১৯৭৫ সালের ১৮ আগস্ট, মাত্র ৪ লাইনের একটি চিঠি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করেছিল। ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই কলঙ্কিত হত্যাকাণ্ডের পর ১৬ এবং ১৭ আগস্ট বাংলাদেশ ছিল নানা ঘটনাপ্রবাহে অস্থির। অনেক পাকিস্তানির উল্লাস আর ভুট্টোর সঙ্গে খন্দকার মোশতাকের যোগাযোগ ভিন্ন মাত্রা যোগ করে সেই সময়। নানা ধরনের গুজব আর আভাস ছিল যে খন্দকার মোশতাক পাকিস্তানের কনফেডারেশনে বাংলাদেশকে যুক্ত করতে পারে। তার মানে বাংলাদেশ ফের পাকিস্তানের প্রদেশে রূপান্তরিত হবে- এমন একটি গুজব ছড়নো হচ্ছিল।
১৭ আগস্ট পযর্ন্ত ভারত বাংলাদেশের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। ১৮ আগস্ট সকালে খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে দেখা করেন ভারতীয় হাই কমিশনার সমর সেন। তিনি ভারত সরকারের একটি চার লাইনের চিঠি বা নোট খন্দকার মোশতাকের হাতে না দিয়ে তাকে পড়ে শোনান। ওই নোটে লেখা ছিল, তিনি যদি বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন এবং কোনো একটি দেশের কনফেডারেশনে যোগ দেন তাহলে মৈত্রী চুক্তির আওতায় ভারতীয় সেনাবাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। খন্দকার মোশতাক দাঁড়ানো অবস্থা থেকে ধপাস করে চেয়ারে বসে পড়েন এবং খুবই বিমর্ষ হয়ে পড়েন। এক মুহূর্তে পট পরিবর্তন হয়ে যায়। রক্ষা পায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। খন্দকার মোশতাক বাংলাদেশকে যে ইসলামী প্রজাতন্ত্র করার নীলনকশা করেছিলেন তাও ভেস্তে যায় ওই চিঠিতে।
(শ্যামল কান্তি নাগ এর ফেসবুক টাইমলাইন থেকে)