, জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের সরবরাহে সংকটসহ অনেক বিষয় নিয়ে কথা হবে মুখোমুখি। ভারতের গণমাধ্যম এ নিয়ে নানামুখী খবর দিয়ে সফরটিকে আরও গরম করে তুলেছে। ঢাকার সঙ্গে দিল্লির প্রতিরক্ষা চুক্তি সইয়ের প্রস্তুতির কথাও প্রচার করেছে তারা।

২০১৭ সালের মার্চে দিল্লি সফরে শেখ হাসিনা উঠেছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে। তখন ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন প্রণব মুখার্জি; ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সৌহার্দ্যের সুবাদে শেখ হাসিনা যাকে ডাকতেন ‘কাকাবাবু’ নামে। ২০১৯ সালের অক্টোবরের সফরে উঠেছিলেন দিল্লির তাজ প্যালেস হোটেলে। এবারও সেখানেই ওঠার কথা। ভারত পৌঁছার পরদিন ৬ সেপ্টেম্বর হবে তার সফরের মূল কার্যদিবস। সেদিন সকালে রাজঘাটে গান্ধী সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা অর্পণ ও রাষ্ট্রপতি ভবনে গার্ড অব অনারের পর শুরু হবে দ্বিপক্ষীয় একাধিক বৈঠক। এতে অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনে সহযোগিতা, ব্যবসা–বাণিজ্য বাড়ানো, জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিতের মতো বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পাবে। হায়দ্রাবাদ হাউজে দিনভর সেসব বৈঠকের শেষে দুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে জারি হবে একটি যৌথ ঘোষণাপত্র। পরদিন বসবেন ভারতের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। এরপর যাবেন রাজস্থানে আজমীর শরীফে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময় রেলে পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে সরবরাহব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্ন রেখেছিল ভারত। ভারত এবার চাল, গম, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় যেসব পণ্য বাংলাদেশ আমদানি করে সেগুলোর চাহিদা জানতে চেয়েছে। জ্বালানি খাতে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের ছক করাই আছে। বৈশ্বিক পরিসরে জ্বালানিসংকট থাকলেও ভারত সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। সেই সুবিধার ভাগ বাংলাদেশের পাওয়া নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে গত বেশ কিছুদিন ধরে। দু’দেশের যেকোনো পর্যায়ের আলোচনায় সীমান্ত হত্যা এবং শান্তিপূর্ণ সীমান্ত ব্যবস্থাপনার কথা অনেকটা আপনাআপনিই উঠে আসে।

প্রতিরক্ষার বিষয়টিও প্রাসঙ্গিক। ২০১৭ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লি সফরের সময় দু’দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হয়েছিল। ওই সময় ঋণ চুক্তির আওতায় প্রতিরক্ষা খাতে বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল ভারত। তবে পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ওই ঋণের সদ্ব্যবহার করেনি বাংলাদেশ। এ বছর আগস্টের শুরুতে দিল্লিতে দুই দেশের প্রতিরক্ষা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ঋণচুক্তির ৫০ কোটি ডলারের ব্যবহার, যৌথভাবে সমরাস্ত্র উৎপাদনসহ সহযোগিতার নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

একদিকে, উভয় দেশের সামনেই নির্বাচন। আরেকদিকে চীন-যুক্তরাষ্ট্রসহ পরাশক্তিগুলোর ঘোরাঘুরির তীব্রতা। বিশেষ করে চীনের ভূমিকা। তবে সম্পর্কোন্নয়ন অনেকাংশে নির্ভর করছে ভারতের ওপর। চলমান স্নায়ুযুদ্ধের সময় দেশটি যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া দুই নৌকায়ই পা দিয়ে রাখছে। আর বাংলাদেশের কূটনৈতিক মন্ত্র হচ্ছে-সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়। দিল্লি-ঢাকার এমন কিঞ্চিত তফাতযুক্ত কূটনীতিতে কৌশলগতভাবে ভারতের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় বাংলাদেশ। সেইসঙ্গে প্রাপ্তিযোগের সম্ভাবনা অনেক বাংলাদেশের।


সর্বশেষ - রাজনীতি