১০ হাজারের বেশি শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং ৪২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে প্রায় ১২ কোটি টাকার অনুদান দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম ‘নগদ’-এর মাধ্যমে এ টাকা সরাসরি শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানগুলোর অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৭ আগস্ট) বিশেষ অনুদানপ্রাপ্ত নির্বাচিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
মোট ২৪০টি স্কুল-কলেজ, ৪০০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৯ হাজার ৮২৬ জন শিক্ষার্থীকে এ অনুদান পাওয়ার জন্য মনোনীত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম নগদের মাধ্যমে এ টাকা সরাসরি শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং প্রতিষ্ঠানগুলোতে পৌঁছে দেওয়া হবে।
জানা গেছে, মোট ৯ হাজার ৮২৬ জন শিক্ষার্থীকে এ অনুদানের টাকা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণির ৩ হাজার ৬৬৭ জন শিক্ষার্থীদের ৮ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। ৯ম ও ১০ম শ্রেণির ২ হাজার ৬২১ জন শিক্ষার্থীদের ৮ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ১ হাজার ৮৬০ জন শিক্ষার্থীদের ৯ হাজার টাকা করে এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ১ হাজার ৬৭৮ জন শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার করে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া এ খাত থেকে ২৪০টি স্কুল-কলেজের প্রতিটিকে ১ লাখ টাকা করে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। আর বিশেষ অনুদান বাবদ ৪০০ জন শিক্ষক-কর্মচারীর সবাইকে ৩০ হাজার টাকা করে মোট ১ কোটি ২০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
একই অনুদানের টাকা বিতরণ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ। যদিও এ বিভাগে ১১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের জটিলতার কারণে পাঠানো সম্ভব হয়নি। শিগগিরই কারিগরি ও মাদ্রাসা পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও এ অনুদানের টাকা পাবে বলে জানিয়েছেন কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের উপসচিব মাহমুদুল রহমান।
যেভাবে দেওয়া হয় এ অনুদান
অনুদানের এ টাকা কারা পাবেন তার একটি নীতিমালা রয়েছে। প্রতি তিন মাস পর আবেদনের আহ্বান করা হয়। আবেদন পাওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে অনুদানের টাকা ছাড় করা হয়েছে।
নীতিমালা থেকে জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রী এ তিন ক্যাটাগরিতে অনুদান দেওয়া হয়। সরকারি ও বেসরকারি এমপিওভুক্ত এবং নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা, দুর্ঘটনা ও চিকিৎসার খরচের জন্য বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারেন।
এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, অসহায় এবং অসচ্ছল মেধাবী ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পেয়েছে। এছাড়া দেশের সব স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বা এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেরামত ও সংস্কার, আসবাব তৈরি, খেলাধুলার সরঞ্জাম কেনা, পাঠাগার উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীবান্ধব করতে বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের আবেদন করে। তবে বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনগ্রসর এলাকার অসচ্ছল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অগ্রাধিকার পায়। আর বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা দুরারোগ্য ব্যাধি বা দুর্ঘটনার জন্য মঞ্জুরির আবেদন করতে পারেন।
এছাড়া দেশের সব স্বীকৃতি প্রাপ্ত বা এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেরামত ও সংস্কার, আসবাবপত্র তৈরি, খেলাধুলার সরঞ্জাম কেনা, পাঠাগার উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীবান্ধব করার জন্য বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের আবেদন করতে পারে। তবে বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনগ্রসর এলাকার অসচ্ছল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অগ্রাধিকার পাবে।
যেভাবে আবেদন করতে হয়
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের এ অনুদান পেতে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানের আর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিভাগীয় প্রধানের প্রত্যয়নপত্র আবেদনে সংযুক্ত করতে হবে। শিক্ষক-কর্মচারী ক্যাটাগরিতে আবেদনের ক্ষেত্রে চিকিৎসক সনদ ও দুর্ঘটনার প্রমাণ সংযুক্ত করে আবেদন করতে হবে।
আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য অনুদানের আবেদনের ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটির প্রত্যয়ন সংযুক্ত করতে হবে। শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অনুদান বাবদ বরাদ্দের টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বরাদ্দের টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।
