1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

পারিবারিক পুষ্টি বাগানে কোটি টাকার সবজি উৎপাদন

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৩

সৈয়দপুর কামার পুকুর ইউনিয়নের তহমিনা আক্তার রুনি। নিজের দেড় শতাংশ জমিতে করেছেন পারিবারিক পুষ্টি বাগান। সেই বাগানের উৎপাদিত সবজি থেকে পরিবারের পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে কিছু শাক-সবজি বিক্রি করেন বাজারে। এতে প্রতিমাসে তার আয় হয় প্রায় তিন হাজার টাকা।

তহমিনার মত পারিবারিক পুষ্টি বাগান করেছেন একই এলাকার মোহাম্মদ আলী। সেখান থেকে উৎপাদিত সবজি দিয়ে পরিবারের পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রির পাশাপাশি প্রতিবেশীদেরও দেন তিনি।আগে প্রতি মাসে বাজার থেকে শাক সবজি কিনতে যে টাকা খরচ হতো তা পুরোটাই এখন সঞ্চয় হয় মোহাম্মদ আলীর।

শুধু তহমিনা বা মোহাম্মদ আলী নয়, নীলফামারী জেলায় কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এমন পারিবারিক পুষ্টি বাগান করেছেন জেলার দুই হাজার ৪৪৯ পরিবার।এসব পুষ্টি বাগান থেকে প্রতিবছর উৎপাদিত হচ্ছে কোটি টাকার সবজি।ফলে পুষ্টি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি পরিবারগুলোতে বাড়ছে স্বনির্ভরতা।

কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন ও পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা মেটানোর লক্ষে ২০২০ সালে দেশব্যাপী এ রকম পারিবারিক পুষ্টি বাগান ও আদা, হলুদ চাষের একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। সারাদেশে ৫ লাখ পুষ্টি বাগান তৈরির লক্ষ্য রয়েছে সরকারের। ফলে সারাদেশের কমপক্ষে ৫ লাখ পরিবার নিরাপদ সবজি খেতে পারবে।পাশাপাশি পরিবারগুলোর সাশ্রয় হবে মোটা অঙ্কের অর্থ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পারিবারিক এসব বাগানে চাষ হচ্ছে শিম, মরিচ,শাক, লাউ, কুমড়া, মিষ্টি আলুসহ আদা ও হলুদ।সুভিধাভোগীরা বলছেন প্রতিটি বাগান থেকে বছরে প্রায় ২০০ কেজির বেশি শাক সবজি উৎপাদন সম্ভব।

কৃষি অধিদপ্তর বলছে, এসব পুষ্টি বাগান থেকে ৩-৪০ শতাংশ পুষ্টি ও ৪-৩২ শতাংশ প্রোটিন চাহিদা মেটানো সম্ভব। আর দেড় শতাংশ জমির সবজি বাগানে বছরে ২০০ কেজি সবজি উৎপাদন হলে জেলায় দুই হাজার ৪৪৯টি সবজি বাগানের উৎপাদিত সবজির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ কেজি। প্রতিকেজি সবজি গড়ে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলে এর বাজার মূল্য ১ কোটি ৪৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। ফলে সরকারের পুষ্টি বাগানের আওতায় থাকা পরিবারগুলোর সাশ্রয় হচ্ছে বৃহৎ অংকের টাকা।

কামার পুকুর ইউনিয়নের তহমিনা আক্তার রুনি বলেন, বাগানে লাল শাক, পুঁই শাক, কচু শাক আছে। এগুলা নিজে খাই, প্রতিবেশিদের দেই আবারও বিক্রিও করি। বেগুন, কাচা মরিচ বিক্রি করেছি। মাসে আড়াই হাজার টাকার সবজি বিক্রি করতে পারি।

একই এলাকার মোহাম্মদ আলী বলেন, আগে মাসে ২-৩ হাজার টাকার শাক-সবজি কেনা লাগতো, এখন লাগে না। এখন সেটা বাগান থেকে পাচ্ছি এবং টাটকা খাবার খাচ্ছি। তাতে আমরা ভালো আছি।

আব্দুর রশিদ নামের আরেকজন বলেন, পুষ্টি বাগানে এখন ডাটা শাক, কলমি শাক, লাল শাক, শিম ও বেগুন আছে।বাগান থেকে উৎপাদিত শাক-সবজি আমরা খাই, প্রতিবেশিদের দেই।

তিনি আরও বলেন, এখানে বেশি জমির প্রয়োজন হয় না।অল্প জমিতে অনেক সবজি চাষ করা যায়। অনুরোধ করবো এমন একটি নিরাপদ সবজি বাগান যেন সবাই করে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, সরকারের প্রকল্পের আওতায় জেলায় চার হাজারের বেশি পুষ্টি বাগান আছে। এসব বাগান থেকে পরিবারের পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে এক থেকে দেড় মণ শাক সবজি বিক্রিও করছেন অনেকে।ফলে তারা আর্থিকভাবেও লাভোবান হচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, আগে যে জমিগুলো পতিত থাকতো, সেটা কিন্তু পুষ্টি বাগানের মাধ্যমে চাষের আওতায় আসছে।পুষ্টির চাহিদা পুরণেই সরকারের এ প্রকল্প। আমাদের টার্গেট প্রতি ইউনিয়নে এক হাজার করে পুষ্টি বাগান তৈরি করা, ইতিমধ্যে চার হাজার করেছি।


সর্বশেষ - রাজনীতি