অর্থনীতিতে গতিমন্থরতা থাকলেও সন্তোষজনক আদায়ের মাধ্যমে অর্থবছর শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে এর আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আহরণ বেড়েছে ১৫ শতাংশের বেশি।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে- জুলাই মাসে এনবিআর রাজস্ব আদায় করেছে ২০ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। যদিও লক্ষ্যমাত্রা থেকে কম আদায় হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। মূলত লোকাল স্টেজে ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স (ভ্যাট) এর ওপর ভর করেই অপেক্ষাকৃত ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এনবিআর, যার প্রবৃদ্ধি গত মাসে ছিল প্রায় ২২ শতাংশ।
এছাড়া গত বছর আমদানিতে খরা থাকায় ইমপোর্ট ট্যাক্স কমতির দিকে থাকলেও, অর্থবছরের প্রথম মাসে প্রায় ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে এ খাত থেকে। অপেক্ষাকৃত কম আদায় হয়েছে ইনকাম ট্যাক্স খাত থেকে।
এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, বাজেটে এবার কিছু ইনিশিয়েটিভ নেয়া ও মনিটরিং জোরদার করায় ভ্যাট আদায়ে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তারা জানান- ফিসক্যাল মেজারস-এর অংশ হিসেবে এবার বেশকিছু অব্যাহতি বাতিল করা হয়েছে, যা গত বছরের জুলাইয়ে ছিল। ফলে ওই সময়ের তুলনায় এবার রাজস্ব আদায়ে গ্রোথ বেশি হয়েছে। যেমন কিছু কনজ্যুমার আইটেমে গত বছরের এই সময়ে রিডিউসড রেটে ভ্যাট ছিল, যা বর্তমানে নেই। ফলে এবার ওইসব খাত থেকে বেশি ভ্যাট আদায় হয়েছে। সরকার নতুন করে ঢাকা-চট্টগ্রামের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইলেক্ট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) ব্যবস্থা চালু করছে। এর ফলে ট্রেডিং স্টেজ থেকে আগামীতে ভ্যাট আদায় বাড়তে পারে।
এদিকে এনবিআরে সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মাজিদ বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও রাজস্ব আদায়ের এ গ্রোথকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক গতিমন্থরতার মধ্যে রাজস্ব আদায়ে ভালো প্রবৃদ্ধি ইঙ্গিত দেয় যে, মানুষের উপর করের চাপ বেড়েছে।
তিনি বলেন- অনেক করের চাপ সাধারণ ভোক্তার উপর পড়ছে। বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে তাদের উপর বাড়তি করের (ভ্যাট) চাপ তাদের আরো কঠিন অবস্থার মধ্যে ফেলছে।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব গ্রোথ ছিলো ১০ শতাংশের সামান্য বেশি, আর গত পাঁচ বছরে গড়ে গ্রোথ ছিলো ১১ শতাংশের কাছাকাছি। এর মধ্যে করোনার অর্থবছর ২০২০-২১ এ নেগেটিভ গ্রোথ হয়েছিল। উল্লেখ্য- চলতি অর্থবছর এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
